ময়মনসিংহ প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৪ নভেম্বর ২০২৪ ১৮:৩৮ পিএম
আপডেট : ০৪ নভেম্বর ২০২৪ ২০:০১ পিএম
ময়মনসিংহের রহমতপুর বাইপাস সড়কের পাশে আজাহার ফিলিং স্টেশনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে দগ্ধ হয়ে মারা গেছেন দুজন। আহত হয়েছেন কমপক্ষে আরও ১০ জন। আগুনে ১০টি যানবাহন ও আশপাশের ২০টি দোকান পুড়ে ছাই হয়েছে। সোমবার (৪ নভেম্বর) দুপুর সোয়া ২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের ৭টি ইউনিট দীর্ঘ ২ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নেভাতে সক্ষম হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সিএনজি ফিলিং স্টেশন থেকে একটি অটোরিকশা আগুন লাগা অবস্থায় বের হয়ে আসে। এ সময় বিকট শব্দে স্টেশনের চারদিকে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। স্টেশনে গ্যাস নিতে আসা ৮ থেকে ১০টি যানবাহন পুড়ে যায়। আশপাশের প্রায় ২০টি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এ সময় বিকট শব্দে এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ও ছোটাছুটি শুরু হয়। অগ্নিকাণ্ডের সময় গ্যাস নিতে আসা হিমেল নামে এক যুবক প্রাইভেট কারের ভেতরেই পুড়ে মারা যান। নগরীর কিসমতপুর এলাকার জামাল উদ্দিনের ছেলে তিনি। এ ছাড়া ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় আব্দুল কুদ্দুস নামে এক বৃদ্ধ পথচারী মারা গেছেন। তিনি ময়মনসিংহ শহরের রহমতপুর এলাকার বাসিন্দা। এ সময় বিভিন্ন যানবাহনের চালক ও যাত্রীসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হন। তাদের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছুটে আসেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীর সদস্যরা হ্যান্ড মাইকে এলাকাবাসীকে সতর্ক করেন।
আবুল আহমেদ নামে একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ঘটনার সময় তিনি একটি অটো রিকশায় ছিলেন। বিকট শব্দে তিনিসহ অন্য যাত্রীরা নেমে নিরাপদ স্থানে যান। তিনি বলেন, তখন বিভিন্ন যানবাহন ও দোকানপাটে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এই দুর্ঘটনাার জন্য তিনি স্টেশনের অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করেন।।তিনি আরও বলেন, এই স্টেশনটি দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল। হঠাৎ এই স্টেশন কীভাবে চালু হলো এটা তার প্রশ্ন।
ময়মনসিংহ ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক মোফাজ্জল হোসেন বলেন, এই সিএনজি স্টেশনে এলপিজির ব্যবস্থা ছিল। এলপিজির একটি লরি থেকে লোড করার সময় গ্যাস লিকেজ হয়ে আগুনের সূত্রপাত হয়। সঙ্গে সঙ্গে খবর পেয়ে ময়মনসিংহ, মুক্তাগাছাসহ বিভিন্ন ফায়ার সার্ভিসের ৭টি ইউনিট এসে দীর্ঘ ২ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নেভাতে সক্ষম হয়।
ময়মনসিংহ তিতাস গ্যাসের এজিএম সঞ্জিত কুমার দে বলেন, দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এলাকার সকল গ্যাসলাইন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। তবে এই দুর্ঘটনা গ্যাস থেকে হয়নি। এটা ঘটেছে এলপিজির লরি থেকে।
এ বিষয়ে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম বলেন, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এই দুর্ঘটনার জন্য তাৎক্ষণিক ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। দ্রুত এই রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। এর পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে সিএনজি স্টেশনের বিরুদ্ধে।
স্থানীয়রা বলছেন, কাগজপত্র না থাকায় ফিলিং স্টেশনটি বন্ধ ছিল। পরে তারা অনুমতি পেয়েছে কি না এসব বিষয় তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানান জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম। স্টেশনটির মালিক আজহার উদ্দিন ঢাকায় থাকেন বলে এলাকাবাসী জানালেও কেউ তার ফোন নম্বর বলতে পারেনি। স্থানীয় লোকজন বা প্রশাসন ফিলিং স্টেশনটির ব্যবস্থাপকের নাম বা ফোন নম্বর বলতে পারেনি। ফলে তাদের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।