দেওয়ানগঞ্জ
মহসিন রেজা রুমেল, দেওয়ানগঞ্জ (জামালপুর)
প্রকাশ : ০৬ নভেম্বর ২০২৪ ০৯:৩০ এএম
জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জের কাঠারবিল-সানান্দবাড়ী সড়কের গয়েরডোবা খালের ওপর সেতুটি প্রায় ১১ বছর ধরে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিনই সেতুটি দিয়ে চলাচল করছে যানবাহন ও পথচারী। প্রবা ফটো
জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে কাঠারবিল সানান্দবাড়ী সড়কের গয়েরডোবা খালের ওপর নির্মাণ করা সেতুটি প্রায় ১১ বছর ধরে ঝুঁকিপূর্ণ। প্রতিদিনই সেতুটি ব্যবহার করছে যানবাহনসহ পথচারীরা। এতে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা স্থানীয়দের। সেতুটি নতুন করে নির্মাণের দাবি তাদের।
উপজেলা এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, এলজিইডির অর্থায়নে ২০০৬ সালে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার কাঠারবিল-সানান্দবাড়ী সড়কের গয়েরডোবা খালের ওপর হেঁটে পার হওয়ার জন্য একটি সেতু নির্মাণ করা হয়। ৩৫ লাখ ২৫ হাজার ৫৯৭ টাকা ব্যয়ে ১৪৪ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ছিল মেসার্স কাদের এন্টারপ্রাইজ। ২০১৭ সালে কাঠারবিল থেকে সানান্দবাড়ী পর্যন্ত পাকা সড়ক নির্মিত হলে সেতু দিয়ে যান চলাচল শুরু হয়।
গত সোমবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, সেতুটির দুই পাশের রেলিং ভাঙা। পাটাতন উঠে গিয়ে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া সেতুটির প্রশস্ততা খুবই কম। পাশাপাশি দুটি ভ্যানগাড়ি চলতে পারে না।
স্থানীয়দের অভিযোগ, কাঠারবিল-সানান্দবাড়ী সড়ক পাকা হওয়ায় সেতু ব্যবহার করে বিশাল জনগোষ্ঠীর শহরে যাতায়াত সহজ হয়। তবে নির্মাণের সাত বছরের মাথায় ২০১৩ সাল থেকেই এটি ব্যবহারে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠতে থাকে। এরপর দীর্ঘ বছর ধরেই সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। তার ওপর যানবাহন চলাচল শুরু হওয়ায় এটি আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে।
স্থানীয় বাসিন্দা হজরত আলী মাস্টার বলেন, প্রায় ১১ বছর আগে থেকে সেতুটির রেলিং ভাঙতে শুরু করে। প্রায় সাত থেকে আট বছর আগে থেকে ভাঙতে শুরু করে পাটাতন। এর ওপর দিয়ে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে শত শত যানবাহন চলাচল করছে। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দীর্ঘদিন বিভিন্ন মহলে ঝুঁকিপূর্ণ সেতুর বিষয়টি জানালেও কেউ গুরুত্ব দেয়নি। তারা এটির প্রশস্ততা বাড়ানোসহ যানবাহন পারাপারের উপযোগী সেতু নির্মাণের দাবি জানান।
লংকারচর গ্রামের শিক্ষক আব্দুল খালেক জানান, ১১ বছর ধরে সেতুটি জীর্ণদশা। দুই পাশে প্রশস্ত সংযোগ সড়ক হওয়ায় সেতুর ব্যবহার কয়েক গুণ বেড়ে গেছে। সেতুটির প্রশস্ততা এতই কম যে, বিপরীতমুখী দুটি অটোরিকশা একসঙ্গে সেতুটি অতিক্রম করার জো নেই। পথচারী সেতুটি যেকোনো সময় ভেঙে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
সকালবাজার এলাকার আ. সালামের ভাষ্য, গয়ারডোবা খালের ওপর নির্মাণ করা পদচারী সেতুটি দীর্ঘদিন রেলিং ও পাটাতন ভেঙে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এর ওপর উঠলে ভয় লাগে, কখন রেলিংয়ের পাশ দিয়ে যানবাহন নিচে পড়ে যায় কিংবা পাটাতন ভেঙে যায়।
ভ্যানচালক সুজন মিয়া জানান, রেলিং ও পাটাতন ভাঙা সেতুটি চলাচলের অনুপযোগী। সেতুর ওপর ভ্যান নিয়ে উঠলে ভয় লাগে, ভ্যানে থাকা যাত্রীরাও ভয় পায়। যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
এ ব্যাপাারে চর আমখাওয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউল ইসলাম বলেন, কাঠারবিল সানান্দবাড়ী সড়কের গয়ের ডোবা সেতুটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। সেতুর রেলিং অনেক আগেই ভেঙে গেছে। সেতুর পূর্ব-পশ্চিম পাড়ের মানুষের বিকল্প সড়ক না থাকায় প্রতিনিয়ত এই সেতু দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছে।
এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী মো. তোফায়েল আহমেদ বলেন, গয়ের ডোবা সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ। ওই স্থানে নতুন সেতু নির্মাণের প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছিল। সম্প্রতি সেতুটি নতুন করে নির্মাণের জন্য সার্ভে করা হয়েছে। কিছুদিন আগে বুয়েটের একটি পর্যবেক্ষক দল সেতুটি পর্যবেক্ষণ করেছে। সার্ভে শেষে নতুন নকশা অনুমোদন হলে ওই স্থানে সড়কের উপযোগী নতুন সেতু নির্মাণ করা হবে।