গাজীপুর প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৩ নভেম্বর ২০২৪ ২২:২৫ পিএম
আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২৪ ২২:৩০ পিএম
গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী এলাকার তুসুকা গ্রুপের ছয়টি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। রবিবার (৩ নভেম্বর) সকালে কারখানাগুলোর সামনে নোটিস টানিয়ে কর্তৃপক্ষের এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। একই দিন মহানগরীর কোনাবাড়ী, জরুণ, জিরানি ও কাশিমপুর এলাকার অন্তত ১৯টি কারখানায় এক দিনের ছুটি দেওয়া হয়।
অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ কারখানাগুলো হলোÑ তুসুকা জিন্স লিমিটেড, তুসুকা ট্রাউজার্স লিমিটেড, তুসুকা প্রসেসিং লিমিটেড, তুসুকা প্যাকেজিং লিমিটেড, তুসুকা ডেনিম লিমিটেড ও তুসুকা ওয়াশিং লিমিটেড।
তুসুকা গ্রুপের নোটিসে বলা হয়, গত শনিবার থেকে শ্রমিকদের একটি দল কিছু বহিরাগতকে সঙ্গে নিয়ে অযৌক্তিক দাবিতে বেআইনি ধর্মঘট শুরু করে। শ্রমিকরা হাজিরা দিয়ে কর্মস্থল ত্যাগ করে কারখানার প্রধান ফটকে এসে জড়ো হন। এরপর সেখানে অস্থিরতা সৃষ্টি করেন। কর্তৃপক্ষ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা একাধিকবার তাদের কাজে ফেরার আহ্বান জানালেও শ্রমিকরা তা অমান্য করেন। তাদের একটি অংশ এমন আচরণ করে যা দাঙ্গা-হাঙ্গামা ও মারামারির মতো অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। তাই বাধ্য হয়ে ৩ নভেম্বর (রবিবার) সকাল ৮টা থেকে কারখানাগুলোর কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে তুসুকা গ্রুপের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে এবং পুনরায় কাজের উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি হলে কারখানাগুলো পুনরায় খোলার বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো হবে। এতে বলা হয়, শ্রমিকদের দাবি ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি নিয়ে কারখানা এলাকায় উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। তাদের অনেকে দাবি করছেন, তারা হাজিরা বোনাস, নাইট বিল, টিফিন বিলসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার বিষয়ে দাবি করেছিলেন। তবে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা না করেই ধর্মঘটে যাওয়ার বিষয়টি বিতর্কিত হয়ে উঠেছে।
এ ছাড়া কোনাবাড়ী বিসিক ও জরুণ এলাকায় বিভিন্ন দাবি ও নিরাপত্তাজনিত কারণে ফ্যাশন সামিথ, ফ্যাশন পয়েন্ট, রেজাউল অ্যাপারেলস, রিপন নিটওয়্যার, এমএম নিটওয়্যার, এসট্রো নিটওয়্যারসহ ৯টি কারখানা এক দিনের ছুটি দিয়েছে।
কোনাবাড়ী থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, ‘জরুণ এলাকার দুটি ও কোনাবাড়ীতে বেশ কয়েকটি কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে তুসুকা গ্রুপের কারখানাগুলো অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে।
অপরদিকে গাজীপুরের কাশিমপুরে প্রোডাকশন জিএম, প্রোডাকশন ম্যানেজার ও অ্যাডমিন ম্যানেজারকে অপসারণের দাবিতে আজও কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ করেন ডরিন গ্রুপের শ্রমিকরা। জানা যায়, রবিবার ওইসব দাবি মেনে নেয় ফ্যাক্টরি কর্তৃপক্ষ। এরপর শ্রমিকরা ফ্যাক্টরির নতুন প্রোডাকশন জিএম শামীম হোসাইনকে অপসারণের দাবি জানান। এ বিষয়ে ফ্যাক্টরি কর্তৃপক্ষ কোনো সিদ্ধান্ত না দেওয়ায় বিক্ষোভ করেন। একপর্যায়ে তারা সন্ধ্যা পর্যন্ত জিরানি-চন্দ্রা সড়ক অবরোধ করে রাখেন। তবে বিকালে ওই আন্দোলন দেখে ভাঙচুরের আশঙ্কায় ডরিন, ডরিন অ্যাপারেলস, নবী টেক্সটাইলসহ আশপাশের অন্তত ১২-১৩টি কারখানা রবিবারের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে।
কাশিমপুর থানার ওসি সাইফুল ইসলাম জানান, ডরিন, ডরিন অ্যাপারেলস কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেন। পরে তারা রাস্তা অবরোধ করে রাখলে সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের বুঝিয়ে সরিয়ে দেয়।
গাজীপুর শিল্প পুলিশ-২ কোনাবাড়ী-কাশিমপুর জোনের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার আবু তালেব বলেন, ‘তুসুকা কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছে। এ ছাড়া কাশিমপুর জোনে ১০টির বেশি কারখানা এক দিনের ছুটি ঘোষণা করে।’