সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
আবু বক্কর সিদ্দিক, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা)
প্রকাশ : ০৪ নভেম্বর ২০২৪ ১২:৩২ পিএম
সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। প্রবা ফটো
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স দীর্ঘদিন ধরে জনবল সংকটে ভুগছে। এতে স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত হচ্ছে। ৩০ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও হাসপাতালটিতে বাড়েনি সেবার মান।
জানা যায়, ৫০ শয্যাবিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সঙ্গে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে থাকা সাতটি উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র (সাব-সেন্টার) অন্তর্ভুক্ত। এসব উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে চিকিৎসকের পদ রয়েছে ১৯টি। এর মধ্যে ১৪টি পদই শূন্য। স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তাসহ বর্তমানে নিযুক্ত রয়েছেন মাত্র পাঁচজন চিকিৎসক। এতে হাসপাতালটিতে চিকিৎসাসেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। সহকারী কনসালট্যান্টদের অনুপস্থিতিতে কোনো কোনো ক্ষেত্রে নার্সদের পরিস্থিতি সামলাতে হয়। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তিনটি অ্যাম্বুলেন্স দেওয়া হলেও দীর্ঘদিন ধরে দুটি বিকল। অপর অ্যাম্বুলেন্সটি সচল থাকলেও বহিরাগত চালক দিয়ে চালানো হয়। কোনো এমএলএসএস ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিযুক্ত না থাকায় রোগী ও তাদের সঙ্গে আসা স্বজনদের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
গত শনিবার সকালে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসারত আবু বকর ছিদ্দিক, দুদু মিয়া, রাজগোবিন্দ, ইয়াছিন আলী ও সাইফুল ইসলাম প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ আর অধিকাংশ ওষুধপত্র বাইরে থেকে কিনে আনতে হয়। এখানে ল্যাবে বিভিন্ন সমস্যার অজুহাতে বাইরে গিয়ে পরীক্ষা করে রিপোর্ট আনতে হচ্ছে। খাবারের ক্ষেত্রে তেমন কোনো অভিযোগ না থাকলেও তারা এখানকার রান্না না খেয়ে বাড়ির রান্না খেয়ে থাকেন। তারা অভিযোগ করেনÑ শৌচাগারে পানি ও পরিচ্ছন্নতার অনেক অভাব। রাতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হলে অন্ধকারেই থাকতে হয়। চিকিৎসক সংকটের ফলে নার্সদের ওপর নির্ভর করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। স্থানীয়দের অভিযোগÑ পৌরসভা ও ১৫টি ইউনিয়নের আট লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসাসেবার জন্য একমাত্র স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৩০ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত হয়েছে। তাই খাবার সরবরাহ করা হয় শয্যা অনুযায়ী ৫০ রোগীর জন্য। এর বেশি রোগী ভর্তি হলে তাদের বারান্দা ও মেঝেতে অবস্থান করতে হয়। প্রতিবছর নানা রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ে। এ সময় রোগীদের দুর্ভোগ আরও বেড়ে যায়।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কাজী আবু হাসান প্রতিদিনের বাংলদেশকে বলেন, জনবল সংকট রয়েছে। স্থানীয়ভাবে দুজন পরিচ্ছন্নতাকর্মীকে নিজের থেকে বেতনে রাখা হয়েছে। এসব সমস্যা সমাধানে উচ্চপর্যায়ে বারবার চিঠি দিয়েছি। তবে এখন পর্যন্ত সমাধান মেলেনি। তবে আবারও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। আশা করি, শিগগিরই সমাধান মিলবে।