নওগাঁ প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৩ নভেম্বর ২০২৪ ১৬:৫৮ পিএম
আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২৪ ১৭:৫১ পিএম
শনিবার মহাদেবপুর উপজেলার দেওয়ানপুর এলাকায় বালুমহাল নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের দ্বন্দ্বে কেটে রাখা হয়েছে রাস্তা। প্রবা ফটো
নওগাঁর মহাদেবপুরে আত্রাই নদী বালুমহাল নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের দ্বন্দ্বে সরকারি রাস্তার কালভার্ট, ব্রিজ ভাঙচুর ও একাধিক স্থানে কেটে নষ্ট করার অভিযোগ উঠেছে। যানসহ চলাচলে ভোগান্তি দেখা দিয়েছে। ফসলের মাঠে যেতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন কৃষক। কৃষিপণ্য আনা-নেওয়ায় ও ফসলের পরিচর্যা করতে না পারায় লোকসানের আশঙ্কা করছেন তারা। তবে এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মহাদেবপুর উপজেলার আত্রাই নদীর বালুমহাল ইজারা নেন মালেকা পারিভীন। তার কাছ থেকে হাতুড় ইউনিয়নের দেওয়ানপুর গ্রামের সুলতানপুর মৌজার মহাল সাব-ইজারা নেন আবুল কালাম আজাদ বাবু ও আফজাল হোসেন। তারা দুজন পত্নীতলা উপজেলার বিএনপি সভাপতি ফজলে হুদা বাবুল গ্রুপের বলে জানা যায়। আর নূরপুর মৌজার মহাল নেন মহাদেবপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি রবিউল আলম বুলেট গ্রুপের জলিল হোসেন ও জাহাঙ্গীর আলম।
গত ৫ আগস্টের পর থেকে বিএনপির এ দুই পক্ষের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে রূপ নেয়। অভিযোগÑ আবুল কালাম আজাদ বাবু জলিল ও জাহাঙ্গীরকে বালু উত্তোলনে বাধা দেওয়ার লক্ষ্যে সরকারি উপজেলার দেওয়ানপুর গ্রামের কালভার্ট, ব্রিজ ভাঙচুর ও একাধিক স্থানে খনন করে রাস্তা নষ্ট করেছে। তাদের দ্বন্দ্বে ভোগান্তিতে পড়েছেন ৫ গ্রামের অন্তত ১০ হাজার কৃষক। ফসলের মাঠে যেতে না পেরে ফসলের পরিচর্যা ও কৃষিপণ্য আনা-নেওয়া করতে পারছেন না তারা। এতে উৎপাদন ব্যাহত ও লোকসানের আশঙ্কা স্থানীয় কৃষকদের।
দেওয়ানপুর গ্রামের কৃষক আলম হোসেন জানান, দেওয়ানপুর গ্রামের ভেতর দিয়ে ফসলের মাঠে যাওয়া একমাত্র রাস্তা নষ্ট হওয়ায় উৎপাদিত কলা মাঠ থেকে আনতে পারছেন না। ফলে তার কলা মাঠেই পাকতে শুরু করেছে। দ্রুত এ সমস্যার সমাধান না হলে কলা নষ্টের আশঙ্কা করছেন তিনি।
জামবেগম ও হাফিজুর ইসলাম জানান, রাস্তার কালভার্ট ভেঙে ফেলায় গবাদিপশু মাঠে নিয়ে যেতে পারছেন না। ফসলের পরিচর্যার জন্য মাঠেও যেতে পারছেন না। এতে ফসল উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। চিন্তায় তাদের কপালে ভাঁজ পড়েছে।
বালুমহাল ইজারাদার জলিল হোসেন ও জাহাঙ্গীর আলম বলেন, তাদের দুই পক্ষের বালু উত্তোলনে স্থান পাশাপাশি হওয়ায় দীর্ঘদিন থেকে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। এর জেরে গত বৃহস্পতিবার রাতে আবুল কালাম আজাদ বাবু ও তার বাহিনী আমাদের বালু উত্তোলনের মেশিন ভাঙচুর, লুটপাট ও রাস্তা নষ্ট করে দিয়েছে। এতে আমরা লোকসানে পড়েছি। অভিযোগ অস্বীকার করে আবুল কালাম আজাদ বাবু বলেন, তারা নিজেরাই ক্ষতি করে দোষারোপ করছে আমাকে।
মহাদেবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইএনও) আরিফুজ্জামান জানান, বিষয়টি তার জানা নেই। রাস্তা নষ্টের প্রমাণ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।