ফেনীর পরশুরাম
ফেনী প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৪ অক্টোবর ২০২৪ ১৪:২৬ পিএম
আপডেট : ২৪ অক্টোবর ২০২৪ ১৪:২৬ পিএম
ফেনীর পরশুরাম পৌরসভার দক্ষিণ কোলাপাড়া গ্রামের অনেক পরিবারই ভিটেমাটি হারানোর শঙ্কায় আছে। মঙ্গলবার তোলা। প্রবা ফটো
ফেনীর পরশুরামের মুহুরী ও কহুয়া নদীতে দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। এতে স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক বেড়েছে। ইতোমধ্যে বন্যায় মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বেড়িবাঁধের ৯৫টি স্থানে ভাঙনের ফলে বহু বসতি বিলীন হয়ে গেছে। এ ছাড়া পরশুরামের পূর্ব অনন্তপুর ও দক্ষিণ কোলাপাড়ায় নদীভাঙনে আরও বহু পরিবার ভিটেমাটি হারানোর আশঙ্কা করলেও পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কিছুই করছে না বলে অভিযোগ তাদের।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পরশুরাম বাজারে মুহুরী নদীর পূর্ব অনন্তপুর গ্রামে প্রায় ৪০টি পরিবারের বসবাস। এখানে কহুয়া নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে মুহুরী নদীতে মিশেছে। গত কয়েক বছরে ভাঙনে এখানকার প্রায় ৫০ একর জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক বন্যায় অন্তত আটটি পরিবার ভিটেমাটি হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। নূর মিয়া এসব ভিটেমাটি হারানোদের মধ্যে একজন। তিনি বলেন, ঘরবাড়ি, জমি নদীতে গেছে। গত দুই মাস ধরে পরিবার নিয়ে ভাড়া বাসায় আছি। আয় নেই। ছয় সদস্যের পরিবার নিয়ে কষ্টে আছি।
দক্ষিণ কাউতলী মৌজা ম্যাপে দেখা গেছে, ইতোমধ্যে মুহুরী নদীর বেড়িবাঁধের পাশে বিভিন্ন দাগের জমি মুহুরী নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। জমি, বাগান হারিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েছে স্থানীয় মানুষ। প্রতিদিন ভাঙনের তীব্রতা বাড়ায় ভিটেমাটি হারানোর আশঙ্কায় নির্ঘুম রাত কাটছে তাদের।
স্থানীয় ব্যবসায়ী মোশারফ হোসেন বলেন, ‘গত কয়েক বছরে আমাদের দক্ষিণ কাউতলী মৌজার আট-নয় কানি জমি নদীগর্ভে চলে গেছে। এপারে ভেঙে ওপারে চর যে জেগে উঠেছে, সেগুলো আমাদের জমি।’ নদীপারের আরেক বাসিন্দা কাজী নুরুল করিম বলেন, ‘যেকোনো সময় বাড়ি-জমি নদীতে ভেঙে পড়তে পারে। আমরা খুব আতঙ্কে আছি।’
এদিকে, কহুয়া নদীর পাশে দক্ষিণ কোলাপাড়া গ্রামের প্রায় ৫০টি পরিবার ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে। বন্যায় নদীর পাড় ভেঙে কয়েকটি পরিবারের জমি, টিউবওয়েল ও টয়লেট নদীতে পড়েছে। কহুয়া নদীর পাশে জসিম উদ্দিনের বাড়ি। তিনি বলেন, বাড়ির যে জায়গাটুকু বাকি আছে, তাও যেকোনো সময় নদীতে ভেঙে পড়তে পারে।
দক্ষিণ কোলাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মৌলভী মো. নূরুল্লাহ জানান, কহুয়া নদীর পাশে যদি দ্রুত ব্লক বসানো না হয়, তাহলে পরশুরাম থানা, স্কুলসহ বিভিন্ন স্থাপনা ও বাজার ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
জানতে চাইলে ফেনীস্থ পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ রাশেদ শাহরিয়ার বলেন, নদীভাঙনের বিষয়টি আমাদের কেউ জানায়নি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের একজন সেকশন অফিসারকে দায়িত্ব দিচ্ছি। সংশ্লিষ্ট ভাঙন এলাকা পরিদর্শনের পর প্রতিবেদন পেলে ভাঙনরোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।