আশুলিয়া (ঢাকা) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৩ অক্টোবর ২০২৪ ১৫:৪৪ পিএম
আপডেট : ২৩ অক্টোবর ২০২৪ ১৬:১৮ পিএম
আহত শ্রমিক। প্রবা ফটো
ঢাকার শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় পোশাকশ্রমিক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় তিনজন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত পাঁচ শ্রমিক আহত হয়েছে। আহত শ্রমিকদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে আশুলিয়ার নরসিংহপুর-কাশিমপুর সড়কের বাংলাবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মো. সারোয়ার আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
আহত শ্রমিকরা হলেন, হালিমা খাতুন, ববিতা আক্তার, মোর্শেদা খাতুন ও চম্পা খাতুন। অন্য একজনের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। এদের মধ্যে হালিমা খাতুন সুসুকা গার্মেন্টসের শ্রমিক, বাকিরা জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশনের শ্রমিক বলে জানা গেছে।
শ্রমিকরা জানায়, জেনারেশন নেক্সট পোশাক কারখানার শ্রমিকদের তিন মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। বকেয়া বেতন ও বন্ধ কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে কারখানাটির সামনে একত্রিত হন শ্রমিকরা। পরে তারা পাশের সিগমা অ্যাপারেলস, ডি-সান, সুসুকা, জি-ম্যাক্স ও শিনশিন পোশাক কারখানায় গিয়ে শ্রমিকদের বের করে আন্দোলনে নামান।
এরপর শ্রমিকরা সড়ক অবরোধের চেষ্টা করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বাধা দেন। এতে শ্রমিকরা ক্ষিপ্ত হয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন।
আশুলিয়া নারী ও শিশু হাসপাতালের সহকারী ব্যবস্থাপক এইচ এম আসাফুদ্দৌলা রিজভী বলেন, মোট চারজনকে আমরা আহত অবস্থায় আমাদের হাসপাতালে পেয়েছি, এর মধ্যে ৩ জন গুলিবিদ্ধ বলে নিশ্চিত হয়েছি। বাকি জনের তলপেটে ইনজুরি রয়েছে, সেটা গুলির ইনজুরি কি না আমরা নিশ্চিত না।
আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর এক কর্মকর্তা বলেন, বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে কয়েক দিন যাবৎ জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশনের শ্রমিকরা আন্দোলন করে আসছেন। আজ সকালে কারখানাটির শ্রমিকরা অন্যান্য কারখানায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে শ্রমিকদের বের করে আনছিলেন। এ সময় ভয় দিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করেছে। গুলিবিদ্ধ হওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি, পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক আছে।
আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মো. সারোয়ার আলম বলেন, গুলির কোনো ঘটনা ঘটেনি। শ্রমিকরা যখন পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে, তখন সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়।
পুলিশ গুলি করেনি দাবি করে তিনি আরও বলেন, যেটা হতে পারে, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হলে এটা যেখানে পড়ে, সেখানে ইটের কণা বা টুকরা থাকলে তা ছিটে গিয়ে স্প্লিন্টারের মতো আঘাত করতে পারে। তেমন হয়তো কারও হাতে বা কোথাও লেগেছে, যেটাকে গুলি বলা হচ্ছে। নিশ্চিতভাবে পুলিশ কোনো গুলি করেনি।
প্রসঙ্গত, জেনারেশন নেক্সট পোশাক কারখানার শ্রমিকরা গত সোমবার (২১ অক্টোবর) সকাল ৯টা থেকে মঙ্গলবার বিকাল পৌনে ৫টা পর্যন্ত নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের বাইপাইল মোড় এলাকা অবরোধ করে রাখেন। পরে জলকামানের মুখে সড়ক ছাড়তে বাধ্য হন তারা। সড়ক ছেড়ে যাওয়ার সময় অন্তত অর্ধশতাধিক গাড়ি ভাঙচুর করেন বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা।