× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

দেশবরেণ্য ৬ গুণীজনকে মেয়র লিটনের সংবর্ধনা

রাজশাহী সংবাদদাতা

প্রকাশ : ২৫ নভেম্বর ২০২২ ১৭:১৪ পিএম

আপডেট : ২৬ নভেম্বর ২০২২ ১৩:৪২ পিএম

শুক্রবার রাজশাহীর নগর ভবনের গ্রিন প্লাজায় দেশের ছয় গুণীজনকে সংবর্ধনা দেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। ছবি : প্রবা

শুক্রবার রাজশাহীর নগর ভবনের গ্রিন প্লাজায় দেশের ছয় গুণীজনকে সংবর্ধনা দেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। ছবি : প্রবা

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের আয়োজনে দেশবরেণ্য ছয় গুণীজনকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। 

শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নগর ভবনে গ্রিন প্লাজায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে ছয় গুণীজনকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। পরে উত্তরীয় পরিয়ে তাদের হাতে ক্রেস্ট ও সংবর্ধনা স্মারক তুলে দেন। সংবর্ধনা স্মারকপত্রের মোড়ক উন্মোচন করেন অতিথিরা।

সংবর্ধিত গুণীজনেরা হলেনআইন কমিশনের চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক, আইন কমিশনের সদস্য বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীর, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ, লেখক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান, প্রখ্যাত সাংবাদিক, কলামিস্ট ও লেখক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবেদ খান এবং শিক্ষাবিদ, নাট্যকার ও লেখক অধ্যাপক রতন সিদ্দিকী। 

আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চিত্রশিল্পী বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাবুদ্দিন আহমেদ অনুপস্থিত থাকায় তার প্রতিনিধিকে উত্তরীয়, ক্রেস্ট ও সংবর্ধনা স্মারক দেওয়া হয়।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণে রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‌‘একসঙ্গে এতো গুণীজনকে সংবর্ধনা দেওয়ার সৌভাগ্য আমরা বেশি পাই না। দেশবরেণ্য গুণীজনেরা দেশের জন্য, জাতির জন্য, স্বাধীনতার মূল স্রোতকে ধরে রাখবার জন্য, সংবিধানকে সমুন্নত রাখবার জন্যে যা যা করেছেন, সেই ঋণ শোধ করা সম্ভব নয়। তারা তাদের কর্মের মাধ্যমে আমাদের মাঝে বেঁচে থাকবেন।’

তিনি বলেন, ‘১৯৭৪ সালে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সাতটি নৌরুট নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সমঝোতা চুক্তি হয়। ওই সাতটি নৌরুটের মধ্যে ভারতের মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ান থেকে রাজশাহীর গোদাগাড়ী হয়ে রূপপুর ও পাকশী দিয়ে আরিচা হয়ে ঢাকা পর্যন্ত একটি নৌরুট রয়েছে। এই রুট চালু করে সারা বছর যদি পদ্মায় নাব্য রাখা যায়, তবে উভয় দেশ লাভবান হবে। নানারকম পণ্য আনা-নেওয়া করা যাবে। পণ্যমুখর হয়ে উঠবে রাজশাহী বন্দর।’

লিটন বলেন, ‘বিশেষ করে ভারত থেকে আমরা প্রতি বছর কোটি কোটি টন পাথর আমদানি করি। এই পাথর দিয়ে আমরা রাস্তাঘাট, ব্রিজ, কালভার্ট নির্মাণ করি। ভারতের পাকুর ব্যান্ডের পাথর আমরা আমদানি করি। এই পাথর আমাদের রাজশাহীর বর্ডার থেকে খুব বেশি দূরে নয়। ভারতের ধুলিয়ান থেকে বিহারের পাকুর খুব বেশি দূরে নয়। এই পাথর যদি আমরা বার্জে করে নদীপথে আনতে পারি রাজশাহীতে, খুব সহজে তা ঢাকা পর্যন্ত বার্জে করে পৌঁছে দেওয়া যাবে।’ 

তিনি বলেন, ‌‘এতে করে আমাদের আমদানি ব্যয় ও উৎপাদন খরচ কমবে। এই কাজটি করা খুবই সহজ। সামান্য কিছু স্থানে পদ্মা নদীর ড্রেজিং প্রয়োজন। আপাতত শুধু একটি কাস্টমস হাউজ এবং একটি জেটি করলেই এই বন্দরটি চালু করা সম্ভব।’

