বেনাপোল রুট
বেনাপোল (যশোর) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৬ নভেম্বর ২০২৪ ১৯:৩৭ পিএম
আপডেট : ২৬ নভেম্বর ২০২৪ ২০:২০ পিএম
যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে পঞ্চম দিনের মতো মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর)ও দূরপাল্লার কোনো বাস চলাচল করেনি। গত শুক্রবার থেকে বেনাপোল থেকে দূরপাল্লার বাস বন্ধ রয়েছে। তবে ভারতফেরত অনেক যাত্রী বেনাপোল চেকপোস্ট থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে নাভারণ সাতক্ষীরা মোড় থেকে সাতক্ষীরা-ঢাকা রুটে চলাচল করা গাড়িতে করে বাড়ি ফিরছিল।
কিন্তু গত সোমবার থেকে সেটাও বন্ধ করে দিয়েছে বাস মালিক সমিতি এবং পরিবহন শ্রমিকরা। এতে যাত্রীদের দুর্ভোগ যেন চরমে পৌঁছেছে। তাদের নিরাপত্তাহীনতায় পড়তে হয়েছে। বিকল্প ব্যবস্থায় অতিরিক্ত খরচে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে।
জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বাসমালিকদের আলোচনা সভা হলেও কোনো সমাধান হয়নি। স্থানীয় প্রশাসন বলছে, তারা কেন যে ধর্মঘট ডেকেছে সে বিষয়ে তাদের সঙ্গে কোনো কথা বলেনি। পরিবহন মালিক সমিতির নেতারা বলছেন, প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকের পর থেকে সকল পরিবহনের বাস পৌরসভার নির্দেশনামতো চলছিল। ঢাকা থেকে রাতে ছেড়ে আসা বাসযাত্রীদের বেনাপোল চেকপোস্টে নামিয়ে দিয়ে পৌর বাস টার্মিনালে চলে যাচ্ছিল। হঠাৎ করে গত শুক্রবার রাত ৩টার দিকে বাসের যাত্রীদের জোরপূর্বক টার্মিনালে নামিয়ে দেওয়া হয়। এ সময় যাত্রীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে এবং হয়রানির শিকার হয়। পরে সেই যাত্রীদের লোকাল বাসে করে চেকপোস্টে পাঠায় টার্মিনালে থাকা পৌরসভার লোকজন। কোনো কিছু না জানিয়ে প্রশাসনের এ ধরনের সিদ্ধান্তের কারণে বাসমালিক ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলার সঙ্গে বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে।
প্রশাসন থেকে জানানো হয়, যানজট নিরসনে নৌ-পরিবহন উপদেষ্টার নির্দেশে এটা করা হয়েছে। উপদেষ্টার নির্দেশ ব্যতীত আমাদের পক্ষে কোনো কিছু করা সম্ভব নয়। পৌর টার্মিনাল থেকেই যাত্রী ওঠাতে হবে এবং নামাতে হবে। অপরদিকে পরিবহন মালিক সমিতি থেকে বলা হয়েছে, আগের নিয়মে বাস চলাচল করতে হবে। তা না হলে তারা বাস চলাচল বন্ধ রাখবে।
বেনাপোল পরিবহন সমিতির সভাপতি বাবলুর রহমান বাবু জানান, কয়েক দিন আগে শার্শা ইউএনও ও সুধীসমাজের সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়। সেখানে যানজট নিরসনে নতুন পৌর বাস টার্মিনাল ব্যবহারের সিদ্ধান্ত হয়। সে অনুযায়ী আমরা এই টার্মিনাল ব্যবহার করছি। তবে যাত্রী হয়রানি ও নিরাপত্তার জন্য শেষরাতের দূরপাল্লার পরিবহন যেন সীমান্তঘেঁষা পুরোনো টার্মিনালটি ব্যবহার করতে পারে সেই ব্যবস্থা নেওয়া হোক। প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকের পর কোনো সমঝোতা হয়নি। যাত্রীদের নিরাপত্তাসহ হয়রানির হাত থেকে রক্ষার জন্য আমরা আমাদের সিদ্ধান্তে অনঢ় রয়েছি।
যাত্রী মেহেদী হাসান বলেন, ভারত থেকে দেশে ফিরে এখন দেখছি দুর্ভোগের শেষ নেই। পরে তিনজন মিলে একটি প্রাইভেটকার নিয়ে যশোর যাচ্ছি। সেখান থেকে পরিবহন ধরে বাড়ি যাব।
জানতে চাইলে শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাজী নাজীব হাসান বলেন, ‘কী কারণে তারা (পরিবহন মালিক-শ্রমিক) ধর্মঘট ডেকেছে, সে বিষয়ে অবগত নই। তাদের কোনো কিছু বলার থাকলে বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করতে পারে। নতুন পৌর বাস টার্মিনালের নিরাপত্তার জন্য আনসার সদস্য মোতায়েন, নারী-পুরুষের জন্য পৃথক নামাজের স্থান, ব্রেস্ট ফিডিংয়ের জন্যে কর্নার সবকিছুই রয়েছে। আমরা বলেছি, পাসপোর্টযাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য রাত ১২টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত তারা চেকপোস্টে যাত্রী নামিয়ে দিতে পারবে। কিন্তু কোনো পরিবহন আমরা সেখানে থাকতে দেব না।’