কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ২০:০৯ পিএম
আপডেট : ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ২০:৪৬ পিএম
মাঠের এক পাশে বাঁশের খুঁটির ওপর নারিকেল পাতায় ছাউনি দিয়ে তৈরি হয়েছে আলোচনা সভার মঞ্চ। মাঠের চারপাশে স্টল বসেছে নানা পণ্যসামগ্রী নিয়ে। সেখানে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী খাসিয়া সম্প্রদায়ের উৎপাদিত সামগ্রী ছাড়াও খেলনা, খাবার, পোশাক ও মসলাসামগ্রী স্থান পায়।
সিলেট বিভাগের ৭০টি খাসিয়া পুঞ্জি থেকে নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর এসেছে তাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে। তাদের অংশগ্রহণে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিল নৃত্যগীত, পান সাজানো, তীর-ধনুক খেলা, তেলযুক্ত বাঁশে উঠে ওপরে রাখা মোবাইল ফোন গ্রহণ। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে এভাবে নিজেদের বর্ষবিদায় উৎসব করেছে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী খাসিয়া সম্প্রদায়।
খাসিয়াদের ভাষায় এ উৎসবকে বলা হয় খাসি সেং কুটস্নেম। ২০১২ সাল থেকে প্রতিবছর ২৩ নভেম্বর ঐতিহ্যবাহী প্রথায় বর্ষবিদায় উদযাপন করে আসছে খাসিয়া সম্প্রদায়ের মানুষ। এ উপলক্ষে শনিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুর থেকে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের মাগুরছড়া পুঞ্জির ফুটবল মাঠে খাসি সোশ্যাল কাউন্সিলের আয়োজনে দিনব্যাপী খাসি সেং কুটস্নেম উৎসব হয়।
বর্ণাঢ্য আয়োজনে বর্ষবিদায় উৎসবে প্রধান অতিথি ছিলেন মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আব্দুস সালাম চৌধুরী। মাগুরছড়া খাসিয়া পুঞ্জির হেডম্যান ও খাসি সোশ্যাল কাউন্সিলের সভাপতি জিডিসন প্রধান সুচিয়াংয়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কমলগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ডিএম সাদিক আল শাফিন ও সিলেট বিভাগের বিভিন্ন খাসিয়া পুঞ্জির হেডম্যানরা।
মাগুরছড়া ইয়ুথ ক্লাবের সভাপতি ফরলী মিয়াঙ ও খাসি সোশ্যাল কাউন্সিলের তথ্য সম্পাদক সাজু মারছিয়াং বলেন, ‘এ উৎসবের মাধ্যমে আমাদের সম্প্রদায়ের বিলুপ্তপ্রায় সংস্কৃতি ও খেলাধুলাকে ধরে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে।’
খাসি সেং কুটস্নেম উৎসব উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ফিলা পতমী বলেন, ‘ব্রিটিশ আমল থেকে ভারতের মেঘালয় রাজ্যে ২৩ নভেম্বর খাসি বর্ষবিদায় খাসি সেং কুটস্নেম উদযাপন করা হয়। কমলগঞ্জের মাগুরছড়ায় ২০১২ সাল থেকে খাসি বর্ষবিদায় উদযাপন করা হচ্ছে। পরের দিন (আজ) শুরু হবে খাসি বর্ষবরণ (স্ন্যাম থাইমি) উৎসব।’