খুলনা অফিস
প্রকাশ : ০৬ নভেম্বর ২০২৪ ১৭:২৭ পিএম
আপডেট : ০৬ নভেম্বর ২০২৪ ১৮:৩৫ পিএম
খুলনাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলায় লোডশেডিং শুরু হয়েছে। তবে শহরের তুলনায় গ্রামাঞ্চলে লোডশেডিং বেশি হচ্ছে। ফলে গরমে মানুষ অতিষ্ঠ এবং বিদ্যুৎনির্ভর শিল্প-কারখানায় উৎপাদন, রপ্তানিকারক কোম্পানির কার্যক্রমসহ সব খাত বিঘ্নিত হচ্ছে।
জানা গেছে, মোট ২১ জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহের দায়িত্বে রয়েছে খুলনার ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো)। সংস্থাটির খুলনা মহানগরীর বয়রা এলাকার প্রধান কার্যালয় থেকে জানা গেছে, পদ্মার দক্ষিণের ২১ জেলায় বিদ্যুতের গ্রাহক রয়েছে প্রায় ১৪ লাখ ২৮ হাজার। এর মধ্যে শুধু খুলনায় গ্রাহক আছে প্রায় ২ লাখ ৪৫ হাজার। ওজোপাডিকোর আওতাধীন ২১ জেলায় গত সোমবার দুপুর ১টা পর্যন্ত বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ৬১১ মেগাওয়াট। এর বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৫৬৪ মেগাওয়াট। লোডশেডিং ছিল ৪৭ মেগাওয়াট। এর মধ্যে খুলনাতে লোডশেডিং ছিল ১১ মেগাওয়াট, মাগুরা ৪ মেগাওয়াট, নড়াইল ২ মেগাওয়াট, কুষ্টিয়া ১০ মেগাওয়াট, চুয়াডাঙ্গা ৩ মেগাওয়াট, ফরিদপুর ৭ মেগাওয়াট, মাদারীপুর ৩ মেগাওয়াট, রাজবাড়ী ৫ মেগাওয়াট, ঝালকাঠিতে ৪ মেগাওয়াট ও শরিয়তপুরে ২ মেগাওয়াট।
লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। নগরীর খানজাহান আলী মার্কেটের দোকানি আসলাম হোসেন বলেন, দুই-তিন দিন ধরে দিন-রাতে সমানে লোডশেডিং হচ্ছে। কখনও কখনও মাত্র আধা ঘণ্টার বেশি বিদ্যুৎ থাকছে না। লোডশেডিংয়ের সময় বেচাকেনা বিঘ্নিত হয়।
ফটোস্ট্যাট দোকানি আকমল, কম্পিউটার ব্যবসায়ী মনিরুল ইসলাম ও সোহেল মাহমুদ বলেন, দুই দিন ধরে লোডশেডিং। কম্পিউটারের কাজ এবং ফটোকপি করা সম্ভব হচ্ছে না। এতে তাদের ব্যাপক ক্ষতির শিকার হতে হচ্ছে।
নগরীর নিরালা আবাসিক এলাকার বাসিন্দা হারুনুর রশিদ, দেবাশীষ রায়, হাসান আল মামুন, শিক্ষার্থী সাব্বির খান, আলামীন তালুকদার বলেন, খুলনায় আবারও লোডশেডিং শুরু হয়েছে। লোডশেডিংয়ে গরমে লেখাপড়া বিঘ্নিত হচ্ছে। এ বিষয়ে সরকারের নজর দেওয়া উচিত।
ডুমুরিয়া উপজেলার রুদাঘরা গ্রামের মনিরুল ইসলাম বলেন, রাত-দিন ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সাত-আট বার লোডশেডিং হচ্ছে। একবার গেলে ১ ঘণ্টার মধ্যেও বিদ্যুৎ আসে না।
বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক হুমায়ুন কবীর বলেন, হিমায়িত চিংড়ি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর কোল্ড স্টোরেজে তাপমাত্রা ঠিক রাখতে গিয়ে চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে। লোডশেডিং চলাকালে জেনারেটর চালিয়ে রাখতে বাড়তি ব্যয় হচ্ছে। এমনকি চিংড়িসহ মাছ রপ্তানিতে সমস্যাও হচ্ছে।
খুলনা ওজোপাডিকোর প্রধান নির্বাহী শামছুল আলম জানান, কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ রাখায় বিদ্যুৎ উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে। সে কারণে ঘাটতি পূরণে লোডশেডিং করতে বাধ্য হচ্ছেন। এটা শুধু খুলনা অঞ্চলে নয়, তাদের আওতাধীন সব এলাকায়ই কমবেশি হচ্ছে। উৎপাদন বাড়লে এ সমস্যার সমাধান হবে বলেও তিনি জানান।