× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

কাফনের কাপড় পরে সেন্টমার্টিন দ্বীপের বাসিন্দাদের অবস্থান

কক্সবাজার অফিস

প্রকাশ : ১৯ নভেম্বর ২০২৪ ১৬:৪৪ পিএম

আপডেট : ১৯ নভেম্বর ২০২৪ ১৭:০৯ পিএম

কাফনের কাপড় পরে সেন্টমার্টিন দ্বীপের বাসিন্দাদের অবস্থান

সেন্টমার্টিন দ্বীপ ভ্রমণে ‘পর্যটক সীমিতকরণ ও রাত্রিযাপন নিষিদ্ধসহ বিধি-নিষেধ প্রত্যাহারের’ দাবিতে কক্সবাজার শহরে সড়ক অবরোধ করে মানবন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে দ্বীপের বাসিন্দারা। এসময় দ্বীপের বাসিন্দারা কাফনের কাপড় পরে সড়কে শুয়ে পড়েন।

মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) বেলা ১১টা থেকে কক্সবাজার শহরের প্রবেশমুখ কলাতলীর ডলফিন মোড়ে সেন্টমার্টিন দ্বীপের বাসিন্দাদের উদ্যোগে এ কর্মসূচি শুরু হয়। কর্মসূচিতে দ্বীপবাসীর পাশাপাশি হোটেল-মোটেল, রেঁস্তোরা ও ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশনসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সহস্রাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারি ও কর্মিরা অংশগ্রহণ করেন।

১২টার দিকে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনার জন্য ঘটনাস্থলে আসেন কক্সবাজার সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা নীলুফা ইয়াসমিন চৌধুরী ও কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জসীম উদ্দিন চৌধুরীসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা। আলোচনার পর প্রশাসনের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে ৫ ঘণ্টা পর বিকাল ৪ টার দিকে অবরোধ প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন আন্দোলনকারীরা।

১১ টার কলাতলী মোড়টি শহরের অত্যন্ত ব্যস্ততম এলাকা এবং প্রবেশমুখ হওয়ায় অবস্থান কর্মসূচীর কারণে চতুর্দিকে গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে শত শত যানবাহন আটকা পড়ায় পর্যটক ও স্থানীয়রা দুর্ভোগে পড়েন।

সেন্টমার্টিন দ্বীপের বাসিন্দা আব্দুল মালেকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন সেন্টমার্টিনের বাসিন্দা ও পর্যটন ব্যবসায়ী মাওলানা আব্দুর রহমান খান, মোহাম্মদ আলম, সরওয়ার কামাল, ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কক্সবাজার (টুয়াক) একাংশের সভাপতি রেজাউল করিমসহ অনেকে।

আব্দুল মালেক জানান, অতীতে কোনো সরকার দ্বীপ নিয়ে এমন তালবাহনা করেনি। কিন্তু বর্তমান সরকার পরিবেশ-প্রতিবেশ রক্ষার নামে পর্যটন শিল্প ধংস করে দ্বীপ নিয়ে পাঁয়তারা শুরু করেছে। সরকার এমন হটকারি সিদ্ধান্ত থেকে সরে না আসার কারণে দ্বীপের মানুষ আন্দোলন করতে বাধ্য হচ্ছেন।

তিনি বলেন, প্রতি বছর অক্টোবরের শেষ থেকে দ্বীপটি পর্যটন মৌসুম শুরু হয়। কিন্তু এবার নভেম্বরের শেষ সময় এসেও শুরু হয়নি পর্যটকের আনাগোনা। অনিশ্চিয়তার কবলে রয়েছে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল। এর মধ্যে দ্বীপে বসবাসকারী মানুষ নিজস্ব প্রয়োজনে কাঠের ট্রলার বা স্পিড বোট করে টেকনাফ আসা-যাওয়া করতেও প্রতিবন্ধকতায় আছেন। তাদের আসা বা যাওয়া এখন নির্ভর করছে প্রশাসনিক অনুমতির উপর। এর বাইরে স্থানীয় যারা বাংলাদেশের কোনো নাগরিক দ্বীপে যেতে হলে লিখিত অনুমতির শর্ত দেওয়া হয়েছে সম্প্রতি। ফলে দ্বীপের মানুষের মধ্যে ক্রমাগত উদ্বেগ বাড়ছে।

আন্দোলনে অংশ নেয়া আবুল কালাম জানান, দ্বীপের মানুষ এখন অসহায়। তাদের নিত্যপ্রয়োজনী পণ্যের আনা-নেওয়ার ক্ষেত্রেও রয়েছে জটিলতা। স্বাধীন দেশের একটি দ্বীপ নিয়ে এমন বিধিনিষেধ উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত ২২ অক্টোবর পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রাণলয়ের সভায় সেন্টমার্টিনের বিষয়ে নানা বিধি নিষেধ আরোপ করে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে গত ২৮ অক্টোবর একই মন্ত্রণালয়ের উপসচিব অসমা শাহীন স্বাক্ষরিত একটি পরিপত্র জারি করে। যে পরিপত্রে ৫ টি বিষয় উল্লেখ্য রয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে- সেন্টমার্টিনে নৌ-যান চলাচলের বিষয়টি বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহণ কর্তৃপক্ষ পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সম্মতি গ্রহণ করে অনুমতি প্রদান করবে। নভেম্বর মাসে দ্বীপে পর্যটক গেলেও দিনে ফিরে আসতে হবে। রাত্রিযাপন করতে পারবেন না। ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে রাত্রিযাপন করা যাবে। পর্যটকের সংখ্যা গড়ে প্রতিদিন ২ হাজারের বেশি হবে না। দ্বীপে রাতে আলো জ্বালানো যাবে না, শব্দ দূষণ সৃষ্টি করা যাবে না। বার বি কিউ পার্টি করা যাবে না।

ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কক্সবাজার (টুয়াক) একাংশের সভাপতি রেজাউল করিম বলেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপের পরিবেশ-প্রতিবেশ সম্পর্কে তারা সম্যক অবগত। পরিবেশ রক্ষা করতে দ্বীপবাসীকে সাথে নিয়েই করতে হবে। কিন্তু সরকার পরিবেশ রক্ষার দোহাই দিয়ে পর্যটক গমনাগমনে বিধি-নিষেধ আরোপ পর্যটন শিল্প ধংসেরই পাঁয়তারা করছেন। এতে দ্বীপবাসীর জীবন-জীবিকাসহ পর্যটনের সঙ্গে জড়িত হাজার হাজার কর্মির কর্মসংস্থান হুমকির মুখে পড়েছে।

কক্সবাজার সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা নীলুফা ইয়াসমিন চৌধুরী জানিয়েছেন, দ্বীপের বিষয় নিয়ে ঢাকায় বৈঠক চলছে। বিষয়টি তাদের অবহিত করা হয়েছে। আন্দোলনের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মহলকে অবহিত করা হয়েছে। দ্রুত দ্বীপের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জসীম উদ্দিন চৌধুরী জানান, বিকাল ৪টার পর থেকে সড়ক অবরোধ প্রত্যাহার করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা