বেনাপোল রুট
বেনাপোল (যশোর) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ২২:৪১ পিএম
আপডেট : ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ২২:৪৩ পিএম
যশোরের বেনাপোল বন্দরের সঙ্গে সকল রুটের দূরপাল্লার পরিবহন অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। শনিবার (২৩ নভেম্বর) সকাল থেকে এ ধর্মঘটের ডাক দেন পরিবহন ব্যবসায়ী সমিতি। ফলে ভারত থেকে আসা যাত্রীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
পরিবহন ব্যবসায়ীরা জানান, ভারতগামী পাসপোর্টধারীদের সেবায় বেনাপোল বন্দর আন্তর্জাতিক বাস টার্মিনাল ব্যবহার করতেন। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার থেকে পৌর কর্তৃপক্ষ বেনাপোল চেকপোস্ট থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে পৌর বাস টার্মিনাল চালু করতে বেনাপোল বন্দর আন্তর্জাতিক বাস টার্মিনাল ব্যবহার বন্ধ করে দেয়। এ সময় ভারতগামী পাসপোর্টধারী যাত্রীবহনকারী রাতের বাসগুলো বেনাপোল বন্দর আন্তর্জাতিক বাস টার্মিনালে যাত্রী নামানোর কথা হয়। কিন্তু হঠাৎ করে শুক্রবার রাতের বাস চেকপোস্টে ঢুকতে না দিয়ে পৌর কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের শহর থেকে দূরে পৌর বাস টার্মিনালে নামাতে শুরু করে। যাত্রীদের ভোগান্তি ও ব্যবসার ক্ষতির প্রতিবাদ জানিয়ে বেনাপোল রুটে সারা দেশের সঙ্গে পরিবহন চলাচল বন্ধ রাখে চালকরা।
পাসপোর্ট যাত্রীরা অভিযোগ করে বলেন, পার্শ্ববর্তী ভারতীয় চেকপোস্টে পেট্রাপোলে যাত্রীদের সুবিধার্থে ইমিগ্রেশনের সঙ্গে নির্মাণ করা হয়েছে যাত্রী পরিবহন টার্মিনাল। বাংলাদেশে বর্ডারে চালু টার্মিনাল বন্ধ করে দিয়ে ৪ কিলোমিটার দূরের টার্মিনালে পাঠানো হচ্ছে যাত্রীদের। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে পাসপোর্ট যাত্রীদের।
এদিকে দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ থাকায় বেনাপোল বন্দরে আটকা পড়ে ভারত ফেরত কয়েক শত পাসপোর্টধারী। ভোগান্তি কমিয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পাসপোর্টধারীরা যাতে বন্দর আন্তর্জাতিক বাস টার্মিনাল ব্যবহার করতে পারে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন বাসচালক ও পাসপোর্টধারীরা।
পাসপোর্ট যাত্রী মেহেদী হাসান জানান, ঢাকা থেকে পরিবহনে এসে বর্ডার থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে পৌর টার্মিনালে বাস থেকে রাত ৩টায় নামিয়ে দেওয়া হয়। পরে ২ ঘণ্টা একটি চায়ের দোকানে বসে সকাল হওয়ার পর ইজিবাইক নিয়ে বর্ডারে এসেছি। একজন পাসপোর্টধারী যাত্রীর নিকট থেকে বাংলাদেশ স্থলবন্দর পোর্ট ব্যবহারের জন্য টাকা নিয়ে থাকেন। তাহলে পোর্ট আমাদের কী সেবা দিল। আমরা চাই চেকপোস্টে অবস্থিত স্থলবন্দর পরিবহন থেকে বাস চালু হোক।
পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি বাবলুর রহমান বাবু জানান, কয়েকদিন আগে যশোর জেলা প্রশাসকের সঙ্গে আমাদের ও স্থানীয়দের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় । বৈঠকে যানজটের কথা বলে সকল পরিবহন চেকপোস্টের টার্মিনাল থেকে সরিয়ে নিয়ে বেনাপোল থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে কাগজপুকুর টার্মিনাল নিয়ে যায়। গাড়ি সেখান থেকেই ছাড়ার নির্দেশনা দেওয়া হয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঢাকা থেকে রাতে ছেড়ে আসা বাস বেনাপোল চেকপোস্টে যাত্রী নামিয়ে দিয়ে পৌর বাস টার্মিনালে কাগজপুকুর চলে যাচ্ছিল।
তিনি আরও জানান, কিন্তু শুক্রবার রাত ৩টার দিকে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা দূরপাল্লার পরিবহন যাত্রীদের জোর করে টার্মিনালে নামিয়ে দেওয়া হয়। যাত্রীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে এবং নানা ধরনের হয়রানির শিকার হয়। পরে সেই যাত্রীদের লোকালবাসে করে চেকপোস্টে পাঠায় পৌর সভার লোকজন। প্রশাসনের এ ধরনের আচরণের প্রতিবাদে পরিবহন মালিক সমিতি শুক্রবার রাতে ঢাকা থেকে বেনাপোলের উদ্দেশে কোনো গাড়ি ছাড়েনি। বেনাপোল থেকে সকল ধরনের পরিবহন বন্ধ রেখেছে।
বেনাপোল পৌরসভার প্রশাসক কাজী নজির হাসান বলেন, রাত ১২টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত যাত্রী নিয়ে সব দূরপাল্লার পরিবহন বেনাপোল চেকপোস্টে যেতে পারবে। বন্দরে যানজট নিরসনের জন্যই এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।