কৃষিভিত্তিক অর্থনীতির ওপর জোর দিয়ে রাসিক মেয়র বলেন, ‘রাজশাহী কৃষিপ্রধান অঞ্চল। এখানে কৃষিপণ্যনির্ভর শিল্প-কারখানা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। একটি পূর্ণাঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এখানে হওয়া খুবই দরকার। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় হলে কৃষিনির্ভর রজশাহীতে এ বিষয়ে রিসার্চ হবে, যা কৃষিতে উচ্চ ফলনশীল জাতের বীজ উদ্ভাবনে ভূমিকা রাখবে। কৃষির মাধ্যমে এই অঞ্চলের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করা সম্ভব হবে।’

অনুষ্ঠান মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার, রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক, বাংলাদেশ শিশু একাডেমির মহাপরিচালক আনজীর লিটন, সাংবাদিক রাশেদ চৌধুরীসহ অনেকে।

অনুষ্ঠানে সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক বলেন, ‘ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তের আখরে লেখা আমাদের সংবিধান। সংবিধান নিয়ে যেভাবে কাটাছেঁড়া করা হয়েছে, তা কষ্টের। আপনারা খেয়াল রাখবেন, এই সংবিধানটা যেন আমরা আমাদের বক্ষে ধারণ করি, এটাকে প্রটেক্ট করি।’

তিনি বলেন, ‘রাজশাহীতে ২০১৫ সালে একবার এসেছিলাম। এবার এসে দেখছি আমূল পরিবর্তন। রাজশাহীর দৃশ্যমান এই উন্নয়ন প্রমাণ করে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান বলেন, ‘রাজশাহী সবুজে বিবর্তিত। নিজ চোখে দেখে যেতে পারলাম কী করে একটি নগর জীবন্ত ও সজীব হয়ে উঠেছে। পুরো দেশ ঘুরে দেখুনএমন পরিচ্ছন্ন ও সবুজ নগরী গড়ে তুলতে পারছি না। রাজশাহী সবুজ ও গণমুখী নগর হিসেবে গড়ে উঠছে। জীবন আর শিক্ষা কখনও আলাদা হতে পারে না।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষ আর কোনোদিন হবে না। কারণ মানুষের এখনও পণ্য ক্রয়ের সক্ষমতা রয়েছে। গ্রামের কৃষি শ্রমিকরা এখন প্রতিদিন ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা আয় করেন। দুর্ভিক্ষ শুধু উৎপাদনহীনতার জন্য হয় না, মানসিকতার জন্যও দুর্ভিক্ষ হয়। সবার আগে মানসিকতার ইতিবাচক পরিবর্তন প্রয়োজন।’

প্রখ্যাত সাংবাদিক আবেদ খান বলেন, ‘রাজশাহীর প্রতি পদে পদে ইতিহাস কথা বলে। রাজশাহীর গম্ভীরা দেশের সংস্কৃতির অঙ্গনে আলাদা মাত্রা এনে দিয়েছে। যতবার এই রাজশাহীতে এসেছি, এই শহরের প্রতি ভালোবাসা ততই বেড়েছে। রাজশাহী প্রতিটি গুণী মানুষের জন্য নগর উদ্যান। রাজশাহী সবুজ চিরতরুণ নগরী।’

সংবর্ধনার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে অধ্যাপক রতন সিদ্দিকী বলেন, ‘১৮৯২-এর নভেম্বরে রাজশাহী শহরে এসেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। এরপর ১৯২৮ সালে আরেকবার আসেন। তিনি যতবার রাজশাহী এসেছেন, ততবার রাজশাহী দেখে মুগ্ধ হয়েছেন, তাঁর মন ভালো হয়েছে। রাজশাহীর ঐতিহ্য শিক্ষানগরীর ঐতিহ্য। অক্ষয়কুমার মৈত্রেয় রাজশাহীর সন্তান। ইতিহাস ঐতিহ্যের নগরী রাজশাহী। এই ভূমিতে জন্মেছেন রাজশাহীর কৃতিসন্তান শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান হেনা। রাজশাহীকে বিশ্বদরবারে তুলে ধরতে এই মানুষটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন।’

শনিবার (২৬ নভেম্বর) সকাল ১০টার দিকে বরেন্দ্র জাদুঘর পরিদর্শন, বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে রাজশাহী কলেজ পরিদর্শন, ১২টা ১৫ মিনিটে সরকারি রেশম কারখানা পরিদর্শন এবং দুপুর ১টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন করবেন সংবর্ধিত গুণীজনেরা। বিকালে বিমানযোগে তারা রাজশাহী ত্যাগ করবেন।


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা