× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

মাধবপুর সীমান্ত

অনুপ্রবেশ ও পাচারে সক্রিয় সিন্ডিকেট

মহিউদ্দিন আহমেদ, মাধবপুর (হবিগঞ্জ)

প্রকাশ : ২৪ অক্টোবর ২০২৪ ১৮:০০ পিএম

অনুপ্রবেশ ও পাচারে সক্রিয় সিন্ডিকেট

হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে প্রায় প্রতিদিনই অনুপ্রবেশ, মাদকসহ বিভিন্ন অবৈধ মালামাল পাচার হচ্ছে। গত ১৫ দিনে ৯ কোটি টাকার ভারতীয় বিভিন্ন পণ্য উদ্ধার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এ ছাড়া অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে আটক করা হয়েছে ৪০ জনকে। এসব কাজের সঙ্গে দুই দেশেরই স্থানীয় কয়েকটি চক্র জড়িত বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। বিজিবি বলছে, পাচার ও অনুপ্রবেশ ঠেকাতে টহল জোরদার করা হয়ছে। আর চিহ্নিত পাচারকারীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান বলে জানায় পুলিশ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাধবপুর সীমান্তে বিজিবির সরাইল ২৫ ব্যাটালিয়নের অধীনে হরষপুর, ধর্মঘর ও বড়জ্বালা বিজিবি ক্যাম্প রয়েছে। আর হবিগঞ্জ ৫৫ ব্যাটালিয়নের অধীনে রয়েছে নয়নপুর, মনতলা, রাজেন্দ্রপুর ও তেলিয়াপাড়া বিজিবি ক্যাম্প। এ ছাড়া সীমান্ত এলাকার হরষপুর তেলিয়াপাড়া, মনতলা ও কাশিমনগরÑ এ তিনটি পুলিশ ফাঁড়ি রয়েছে। সীমান্ত এলাকায় এসব ক্যাম্পের বিজিবি ও পুলিশ সদস্যদের চোখ ফাঁকি দিয়েই চলছে অনুপ্রবেশ ও পাচার।

বিজিবির তথ্যানুযায়ী, অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে গত ১৮ অক্টোবর ছয়জন, ১৯ অক্টোবর ছয়জন ও ২০ অক্টোবর চারজনকে সন্তোসপুর সীমান্ত থেকে আটক করা হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন এলাকা থেকে আটক করা হয় আরও ২৪ জন। আটক ৪০ জনের মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছে। ৮ অক্টোবর সাড়ে ৪ কোটি টাকার ভারতীয় শাড়ি, ৩ অক্টোবর বালুভর্তি ট্রাকে সাড়ে ৩ কোটি জিরা, শাড়ি ও কসমেটিকস পণ্য, ১৬ অক্টোবর ২৫ লাখ টাকার জিরা ও ফল জব্দ করা হয়। এ ছাড়া প্রায়ই সীমান্ত এলাকায় গাঁজা, মদ, ফেনসিডিল জব্দসহ মাদক কারবারিদের আটক করা হয়।

সীমান্ত এলাকার একাধিক স্থানীয়র সঙ্গে এই প্রতিবেদকের কথা হয়েছে। তারা সবাই নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, মাধবপুরের ধর্মঘর, সন্তোসপুর, মালঞ্চপুর, শিয়ালহরি, কালিকাপুর, মোহনপুর, আলীনগর ও তেলিয়াপাড়া সীমান্ত এলাকায় সক্রিয় রয়েছে কয়েকটি মানব পাচারকারী ও মাদক ব্যবসায়ী চক্র। তারা জনপ্রতি ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা চুক্তিতে দেশের বিভিন্ন এলাকার সাধারণ মানুষকে বিপথগামী পথে ঠেলে দিচ্ছে। গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের পর জরুরি চিকিৎসাসেবা ছাড়া সব ধরনের ভিসা অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করেছে ভারত। মূলত এ সিদ্ধান্তের পর থেকেই উপজেলার বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশ সংখ্যা বেড়েছে। তারা সহজ পথ হিসেবে মাধবপুর সীমান্ত এলাকাকে বেছে নিচ্ছে।

ধর্মঘর এলাকার এক বাসন্দিা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলনে, ‘ইদানীং সীমান্ত এলাকায় অপরিচিত মানুষের আনাগোনা দেখা যাচ্ছে। তারা অল্প সময়ের মধ্যেই আবার অদৃশ্য হয়ে যায়। শুধু সাধারণ মানুষ নয়, সম্প্রতি সীমান্ত এলাকায় রাজনৈতিক ব্যক্তি ও প্রভাবশালীদের আনাগোনাও বাড়ছে। এতে নিরাপত্তা ঝুঁকি বেড়েছে স্থানীয়দের। বিশেষ করে গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকে বেড়েছে অনুপ্রবেশ। প্রতিদিনই ভারতে যাচ্ছে মানুষ, আর দেশে ঢুকছে মাদক।

স্থানীয়রা জানান, উপজেলার সোনাই নদ পার হয়ে সীমান্ত পিলার ১৯৯৪-৯৭-এর মধ্য দিয়ে প্রতিদিন ভারত থেকে লোক অনুপ্রবেশ করে। আবার বাংলাদেশ থেকেও অবৈধ পথে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে প্রবেশ করছে। মানব, মাদক ও পণ্য পাচারের সঙ্গে উভয় দেশের কয়েকটি সিন্ডিকেট জড়িত। তাদের মধ্যে মালঞ্চপুর গ্রামের কামাল মিয়া, সন্তোসপুরের হরমুজ মিয়া, মনপুরের ওয়াহেদ মিয়া, জয়নগরের সুহেল মিয়া, দেবনগরের তৈয়ব আলী উল্লেখযোগ্য।

দুদেশের সীমান্ত পার হতে অনুপ্রবেশকারীরা এলাকার সিন্ডিকেট বা দালালদের বাড়িতে অবস্থান করে। পরে সময় সুযোগ বুঝে তাদের পাচার করা হয়। ভারত থেকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকারীদের ইজিবাইক, মোটরসাইকেল, সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে ধর্মঘর বাজার হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর কিংবা ধর্মঘর-মাধবপুর হয়ে যার যার গন্তব্য পাঠিয়ে দেওয়া হয়। আবার যারা ভারতে অনুপ্রবেশ করে তাদের সেখানকার দালালরা নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছে দেয়।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে কামাল মিয়া, হরমুজ মিয়া, ওয়াহেদ মিয়া, সুহেল মিয়া ও তৈয়ব আলীর মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও রিসিভ করেননি। পরে তাদের নম্বরে খুদেবার্তা পাঠিয়েও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

বিজিবি সরাইল ২৫ ব্যাটালিয়নের ধর্মঘর বিওপি কোম্পানি কমান্ডার মাসুদুর রহমান বলেন, ‘অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সীমান্তে টহল জোরদার করা হয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে ১৪ পাচারকারীর নাম লিস্ট করেছি। তবে পাচারে শিশুদের ব্যবহার করায় আইনি ব্যবস্থা নিতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।’

২৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল ফারাহ মোহাম্মদ ইমতিয়াজ বলনে, ‘বিজিবিতে জনবল সংকট রয়েছে। যেহেতু অবৈধ অনুপ্রবেশ বেড়েছে, তাই সীমান্তে আগের চেয়ে দ্বিগুণ জনবল বাড়ানো হয়েছে।’

মাধবপুর থানার ওসি আবদুল্লা আল মামুন বলেন, শুনেছি পাচরকারী ১৪ জনের একটি তালিকা বিজিবি করেছে। তালিকাটি হাতে পেলে তাদের বিরেুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা