সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৪ অক্টোবর ২০২৪ ২০:১২ পিএম
আপডেট : ২৪ অক্টোবর ২০২৪ ২০:৩৭ পিএম
তিস্তা নদীতে বিলীন মানুষের বসতভিটা। প্রবা ফটো
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নে কয়েকটি স্থানে তিস্তা নদীর তীব্র ভাঙনে ‘৫ শতাধিক’ পরিবারের বসতভিটা, ফসলি জমি, রাস্তাঘাটসহ বিভিন্ন স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙন অব্যাহত থাকায় হুমকির মুখে পড়েছে ইউনিয়নের কানি-চরিতাবাড়ি, লখিয়ারপাড়া, পাড়াসাদুয়া, চর-মাদারীপাড়া, বোয়ালীর চরসহ বিস্তীর্ণ এলাকা।
স্থানীয়রা নদীভাঙন ও বন্যা থেকে রেহাই পেতে স্থায়ী সমাধানকল্পে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে তা দ্রুত বাস্তবায়ন করার দাবি জানিয়েছেন। পাশাপাশি পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রী, বসতঘর নির্মাণে সার্বিক সহযোগিতারও দাবি জানিয়েছেন তারা।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে কোনো আশ্রয়কেন্দ্র না থাকায় কেউ অন্য চরে, কেউ রাস্তার ধারে গৃহপালিত পশু-পাখি নিয়ে খোলা আকাশের নিচে, কেউবা তাঁবু টানিয়ে অনাহারে-অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছেন। অনেকেই আশ্রয় নিয়েছেন আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে।
এসব পরিবারের পক্ষে অনেকেই দাবি করে বলেন, তিস্তা নদীর বুকে বেশকিছু চর ভেসে উঠেছে। ওই চরগুলোর কারণে পানির স্রোত তাদের বসতভিটার দিক দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে তাদের বসতভিটা, আবাদি জমি, রাস্তা-ঘাট। পানির স্রোতধারায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী নদীবুকে জেগে ওঠা চরগুলো থেকে বালু তুলে বসবাসযোগ্য স্থান তৈরি করে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।
হরিপুর ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ মোজহারুল ইসলাম বলেন, হরিপুর ইউনিয়ন দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা নদী। নদীভাঙন, বন্যাকবলিত এ ইউনিয়নের মানুষজন মানবেতর জীবনযাপন করেন। অধিকাংশ মানুষেই রাজধানীসহ বিভিন্ন স্থানে গিয়ে শ্রমের বিনিময়ে নানা কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তাদের পক্ষে বন্যা ও নদীভাঙনের মোকাবিলা করা অসহনীয় আকার ধারণ করেছে।
তিনি বলেন, বন্যা ও ভাঙনকবলিত পরিবারগুলোর জন্য এ পর্যন্ত ৪ বারে ১২ টন চাল বরাদ্দ পেয়ে তা বিতরণ করা হয়েছে। কিন্তু তা চাহিদার তুলনায় অপর্যাপ্ত। বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা জিইউকে দুর্গত মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছে। জিইউকে এসব মানুষের জন্য যা করেছে তা ভোলার মতো নয়; নিঃসন্দেহেই প্রশংসনীয়।
তিনি আরও বলেন, ভাঙনকবলিত পরিবারগুলোর তালিকা প্রস্তুত হয়েছে। ইতঃপূর্বে উপজেলা প্রশাসনের কাছে তালিকা জমা দেওয়া হয়েছে। এ সংখ্যা আরও বাড়ছে। ভাঙন অব্যাহত থাকায় স্থির সংখ্যা বলা যাচ্ছে না। তবে বাস্তুচ্যুত পরিবারের সংখ্যা প্রায় ৫ শতাধিক হবে। এসব পরিবারের লোকজন বর্তমানে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ইতঃপূর্বে ভাঙনকবলিত ২৮২ জনের তালিকা এসেছে। ভাঙন অব্যাহত থাকায় বর্তমানে এ সংখ্যা বেড়ে যেতে পারে। এ সব পরিবারের জন্য ঘরবাড়ি নির্মাণে টিনের বরাদ্দ চেয়ে তালিকা পাঠানো হয়নি। তবে, তালিকা পেলে উচ্চ পর্যায়ে পাঠানো হবে। ২৮২ পরিবারের জন্য ত্রাণ হিসেবে বিশেষ ভিজিএফ (১০ কেজি করে চাল) প্রদান করা হয়েছে।