× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সেতু আছে নেই সংযোগ সড়ক, ভোগান্তিতে এলাকাবাসী

হিরু আলম, পেকুয়া (কক্সবাজার)

প্রকাশ : ২৪ অক্টোবর ২০২৪ ১৫:১৯ পিএম

আপডেট : ২৪ অক্টোবর ২০২৪ ১৬:৩৭ পিএম

কক্সবাজারের পেকুয়ায় নড়বড়ে কাঠের সেতু দিয়ে খাল পার হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। পাশেই অব্যবহৃত নবনির্মিত সেতু। প্রবা ফটো

কক্সবাজারের পেকুয়ায় নড়বড়ে কাঠের সেতু দিয়ে খাল পার হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। পাশেই অব্যবহৃত নবনির্মিত সেতু। প্রবা ফটো

কক্সবাজারের পেকুয়া, শিলখালী এবং বারবাকিয়া ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ সড়কটিতে যান চলাচল বন্ধ প্রায় একহাজার দিন পেরিয়েছে। সমস্যা শুধুমাত্র একটি সংযোগ সেতু। দীর্ঘদিন সংস্কারের নামে জোড়াতালি দিয়ে কাজ চালানোর পরে ২০২২-২৩ অর্থবছরে এই সংযোগ সেতুর জন্য এক কোটি টাকা বাজেট বরাদ্ধ দেয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এবং কাজের আদেশ পায় চট্টগ্রামের নিপা এন্টারপ্রাইজ। দীর্ঘ সময় পর দৃশ্যমান হয়েছে সেতুটি কিন্তু নির্মাণ করা হয়নি সেতুর সঙ্গে সড়কের সংযোগ অংশ।

সরেজমিনে দেখা যায়, এই সড়কটি অর্ধ লাখ মানুষের প্রতিদিনের যাতায়াতের সহজ মাধ্যম। জেলার স্বনামধন্য বিদ্যাপীঠ শিলখালী উচ্চ বিদ্যালয় সহ প্রায় ১০ থেকে ১৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের এ সড়কের বিকল্প যাতায়াত উপায় নেই। যান চলাচল বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের কাঠের পাটাতন দিয়ে তৈরি একটি ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো দিয়ে পার হয়ে বিদ্যালয়ে যেতে হয়। সামান্য বৃষ্টিতে বা পাহাড়ি ঢলে নদীর পানির  উচ্চতা বাড়লে প্রতিনিয়তই ঘটে দুর্ঘটনা। এ যেনো কোমলমতি শিক্ষার্থীদের জন্য মরণফাঁদ। 

স্থানীয়রা জানায়, প্রায় ১৫ হাজার বাসিন্দার যাতায়াতের একমাত্র পথ এটি। বিগত কিছু দিনে বেশ কয়েকজন মুমূর্ষু রোগীকে হাসপাতালে নেওয়া সম্ভব হয়নি শুধুমাত্র সড়কে যান চলাচলের সীমাবদ্ধতায়। এছাড়া প্রতিনিয়ত এই জনপদের সন্তান-সম্ভবা মহিলাদের প্রসব বেদনা নিয়ে কষ্ট পেতে হয় এবং যাতায়াত সমস্যার কারণে উপযুক্ত চিকিৎসার অভাবে করুণ পরিণতি মেনে নিতে হয়েছে অনেককে। মাছ বা সবজি লম্বা পথ পেরিয়ে স্থানীয়  বাজারে আসতে দাম বেড়ে যায় কেজি প্রতি ২০ থেকে ৩০ টাকা। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত ফসলও উপজেলা সদর বা শহরমুখী রপ্তানির সুযোগ না থাকায় অনেক ফসল নষ্ট হচ্ছে যার প্রভাব পড়ছে স্থানীয় অর্থনীতিতে।

ঠিকাদার প্রতিষ্টান নিপা এন্টারপ্রাইজের বিরুদ্ধে স্থানীদের অভিযোগ ছিল নির্মাণের শুরু থেকে। কম টেকসই কাঁচামাল ব্যবহার করার বিষয়ে অভিযোগ দেয়া হলে বেশ কয়েকবার নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখে তারা। কিন্তু সেতুটি দৃশ্যমান হওয়ার পরে, সড়কের সঙ্গে সংযোগ দেওয়ার জন্য দুই ফুট মাটি ভরাট করে যান চলাচলের উপযোগী করে না দিয়েই তারা উধাও হয়ে যায়। ২০ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি সেতুর জন্য এক কোটি টাকা বরাদ্দ হলেও কেন দিনের পর দিন দুর্ভোগের শেষ হচ্ছে না এমন প্রশ্ন স্থানীয়দের। 

বিদ্যালয় ছুটির প্রাক্কালে শিলখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর জানায়, ‘আমি কোনোভাবে বৃষ্টি না হলে পার হতে পারি কিন্তু আমার ছোট বোন খুব ভয় পায় এবং একবার দুর্ঘটনারও স্বীকার হয়। অনেক বন্ধুরা সাতাঁর জানে না, তাদের হাত ধরে পার করে দিতে হয়।

বিষয়টি নিয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ইব্রাহিম বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের সীমাহীন কষ্ট এবং পারাপারের ঝুঁকির বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে হলেও অতি সত্ত্বর এই সড়কটি চালু করা জরুরি।’

শিলখালী ইউনিয়নের বাসিন্দা ও ব্যাংক কর্মকর্তা আশফাকুল হক মিথুন অভিযোগ করে বলেন, ‘আজকে ২ বছরের অধিক সময় ধরে পুরনো সেতুটি ভেঙে নতুন সেতুর কাজ চলছে কিন্তু শেষ হয়না। সর্বশেষ প্রায় ৬ মাস ধরে সেতুর কাজ শেষ করে সংযোগ দেওয়া হচ্ছেনা। এরকম গুরুত্বপূর্ণ সড়কের সংযোগ সেতুটি এরকম অবহেলিত অবস্থায় পড়ে আছে, কিন্তু জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে প্রশাসন কারও কোন নজর নেই বা কোন তাড়া নেই। অথচ সাধারণ মানুষ দিনের পর দিন অসহনীয় কষ্ট ভোগ করে যাচ্ছেন।’

শিলখালী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কামাল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি উপজেলার প্রকৌশলী এবং   নির্বাহী কর্মকর্তাসহ প্রশাসনের অনেকের কাছে কোন সুরাহা না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। 

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর পেকুয়া উপজেলা কার্যালয়ের প্রকৌশলী আসিফ মাহমুদকে মোবাইলে বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বিষয়টির দ্রুত সমাধানের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে আশ্বাস দেন এবং ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে ইতোমধ্যে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে অবগত করেন। 

তিনি আরও বলেন, ‘বিষয়টি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরেও অভিযোগ আকারে প্রেরণ করা হয়েছে। বন্যা এবং সম-সাময়িক আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় কালক্ষেপণ হয়েছে।’ 

ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান নিপা এন্টারপ্রাইজের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে এ বিষয়ে তারা কোন বক্তব্য দিতে রাজি নয় বলে জানান। 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা