× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

অব্যবহৃতই থেকে গেল ৩৩৬ কোটির রেলপথ

ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৯ নভেম্বর ২০২৪ ০৯:৫৫ এএম

আপডেট : ১৯ নভেম্বর ২০২৪ ১০:৩৭ এএম

অব্যবহৃতই থেকে গেল ৩৩৬ কোটির রেলপথ

পাবনার ঈশ্বরদীতে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের মালামাল ও ফুয়েল পরিবহনের জন্য ৩৩৫ কোটি ৯৭ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে রূপপুর রেলওয়ে স্টেশন। স্টেশনটি ২০২৩ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি মাসে জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ দেশি-বিদেশি অতিথিরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। তবে উদ্বোধনের দেড় বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও এক ছটাক পণ্যও পরিবহন করতে দেখা যায়নি। বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে নির্মিত এই স্টেশনটি কেবল রেলের ওয়াগন ইয়ার্ড ও মালপত্র রাখার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে স্টেশনটি আদৌ কোনো কাজে আসবে কি না- এ নিয়ে নানা সংশয় রয়েছে।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীনে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করে রেল কর্তৃপক্ষ। ২০১৮ সালের এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত চলে স্টেশনটি নির্মাণের কর্মযজ্ঞ। প্রকল্পের আওতায় ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশন থেকে ঈশ্বরদী হয়ে রূপপুর পর্যন্ত ২৬ দশমিক ৫২ কিলোমিটার রেলপথ ও রূপপুর নামে একটি স্টেশন নির্মাণ করা হয়। এর মধ্যে ১৩টি লেভেল ক্রসিং, ৭টি বক্স কালভার্ট নির্মাণ ও বিদ্যুৎকেন্দ্রের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের জন্য কম্পিউটার বেজ, কালার লাইট ও সিগন্যালিং সিস্টেম স্থাপন করা হয়। 

প্রকল্পসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উদ্বোধনের সময় বলেছিলেন, রূপপুর স্টেশন থেকে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করবে না। এটি শুধু বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালপত্র ও ভারী যন্ত্রপাতি আনা-নেওয়ার জন্য ব্যবহৃত হবে। পাশাপাশি ঈশ্বরদী ইপিজেডের মালামালও এই স্টেশন থেকে পরিবহন করা হবে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভারী যন্ত্রপাতি নদী ও সড়কপথেই প্রকল্প এলাকায় আনা হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, পাকশীর পদ্মা নদীর কোল ঘেঁষে পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের পাশেই আধুনিক আঙ্গিকের রূপপুর স্টেশনটি জনশূন্য। রেলওয়ের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা সেখানে দায়িত্ব পালন করছেন। প্ল্যাটফর্ম এলাকায় যত্রতত্র ময়লা পড়ে আছে। টিকিট কাউন্টার, গুডস বুকিং রুম, গেস্ট রুম, ভিআইপি রুম, প্রথম শ্রেণির ওয়েটিং রুম, স্টেশনমাস্টার, সহকারী স্টেশনমাস্টারসহ সব কক্ষই তালাবদ্ধ।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক সদস্য বলেন, রূপপুরের মালপত্র আনা-নেওয়ার জন্য স্টেশন থেকে যে রাস্তা রয়েছে, সেটি হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নিচ দিয়ে। এই দিক দিয়ে আনা-নেওয়া ঝুঁকিপূর্ণ। শুনেছি এজন্যই নাকি লোড-আনলোড হচ্ছে না।

গণমাধ্যমকর্মী শহিদুল ইসলাম ববি সরদার বলেন, ‘রূপপুর প্রকল্পের মালামাল পরিবহনের জন্য ঈশ্বরদী বাইপাস থেকে রূপপুর পর্যন্ত যে রেলপথ নির্মিত হয়েছে, তা আজ পর্যন্তও তালাবদ্ধ। ২২ মাস পেরিয়ে গেলেও এই স্টেশনে কোনো ট্রেন যাতায়াত করেনি, রেলের কোনো আয়ও হয়নি। এটি আদৌ ব্যবহৃত হবে নাকি দুর্নীতি, লুটপাট করার জন্য এটি করা হয়েছে- তা খতিয়ে দেখা দরকার।’

রাজিবুল আলম ইভান নামে এক কলেজশিক্ষক বলেন, ‘পতিত সরকার রূপপুর প্রকল্পের মালামাল পরিবহনের জন্য রেলস্টেশ নির্মাণ করেছিল। কিন্তু আজ পর্যন্ত স্টেশনটির তালাই খোলা হলো না। স্টেশনটি আসলেই কি কোনো কাজে ব্যবহার হবে, নাকি রেলওয়ে ও আওয়ামী লীগ সরকারের দুর্নীতির একটি অংশ, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।’

পাকশী রেলওয়ে বিভাগীয় ম্যানেজার (ডিআরএম) শাহ সুফী নূর মোহাম্মদ জানান, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভারী যন্ত্রাংশ ও ফুয়েল পরিবহনের জন্য ডুয়েল গেজ সম্পন্ন একটি রেলপথ নির্মাণ করা হয়েছে। সড়কপথে কোনো অরাজকতা, হরতাল-অবরোধের কারণে পরিবহনে বিলম্ব হয়, তবেই এই রেলপথের মাধ্যমে তা নিয়ে আসা হবে। মূলত এ কারণেই এই স্টেশনটি নির্মিত হয়েছে।


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা