গাজীপুর প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৭ নভেম্বর ২০২৪ ১৬:১৮ পিএম
আপডেট : ০৭ নভেম্বর ২০২৪ ১৮:৩৩ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী, জরুণ, জিরানি ও কাশিমপুর এলাকায় অন্তত ৩০টি কারখানা ছুটি হয়েছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এদিকে মহানগরীর তুসুকা গ্রুপের দুই শতাধিক শ্রমিক ছাঁটাই করা হয়েছে।
গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী এলাকার তুসুকা গ্রুপের ৬টি কারখানা এক সপ্তাহ আগে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এবার বন্ধ থাকা ওই কারখানার ২৩৯ জন শ্রমিককে ছাঁটাই করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে ছাঁটাইকৃত শ্রমিকদের একটি তালিকা কারখানার প্রধান ফটকে সাঁটিয়ে দেওয়া হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইসলাম গ্রুপের ৫টি, তুসুকা গ্রুপের ৬টি, ফ্যাশন সামিথ, ফ্যাশন পয়েন্ট, রেজাউল এ্যাপারেলস ,রিপন নীটওয়্যার, কে এম নীটওয়্যার, কানিজ ফ্যাশন, লাইফ টেক্সটাইল লিমিটেড এবিএম ফ্যাশন লিমিটেড, পিএন কম্পোজিট নিট লিমিটেড, ফাইজা ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, এমএম নিট ওয়ার লিমিটেড, মামুন নিট ওয়ার লিমিটেড, ফ্লোরেন্স ফেব্রিক্স লিমিটেড, অনাবিল এ্যাপারেলস লিমিটেড, কটন ক্লাব লিমিটেড, এমা সাইটেক্স লিমিটেড এসব কারখানা বন্ধ রয়েছে।
শ্রমিকরা জানান, গত কয়েক দিন আগে কোনাবাড়ীতে প্রথমে তুসুকা বন্ধ করে দেয়। এরপরেই প্রায় প্রতিদিন কোনো না কোনো কারখানা বন্ধ করে দিচ্ছে। আমরা তো ভাঙচুর করিনি তাহলে কেন সব বন্ধ করে দিচ্ছে। এভাবে চললে হাজার হাজার শ্রমিকরা কীভাবে চলবে। এটির একটা সমাধান দরকার। আমাদের মধ্যে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা কাজ করছে।
কারখানা কর্তৃপক্ষ ও শিল্প পুলিশ জানায়, গত দুই নভেম্বর শ্রমিক আন্দোলনের কারণে ৩ নভেম্বর থেকে কোনাবাড়ী এলাকার তুসুকা গ্রুপের তুসুকা জিন্স লিমিটেড, তুসুকা ট্রাউজার্স লিমিটেড, তুসুকা প্রসেসিং লিমিটেড, তুসুকা প্যাকেজিং লিমিটেড, তুসুকা ডেনিম লিমিটেড এবং তুসুকা ওয়াশিং লিমিটেডসহ ৬টি কারখানা শ্রম আইনের ১৩(১) ধারায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। বেশ কিছুদিন বন্ধ থাকার পর কারখানায় বিশৃঙ্খলার অভিযোগে ২৩৯ জন শ্রমিককে ছাঁটাই করা হয়েছে। শ্রমিক ছাঁটাইয়ে খবর পেয়ে সকাল থেকে আশপাশের পুরুষ ও নারী শ্রমিকরা কারখানার সামনে ভিড় করছেন। অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।
ছাঁটাইকৃত শ্রমিক ফেরদৌসী আক্তার বলেন, ‘কারখানায় যদি হামলা ভাঙচুর হয়ে থাকলে আমাদের কী দোষ। আমরা চাকরি ফিরে চাই। আমরা কাজ করতে চাই। কোনো ঝামেলা চাই না।’
শ্রমিক বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘কারখানা বন্ধ আছে। এর মধ্যে বুধবার রাত ৮টার দিকে মোবাইলে মেসেজ আসে, মো. বিল্লাল আপনাকে ৬/১১/২০২৪ থেকে অবসান করা হলো। আপনার সমুদয় পাওনাদি কারখানার হিসাব শাখা হতে দেওয়া হবে।
তুসুকা গ্রুপের পরিচালক তারেক হাসান জানান, শ্রম আইনের বিধি মোতাবেক ২৩৯ জন শ্রমিককে ছাঁটাই করা হয়েছে। তাদের সব পাওনাদি শ্রম আইন অনুযায়ী পরিশোধ করা হবে।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার আবু তালেব জানান, শ্রমিক ছাঁটাইয়ের খবর পেয়ে কোনাবাড়ীসহ বিভিন্ন এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এ ছাড়া গোয়েন্দা নজরদারিও রয়েছে।