মাদারীপুর প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৬ অক্টোবর ২০২৪ ২২:৫০ পিএম
আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২৪ ২২:৫২ পিএম
মাদারীপুরের কালকিনিতে দীপাবলি ও কালীপূজা উপলক্ষে প্রায় আড়াই শ বছরের ঐতিহ্যবাহী কুন্ডুবাড়ির মেলা বন্ধের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে প্রশাসন। প্রাথমিকভাবে ২ দিনের মেলার অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন।
এর আগে স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তির আপত্তির মুখে ঐতিহ্যবাহী এ মেলার আয়োজন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল উপজেলা প্রশাসন। ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা ও দাবির পর মুখে এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে এলো প্রশাসন।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) বিকেলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ইসলামী দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করে প্রাথমিকভাবে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সভায় মেলা নিয়ে আপত্তি জানানো পক্ষের লোকজনও উপস্থিত ছিলেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কালকিনি পৌরসভার প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উত্তম কুমার দাশ জানান, আগামীকাল হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন ও মেলার পক্ষের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
ইউএনও বলেন, ‘ডিসি স্যারের মিটিংয়ে ঐতিহ্যবাহী এই মেলা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। ২ দিনের জন্য মেলা চলার অনুমতি স্যার দেবেন।’
তবে মেলার ইজারা বাতিলের সিদ্ধান্ত বহালই থাকছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পৌরসভা থেকে যাকে ইজারা দেওয়া হয়েছে, সেটি বাতিলই থাকছে। যারা কালীপূজার আয়োজন করেছে, মেলাটি তারাই পরিচালনা করবে।’
রবিবার জেলা প্রশাসন থেকে মেলাটি পরিচালনাসহ সার্বিক সব বিষয় লিখিত জানানো হবে বলেও জানান ইউএনও উত্তম কুমার দাশ।
প্রতি বছর কালিপূজা ও দিপাবলী উপলক্ষে মাদারীপুরের কালকিনি পৌর এলাকার গোপালপুরের কুন্ডুবাড়িতে মেলার আয়োজন করা হয়।মাদারীপুরসহ বৃহত্তর ফরিদপুর, শরিয়তপুর, বরিশাল জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে হাজার হাজার লোকের ঢল নামে সপ্তাহব্যাপী এ মেলায়।
জানা যায়, প্রায় ২৫০ বছর ধরে ঐতিহ্যবাহী এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসলেও এবার স্থানীয় ১২ জন ব্যক্তি ৯টি কারণ উপস্থাপন করে মেলাটি বন্ধের দাবি জানান। পরে কালকিনি পৌরসভা ও উপজেলা প্রশাসন সভা করে গত বৃহস্পতিবার মেলা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়।
সিদ্ধান্তের ঘোষণা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তীব্র আলোচনা-সমালোচনার মুখে পড়ে প্রশাসন। পরে মেলাটি চালুর ব্যাপারে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতাকর্মীরা জেলা প্রশাসক মোছা. ইয়াসমিন আক্তারের কাছে জানান। এরপর জেলা প্রশাসক নিজ কার্যালয়ে মেলার বিপক্ষের লোকজনসহ রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে জরুরি সভার আয়োজন করেন। সভায় কালীপূজার পাশাপাশি মেলাটি দুই দিনের জন্য পরিচালনা করার ব্যাপারে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কাল রবিবার হিন্দু সম্প্রদায়ের সঙ্গে কথা বলে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত নেওয়া হবে।