এম পলাশ শরীফ, মোরেলগঞ্জ (বাগেরহাট)
প্রকাশ : ০২ নভেম্বর ২০২৪ ১৭:৪৩ পিএম
আপডেট : ০২ নভেম্বর ২০২৪ ১৮:৩৩ পিএম
খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের বনগ্রাম ইউনিয়নে অর্ধশতাধিক উপকারভোগীর কার্ডের হদিস মিলছে না বলে অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে। ডিলারদের কাছ থেকে চাল না পেয়ে খালি হাতে বাড়ি ফিরেছেন ভুক্তভোগীরা। এ ব্যাপারে প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন তারা।
অভিযোগ অনুযায়ী, উপজেলার বনগ্রাম ইউনিয়নের সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় ১৫ টাকা কেজি দরে জনপ্রতি মাসে ৩০ কেজি চাল পাবেনÑ এমন তালিকাভুক্ত সুবিধাভোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৭৭। গত সেপ্টেম্বর মাসে ডিলার অনুপ কুণ্ডু ও প্রশান্ত দাস সুবিধাভোগীদের মধ্যে চাল বিতরণ করেন। এ সময় সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে বহিরাগত কয়েকজন ব্যক্তি তাদের কার্ড রেখে দেন। এর পর অক্টোবর মাসের চাল বিতরণের শেষ দিন গত ২৮ অক্টোবর কার্ডধারীদের মধ্যে অর্ধশতাধিক কার্ডের হদিস মেলেনি বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। চাল না পেয়ে খালি হাতে ফেরেন বঞ্চিতরা। প্রকৃত ডিলার ও ট্যাগ অফিসারের উপস্থিতি ছাড়াই স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি চাল বিতরণ করেন বলেও অভিযোগ করেছেন তারা।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, গত মাসে চাল নেওয়ার সময় তাদের কার্ডগুলো ডিলারের সামনে বসেই রেখে দেন বাবুল মেম্বার, মাহাতাব কাজীসহ অনেকে। পরের মাসে চাল দেওয়ার সময় কার্ড ফেরত দেওয়া হবে বলে জানান তারা। এ মাসের চাল নিতে এলে তারা বলছেন কার্ড খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, কার্ড না পেলে চাল দেওয়া হবে না। কয়েক ঘণ্টা বসে থেকে খালি হাতে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে তাদের। এই অনিয়ম দেখার কি কেউ নেই। আমরা আমাদের কার্ড ফেরত চাই।
এ ব্যাপারে ডিলার অনুপ কুণ্ডু বলেন, গত মাসে চাল নিজ থেকেই দিয়েছি। তবে কিছু কার্ড ওইখানকার লোকজন জমা রেখেছেন। তিনি বলেন, এ মাসে আমার নামে ডিও হয়নি। শুনেছি অন্য কারও নামে ডিও হয়েছে। অনেকে ফোন দিয়েছিলেন। তাদের কার্ড পাওয়া যাচ্ছে না, চালও পাননি। আর ডিলার প্রশান্ত দাসের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
সাবেক ইউপি সদস্য মাহবুবুর রহমান বাবুল তার বিরুদ্ধে কার্ড জমা রাখার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, তিনি কার্ড জমা রাখার এখতিয়ার রাখেন না। তবে সামাজিক দায়বদ্ধতা ও সাবেক জনপ্রতিনিধি হিসেবে চাল বিতরণের সময় উপস্থিত ছিলেন।
মোরেলগঞ্জ উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা দ্রব মণ্ডল বলেন, বনগ্রাম ইউনিয়নে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির দুজন ডিলারের মধ্যে একজন পদত্যাগ করেছেন। অন্যজন অনুপস্থিত থাকায় কর্মসূচি চলমান রাখতে উপকারভোগীদের স্বার্থে নীতিমালা ২০১৭-এর ৮:৩ অনুযায়ী কোনো ডিলার পদত্যাগ করলে বা অনুপস্থিত থাকলে পাশের কেন্দ্রের ডিলারকে দিয়ে সাময়িকভাবে খাদ্যশস্য বিতরণ করা যাবে। সেক্ষেত্রে বনগ্রাম ইউনিয়নে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার প্রশান্ত দাস অনুপস্থিত থাকায় তার পরিবর্তে হোগলাপাশার ডিলার মিন্টু শেখ এবং অনুপ কুমার কুণ্ডু পদত্যাগ করায় তার জায়গায় রামচন্দ্রপুরের আবু বকরকে অক্টোবর মাসের চালের ডিও দেওয়া হয়েছে। তবে কার্ড জমা রাখার কোনো নির্দেশনা ডিলার বা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দেওয়া হয়নি। ভুক্তভোগীদের লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্তসাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।