ধোবাউড়া সাব-রেজিস্ট্রি অফিস
ধোবাউড়া (ময়মনসিংহ) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ৩১ অক্টোবর ২০২৪ ১৮:৩৬ পিএম
আপডেট : ৩১ অক্টোবর ২০২৪ ১৯:০২ পিএম
ময়মনসিংহের ধোবাউড়া সাব-রেজিস্ট্রি অফিস যেন ঘুষের হাট। নানা অনিয়ম আর দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে এই অফিসটি। জমি দলিল করতে গিয়ে চরম হয়রানির শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। গুণতে হয় অতিরিক্ত টাকা। এতে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের প্রতি চরম ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।
দুদকের অভিযান এমনকি আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতেও বন্ধ হয়নি দুর্নীতি। দলিল প্রতি সরকারী ফি’র অতিরিক্ত সাড়ে তিন হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়। অফিস সহকারী অনুপম এর মাধ্যমে এই টাকা নেন সাব-রেজিষ্টার আজমেরী নির্জর। অনুপমের কাছে টাকা না দিলে দলিল রেজিষ্ট্রি করেন না তিনি। গামারীতলা ইউনিয়নের বাসিন্দা লেয়াকত আলী বলেন, তিনি একটি দলিল করতে গিয়ে হয়রানির শিকার হয়েছেন। সরকারী ফি ছাড়াও সাড়ে তিন হাজার টাকা ঘুষ দিয়ে দলিল করেছেন তিনি।এমন আরও অসংখ্য মানুষের অভিযোগ। সামান্য ত্রুটিতেও দলিল আটকে দেন সাব-রেজিষ্টার। ঘুষ দিলে ঠিকই তিনি দলিল সম্পাদন করেন। এদিকে অতিরিক্ত টাকা ঘুষ নিয়ে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে যাচ্ছেন অফিস সহকারী অনুপম।বিভিন্ন স্থানে নামে বেনামে সম্পদ কিনেছেন তিনি।
সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে দলিল সম্পাদন করতে আসা একাধিক দাতা গ্রহিতারা জানান,জমির কাগজে সামান্য বানানে একুট ভুল থাকলেই ঘুষ দিয়ে দলিল করতে হয়।নকল নবশদিরে কাছে গিয়ে চরম হয়রানি হচ্ছেন মানুষ। সরকারী ফি যেখানে সর্বোচ্চ এক হাজার টাকা(বড় দলিল) সেখানে টাকা নিচ্ছেন দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা।তল্লাশিতেও চলছে হয়রানি।শ্রেণি পরবর্তণ করে মোটা অংকের রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে।ঘুষ ছাড়া সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসের কোন কাগজই নড়েনা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক দলিল লেখক বলেন, এই বাংলাদেশের কোন সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে ঘুষ চলেনা কিন্তু ধোবাউড়ায় চলে।
এ ব্যাপারে সাব-রেজিষ্টার আজমেরী নির্জর বলেন,নকল নবিশদের বিষয়ে তিনি সবাইকে সর্তক করেছেন, আর দলিল করতে অতিরিক্ত টাকার বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য যে, বর্তমান সাব-রেজিষ্টার আজমেরী নির্জর এর পূর্বে রায়হান হাবিব থাকাকালীন দূর্নিতী দমন কমিশন দুদকে দুদকে লিখিত অভিযোগ করা হয়।অভিযোগ তদন্তে নেমে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। পরে সাধারণ মানুষকে হয়রানি এবং অতিরিক্ত টাকা আদায় বন্ধে অভিযুক্তদের সতর্ক করা হয়। বর্তমান সাব-রেজিষ্টার যোগদান করে দুদকের বিষয়টি অবগত থাকার পরেও বন্ধ হয়নি দূর্নিতী।