খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৬ অক্টোবর ২০২৪ ১৭:৫১ পিএম
ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে সৃষ্ট বৃষ্টি ও ঝড়ো বাতাসে শস্যভান্ডারখ্যাত উত্তরের জেলা দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় রোপা আমনের ধানগাছ নুয়ে পড়েছে। পাকা ধান কেটে ঘরে তোলার সময়ে ধানগাছ নুয়ে পড়ায় ক্ষতির শঙ্কায় কৃষক। এ ছাড়া ক্ষতির মুখে পড়েছে আলু, ধনেপাতাসহ শীতকালীন আগাম শাকসবজি ও বিভিন্ন রবিশস্য।
শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ফসলি মাঠ ঘুরে দেখা যায়, গত বুধবার বিকাল থেকে বৃষ্টি ও ঝড়ো বাতাসের কারণে অনেক ক্ষেতের পাকা ও আধা পাকা ধানগাছ মাটিতে নুয়ে পড়েছে। এ ছাড়া আগাম জাতের আলুসহ শীতকালীন সবজির ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অসময়ের এই বৃষ্টিতে বেশি ক্ষতি হয়েছে আমন ধান ও সবজিক্ষেত। কিছু জায়গায় ধানগাছের ক্ষতির পরিমাণ বেশি হওয়ায় কেউ কেউ ফলনের আশা ছেড়ে দিয়ে ধানগাছ গোখাদ্য হিসেবে কেটে নিয়ে যাচ্ছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে এই উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে মোট ১৩ হাজার ৭৬০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের রোপা আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয়; যার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৬৭ হাজার ১৭০ মেট্রিক টন। এ পর্যন্ত ১ হাজার ৩৮০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান কাটা হয়েছে। যার গড় ফলনের পরিমাণ ৬ দশমিক ৪৫ মেট্রিক টন।
দিনাজপুর আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, গতকাল দিনাজপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২১ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে সকাল ৯টা পর্যন্ত মোট বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৬ মিলিমিটার। আজও আকাশ মেঘলা থাকবে এবং জেলার কোথাও কোথাও হালকা বৃষ্টিপাত হতে পারে।
সহজপুর সেনপাড়া এলাকার কৃষক সুধীর সেন বলেন, ‘অসময়ের বৃষ্টিতে আমনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এবার দেড় বিঘা জমিতে আমন ধান রোপণ করেছি। পুরো ক্ষেত নুয়ে পড়েছে, ধানের শিষে যে দানা রয়েছে, তা এখনও শক্ত হয়নি। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।’
উপজেলার বালাপাড়া গ্রামের কৃষক লিটন ইসলাম বলেন, ‘আগের তুলনায় এখন ধান চাষে সেচ, পরিচর্যা, কীটনাশক ও সার বাবদ খরচ বেশি হয়। এতে লাভের পরিমাণ কমে গেছে। এখন ফসল ঘরে তোলার আগাম সময়ে এমন ঝড় চিন্তায় ফেলছে।’
খামারপাড়া ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শ ম জাহিদুল ইসলাম বলেন, এমন ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষেতের পরিচর্যায় করণীয় বিষয়ে আমরা মাঠে কাজ করছি। যেন কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত না হন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ইয়াসমিন আক্তার বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে উপজেলায় দেড়-দুই হেক্টর জমির ধান নুয়ে পড়েছে। তবে পুনরায় বৃষ্টি না হলে ধান বা অন্য ফসলের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তাই আতঙ্কিত না হয়ে প্রয়োজনে কৃষি বিভাগের পরামর্শ গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি।’