বগুড়ায় উম্মে সালমা হত্যা
বগুড়া অফিস
প্রকাশ : ১৫ নভেম্বর ২০২৪ ২১:০২ পিএম
আপডেট : ১৫ নভেম্বর ২০২৪ ২১:০৯ পিএম
মা উম্মে সালমাকে হত্যার অভিযোগে ছেলে সাদকে আটক করে র্যাব। ফাইল ফটো
বগুড়ায় গৃহবধূ উম্মে সালমাকে হত্যার পর ডিপ ফ্রিজে রাখার ঘটনা নতুন মোড় নিয়েছে। হত্যাকাণ্ডের দুদিন পর উম্মে সালমার ছেলে এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত বলে দাবি করেছিল র্যাব। তবে পুলিশ বলছে সালমার ছেলে সাদ নয়, হত্যাকারী তাদের ভাড়াটিয়া।
হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তারও করেছে পুলিশ। তারা হলেন- ভাড়াটিয়া মাবিয়া আক্তার এবং তার দুই সহযোগী সুমন চন্দ্র ও মোসলেম। তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বগুড়া জেলা পুলিশের মিডিয়া মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন রঞ্জন সরকার।
এর আগে, গত রবিবার দুপচাঁচিয়া উপজেলার জয়পুরপাড়া এলাকায় নিজ বাড়িতে হত্যাকাণ্ডের পর খুনিরা উম্মে সালমার মরদেহ ফ্রিজে রেখে যান। দুদিন পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য উম্মে সালমার ছোট ছেলে সাদকে আটক করে র্যাব। পরদিন র্যাব জানায়, উম্মে সালমার ছেলে সাদ বিন আজিজুর রহমান স্বীকার করেছেন তিনি নিজেই তার মাকে হত্যা করেছেন।
আর এখন জেলা পুলিশ বলছে, সাদ তার মাকে হত্যা করেননি, তাদের বাড়ির ভাড়াটিয়া মাবিয়া আক্তার ২ সহযোগীকে নিয়ে হত্যা করেছেন উম্মে সালমাকে।
দুপচাঁচিয়া থানা পুলিশ জানায়, হত্যাকাণ্ডের সময় ওই বাসা থেকে খোয়া যাওয়া ওয়াইফাই রাউটার এবং মোবাইলের সূত্র ধরে তারা প্রথমে আটক করেন বাসার ভাড়াটিয়া মাবিয়া আক্তারকে। মাবিয়া পুলিশকে জানান, চার মাস আগে উম্মে সালমার ওই বাসা ভাড়া নিয়ে তিনি এখানে মাদক ও অনৈতিক কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন। বিষয়টি টের পাওয়ার পর উম্মে সালমা ও তার স্বামী আজিজুর রহমান ভাড়াটিয়া মাবিয়া আক্তারকে এক মাস ধরে বাড়ি ছেড়ে দেওয়ার জন্য বলছিলেন। তার কাছে দুই মাসের ভাড়াও পাওনা ছিল। বিষয়গুলো নিয়ে মাবিয়া বাড়ির গৃহকর্তি উম্মে সালমার উপর ক্ষুব্ধ ছিলেন। তাই তিনি তার সহযোগী ও মাদক ব্যবসায়ী সুমন চন্দ্র সরকার এবং মোসলেমকে নিয়ে গেল শনিবার উম্মে সালমাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
পুলিশ আরও জানায়, পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার সময় মাবিয়া প্রথমে ওই বাসায় প্রবেশ করেন। পরে মোবাইলফোনে ডেকে নেন দুই সহযোগী সুমন ও মুসলিমকে। তারা দুজন বাসায় ঢুকেই চেতনানাশক স্প্রে করে উম্মে সালমাকে অচেতন করেন। এরপর তার নাক মুখ ও হাত বেঁধে বাসার ডিপ ফ্রিজে ঢুকিয়ে রেখে তারা তিনজন সেখান থেকে বেরিয়ে যান।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন রঞ্জন সরকার বলেন, আটকের পর মাবিয়া, সুমন ও মুসলিম উম্মে সালমাকে হত্যার কথা স্বীকার করে ঘটনার পুরো বিবরণ দিয়েছে। পরে তাদের দেখানো জায়গা থেকে পুলিশ হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত জিনিসপত্র এবং ওই বাসা থেকে খোয়া যাওয়া জিনিসপত্রগুলো উদ্ধার করে। বিকালে তাদের তিনজনকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী নেওয়ার জন্য বগুড়ার আদালতে নিয়েছে পুলিশ।
তিনি আরও বলেন, আমরা এ ঘটনার আরও অধিকতর তদন্ত করছি। বিস্তারিত তথ্য তদন্ত শেষে জানানো হবে।