লক্ষ্মীপুর প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৩ নভেম্বর ২০২৪ ১৯:৩০ পিএম
আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২৪ ১৯:৩০ পিএম
‘আমি যাব না মা, যৌতুকের ৩০ লাখ টাকা না দিলে তারা আমাকে মেরে ফেলবে। ওই টাকা দিতে না পারায় নির্মম নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয় জান্নাতুল ফারহানা হাসিকে। তার স্বামী পুলিশ সদস্য হুমায়ুন কবীরসহ শ্বশুর শ্বাশুড়ি এ হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত। কিন্তু পুলিশ মামলাও নিচ্ছে না, কাউকে গ্রেপ্তারও করছে না। দ্রুত এ হত্যার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।’
রবিবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে লক্ষ্মীপুর প্রেস ক্লাবের সামনে মেয়ে হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধনে দাঁড়িয়ে এভাবেই কথাগুলো বলেন হাসির মা রোজিনা আক্তারসহ স্বজনরা। নিপীড়ন বিরোধী ছাত্র সমাজের ব্যানারে ঘণ্টাব্যাপী এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়েছে। মা হত্যার বিচার চেয়ে জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে ফেস্টুন হাতে মানববন্ধনে অংশ নেয় ৬ বছরের শিশু আরাবি।
হাসি লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ও সদর উপজেলা চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের দেওপাড়া গ্রামের শহিদুল ইসলামের মেয়ে।
এদিকে হত্যার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার না করলে আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেয় নিপীড়ন বিরোধী ছাত্র সমাজ।
পরিবারের লোকজন জানায়, প্রায় ৭ বছর আগে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার মহেশপুর গ্রামের জাহের মিয়ার ছেলে হুমায়ুনের সঙ্গে হাসির বিয়ে হয়। হুমায়ুন লক্ষ্মীপুর জজকোর্টে দায়িত্বরত পুলিশ কনস্টেবল। বিয়ের পর থেকে স্বামীসহ শশুর পক্ষের লোকজন তার কাছ থেকে যৌতুক দাবি করে আসছিলেন। তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় শ্বশুর বাড়ির লোকজন নির্মম নির্যাতন চালিয়ে হাসিকে হত্যা করেছে।
হাসির মা রোজিনা আক্তার বলেন, ‘বাড়িতে আসতে বললে হাসি আসতো না ভয়ে। সে বলেছে, মা ৩০ লাখ টাকা যৌতুক না দিলে, তারা আমাকে মেরে ফেলবে। ওই টাকা না পাওয়ায় ২৯ অক্টোবর শ্বশুর বাড়িতে নির্যাতন চালিয়ে হাসিকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় তার স্বামী ও শ্বশুর-শ্বাশুড়ি জড়িত। এখনও পর্যন্ত মামলা নেওয়া হয়নি। কাউকে গ্রেপ্তারও করেনি। এ হত্যার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।’
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী ছাত্র প্রতিনিধিরা বলেন, হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত হুমায়ুন পুলিশের লোক। এজন্য এখনও পর্যন্ত মামলা নেওয়া হয়নি। পুলিশ কোন তদন্তও করছেন না। আমরা এ হত্যার ঘটনায় দ্রুত পুলিশ প্রশাসনের কার্যকরী ভূমিকা দেখতে চাই। তা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।
এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. লিটন দেওয়ানকে একাধিকবার কল করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।