শেরপুর প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৬ নভেম্বর ২০২৪ ২১:৪৮ পিএম
আপডেট : ২৬ নভেম্বর ২০২৪ ২১:৫৬ পিএম
শেরপুর সদরের মুর্শিদপুর পীরের দরবারে হামলা-ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) ভোরে সদর উপজেলার লছমনপুর এলাকাস্থ খাজা বদরুদ্দোজা হায়দার ওরফে দোজা পীরের দরবারে এই ঘটনা ঘটে।
এতে হামলাকারী ও হামলার শিকার উভয়পক্ষের অন্তত ১৩ জন আহত হয়েছেন। হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৭ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
এ ঘটনায় স্থানীয় একটি মাদ্রাসার সুপার তরিকুল ইসলামসহ ২৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৪০০-৫০০ জনকে আসামি করে থানায় অভিযোগ করেছেন দরবার শরীফের খাদেম মাহমুদান মাসুম। অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন থেকেই মুর্শিদপুর দরবার শরীফের কার্যক্রম বন্ধের হুমকি দিয়ে আসছিলেন লছমনপুর ইউনিয়নের জামতলা এলাকার ফারাজিয়া আল আরাবিয়া কওমি মাদ্রাসার সুপার মো. তরিকুল ইসলাম, স্থানীয় মো. খোরশেদ, মো. মজিবুর, মো. শহিদুলসহ কয়েকজন। তাদের অভিযোগ, পীরের দরবারে ইসলাম পরিপন্থি কার্যকলাপ পরিচালিত হয়। তাই দরবার বন্ধের দাবিতে আগেও মাদ্রাসা ও লছমনপুর এলাকাবাসীর উদ্যোগে মানববন্ধন কর্মসূচি-বিক্ষোভ সমাবেশ হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার ভোর রাতে মাদ্রাসার সুপার তরিকুল ইসলাম, স্থানীয় মো. খোরশেদ, মজিবরসহ ৪০০-৫০০ জন দরবারে হামলা চালায়। এ সময় তারা দরবারের পেছন দিয়ে টিনের বেড়া কুপিয়ে, ভেঙে মহিলাদের সুরক্ষিত গেট কুপিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে বেশকিছু দুম্বা, ভেড়া, ছাগল নিয়ে যায় বলে জানান খাদেম মামুন, সে সময় দরবারের আঙ্গিনায় লাগানো দুইশরও বেশি দেশি-বিদেশি ফল ও অনান্য গাছ কেটে ফেলে। অগ্নিসংযোগ করে ঘরের চৌকি ও পশুর খাদ্য খড় পুড়ে ফেলে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। ঘটনাস্থল থেকে বেশ কয়েকটা ককটেলও পাওয়া যায়। এ সময় দরবারে থাকা খাদেম ও অন্য মুরিদরা বাধা দিলে উভয়পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ১৩ জন আহত হন। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। হামলাকারী সাতজনকে আহত অবস্থায় সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীরা দরবার থেকে উদ্ধার করে সেনাবাহিনীর অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে পাঠায়।
আহতরা হলেনÑ আসিফ, শহিদুল ইসলাম, আল মাসুদ, জিসান, এনামুল হক, হাফেজ ও জয়নাল। এ ছাড়া দরবারের আহতরা হলেনÑ আব্দুল কুদ্দুছ, মোহন মিয়া, মন্টু মিয়া, আরিফ হোসেন, মনির হোসেন ও সফর মিয়া ।
অভিযোগ অস্বীকার করে মাদ্রাসার সুপার মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের আপসের কথা বলে দরবারে ডেকে নিয়ে মারধর করেছে। আহতরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। দরবারে তারা নিজেরাই বিভিন্ন জিনিস ভাঙচুর করে আমাদের ওপর দায় চাপাচ্ছে।
শেরপুর সদর থানার ওসি জুবায়দুল আলম জানান, মুর্শিদপুর দরবার এলাকায় পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এ ঘটনায় এক পক্ষের অভিযোগ পেয়েছি। ইতোমধ্যে ৭ জনকে আটক করা হয়েছে। তদন্ত করে আইনগত নেওয়া হবে।