ইন্দুরকানী (পিরোজপুর) সংবাদদাতা
প্রকাশ : ০৩ নভেম্বর ২০২৪ ২০:০৭ পিএম
আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২৪ ২১:১০ পিএম
অভিযুক্ত জামায়াত নেতা নাসির উদ্দিন।
পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে এক নারীকে চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে দুদিন আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে এক জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে। নাসির উদ্দিন নামের ওই জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী নারী।
নাসির উদ্দিন উপজেলার বালিপাড়া ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর বর্তমান রোকন। তিনি ওই ইউনিয়নের পশ্চিম বালিপাড়া গ্রামের মান্নান হাওলাদারের ছেলে। গত ২৮ অক্টোবর ভুক্তভোগী নারী খুলনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১ এ মামলা করেন।
জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে সামাজিকমাধ্যমে ভিডিও ক্লিপ ছড়িয়ে পড়লে উপজেলা জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। বিভিন্ন রাজনৈতিক মহলে এ নিয়ে আলোচনার ঝড় ওঠে। এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর ওই জামায়াত নেতাকে আর প্রকাশ্যে এলাকায় দেখা যায়নি বলে জানায় মানুষজন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ওই নারী ও সাবেক জামায়াত নেতা নাসির উদ্দিন একই গ্রামের বাসিন্দা। চাকরির আশ্বাস দিয়ে নাসির উদ্দিন ওই নারীর অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে গত ২৩ অক্টোবর খুলনায় নিয়ে যান এবং টুটপাড়ার ১৭৪/২৫ নং হোল্ডিংয়ের ফয়সাল ভিলা নামক বাড়িতে ওঠেন। সেখানে তাকে দুদিন আটকে রেখে ধর্ষণ করেন। ২৪ অক্টোবর ওই নারী কৌশলে সেখান থেকে পালিয়ে বিষয়টি তার আত্মীয়স্বজনকে জানান। পরে তাদের পরামর্শে খুলনা সদর থানায় মামলা করতে যান। থানা কর্তৃপক্ষ মামলা না নিয়ে আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দিলে তিনি আদালতে মামলা করেন।
ইন্দুরকানী উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা আলী হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নাসির উদ্দিন বালিপাড়া ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর আমির ছিলেন। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তাকে ২০২৩ সালে বহিষ্কার করা হয়।
তারা বহিষ্কারের কথা বললেও বর্তমানে নাসির উদ্দিন জামায়াতের রোকন পদে বহাল বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে। তাকে কয়েক মাস ধরে ইন্দুরকানীতে সভা-সমাবেশসহ দলের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে দেখা গেছে।
মামলার পর বিভিন্ন রকম হুমকিধমকির কারণে নিরাপত্তার অভাবে বর্তমানে ওই নারী আত্মগোপনে রয়েছেন বলে তার স্বজনরা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। জানা গেছে, কয়েক মাস আগে ওই নারীর স্বামীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। ওই ঘরে তার দুটি সন্তান রয়েছে।
নাসির উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি এ ধরনের কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে পারেন না বলে দাবি করেন। এটাকে তার বিরুদ্ধে স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ীদের ষড়যন্ত্রের ছক বলে উল্লেখ করেন তিনি।