ফরিদপুর সংবাদদাতা
প্রকাশ : ২৭ নভেম্বর ২০২২ ১৯:২৮ পিএম
আপডেট : ২৭ নভেম্বর ২০২২ ২০:০৪ পিএম
পুলিশ সুপার তার কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিং করেন। ছবি : প্রবা
সমকামিতায় বাধ্য করায় ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার মো. কাউসার হোসেন খানকে হত্যা করা হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে। এক কিশোর ও তার বাবাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ এই খবর দেয়।
জেলার পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান জানান, জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার কিশোর হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। নিহতের মোবাইলের পোড়া অংশবিশেষ, জ্যাকেট, শার্ট, প্যান্ট, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকু ও একটি মোটরসাইকেল আলামত হিসেবে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তাররা হলেন চরভদ্রাসন উপজেলার বিএসডাঙ্গী গ্রামের শাহীন মোল্যা (৪২) ও তার ১৫ বছর বয়সি ছেলে।
নিহত কাউসার উপজেলার এমপিডাঙ্গী গ্রামের জালাল খানের ছেলে। তিনি বালি ও কাঠের ফার্নিচারের ব্যবসা করতেন। গত শুক্রবার রাতে তাকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। পরদিন বালিচাপা অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
হত্যার তদন্তে নেমে পুলিশ কিশোর ও তার বাবাকে গ্রেপ্তার করে।
রবিবার (২৭ নভেম্বর) বিকালে পুলিশ সুপার তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, আটক কিশোর ইলেক্ট্রনিক মিস্ত্রি। কাজের সুবাদে তার সাথে কাউসারের পরিচয় হয়। এরপর তাদের মাঝে সমকামিতার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে কিশোর রাজি না হলেও তাকে ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করেন কাউসার। শুক্রবার রাতে এ নিয়ে তাদের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা ও ধস্তাধস্তি হয়।
কিশোরকে জিজ্ঞাসাবাদের তথ্য দিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে কাউসারের গলায় চাকুর আঘাত লাগে। এতে তিনি মাটিতে পড়ে যান। তখন কিশোর তার পিঠের ওপর চেপে বসে গলায়, গর্দানে ও মাথার পেছনে উপর্যুপরি আঘাত করে। এতে তার মৃত্যু হয়। তার মোবাইল ফোন, মোটরসাইকেল ও চাকু নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে কিশোর।
পুলিশ সুপার বলেন, কাউসারকে হত্যা করে বাড়ি ফেরার পর তার মা-বাবা গায়ের রক্তমাখা জ্যাকেট দেখে ফেলেন। জিজ্ঞাসাবাদে কিশোর তার বাবা-মাকে সবকিছু খুলে বলে। তখন তার বাবা শাহিন মোল্লা হত্যার ঘটনা লুকাতে চেষ্টা করেন। জ্যাকেটটি মাটিতে পুঁতে ফেলেন এবং কাউসারের মোবাইল ফোন পুড়িয়ে ফেলেন। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকু বাড়ির পাশে পুকুরে ফেলে দেন। আর কাউসারের মোটরসাইকেলটি ফরিদপুরের চানমারিতে রেখে দেন শাহিন মোল্লা।