জয়পুরহাট প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০২ নভেম্বর ২০২৪ ২০:৫০ পিএম
আপডেট : ০২ নভেম্বর ২০২৪ ২০:৫১ পিএম
জয়পুরহাটে সরকারি পুকুরের ইজারা না নিয়ে জোরপূর্বক মাছ ছাড়তে গিয়ে দু’পক্ষের হামলায় অন্তত ১২ জন আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সদর উপজেলার পশ্চিম পেঁচুলিয়া কোচপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আহত সুবাশ চন্দ্র বর্মণ বাদী হয়ে থানায় মামলা করলে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ঘটনার পর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাশেদুল ইসলাম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাজিব কুমার বিশ্বাস, সদর থানার ওসি শাহেদ আল মামুন, জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশের ওসি আসাদুজ্জামান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
শুক্রবার (১ নভেম্বর) রাতে নিজ কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মুহম্মদ আবদুল ওয়াহাব।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, কোচপাড়া এলাকায় একটি সরকারি পুকুর গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের বাসিন্দারা কয়েক বছর ধরে একটি সমিতির নামে ইজারা নিয়েছিল। ১৪৩০ সাল পর্যন্ত তাদের ইজারা ছিল। ওই পুকুরটি আগে পার্শ্ববর্তী জিতারপুর গ্রামের মওলা, মিস্টার, কাসেমরা চাষ করত। এই পুকুর নিয়ে আদালতে একটি মামলা চলমান থাকায় ১৪৩১ সাল থেকে কেউ ইজারা পায়নি। তবে পুকুরটি হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ির পাশে হওয়ায় তারা ব্যবহার করত। গত শুক্রবার সকালে মওলা, মিস্টার, কাসেম তাদের লোকজন নিয়ে ওই পুকুরে মাছ ছাড়তে যায়। এ সময় রাজেন মাছ ছাড়তে নিষেধ করলে তাকে মারপিট করা হয়। তাকে বাঁচাতে গেলে সবাইকে এলোপাতাড়ি মেরে আহত করা হয়। পরে সেখানে থাকা দুটি খড়ের পালায় আগুন দেওয়া হয়।
আহত অর্চনা রানী বলেন, ওই পুকুরের পাশে আমাদের গ্রামের মন্দির রয়েছে। মন্দিরের প্রতিমা সেখানে ডুবিয়ে দেওয়া হয়। আমরা গ্রামের সবাই ওই পুকুর ব্যবহার করি। এজন্য গ্রামের পক্ষ থেকে ইজারা নেওয়া ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে সকালে এসে আমাদের ওপর হামলা ও এলোপাতাড়ি মারধর করা হয়।
ওই গ্রামের বাসিন্দা ও মামলার বাদী সুবাশ চন্দ্র বর্মণ বলেন, আমাদের গ্রামের খাস পুকুরটি বাংলা ১৪৩০ সাল পর্যন্ত পশ্চিম পেঁচুলিয়া কোচপাড়া মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির নামে ইজারা নেওয়া ছিল। ১৪৩১ ও ১৪৩২ সালের জন্য পুনরায় ইজারা নিতে উপজেলা ভূমি অফিসে আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু সেটি পাওয়া যায়নি। যেহেতু আমরা আগে থেকেই মাছ চাষ করতাম এজন্য পুকুরটি ব্যবহার করতাম। কিন্তু হঠাৎ করে শুক্রবার জোরপূর্বক মাছ ছেড়ে দিতে গিয়ে আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা করা হয়েছে। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাজিব কুমার বিশ্বাস বলেন, ওই পুকুরটি এখন কোনো পক্ষের কাছে নেই। এটি নিয়ে আদালতে একটি মামলা থাকায় নতুন করে ইজারা দেওয়া হয়নি। মারধরের শিকার ব্যক্তিদের আইনের সহযোগিতা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। দুটি খড়ের পালা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ায় সেটির ক্ষতিপূরণ চাওয়া হয়েছে।
এসপি মুহম্মদ আবদুল ওয়াহাব বলেন, মূলত পুকুর নিয়ে এমন ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। মামলার পর গোলাম রব্বানী, গোলাম মওলা, মোতাহার হোসেন, জামিউল লাদাইন নামে চারজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।