পাবনা টাউন গার্লস স্কুল
পাবনা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২২ অক্টোবর ২০২৪ ২১:১৯ পিএম
আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২৪ ২২:০৮ পিএম
যৌন হয়রানি ও বিদ্যালয়ের
অর্থ লুটপাট, ক্ষমতার অপব্যবহারসহ নানা অভিযোগে সাময়িক বহিষ্কৃত পাবনা শহরের টাউন গার্লস
হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক রবিউল করিম ফিরোজের অফিসকক্ষ থেকে অনৈতিক কাজের বিভিন্ন
সরঞ্জামসহ মাদক উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় ফুঁসে উঠেছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকরা।
স্থায়ী বহিষ্কার ও শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে তারা।
মঙ্গলবার
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিদ্যালয়ের সামনে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। এর আগে গত সোমবার
প্রধান শিক্ষকের কক্ষের তালা ভেঙে অনৈতিক কাজের বিভিন্ন সরঞ্জামসহ মাদক উদ্ধার করে
শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা
অভিযোগ করেন, এই স্যার (রবিউল করিম ফিরোজ) অনেক মেয়ের সঙ্গেই খারাপ কাজ করেছেন। অনেক
মেয়ের জীবন নষ্ট করেছেন। ক্ষমতার অপব্যবহার করে ভয়ভীতি দেখিয়ে খারাপ কাজ করার পরও তার
পক্ষে সাক্ষ্য দিতে বাধ্য করেছেন। অনেক মেয়েকে স্কুল ছেড়ে চলে যেতে হয়। অনেকের পরিবারকে
চাপ দিয়ে অল্প বয়সেই তাকে বিয়ে দিতে বাধ্য করেছেন। আমাদের শরীরে স্পর্শকাতর জায়গায়
টাচ করেন। মুখে তিনি বিভিন্ন সময় নানা কুরুচিসম্পন্ন কথা বলেন।
শিক্ষকরা বলেন,
প্রধান শিক্ষক রবিউল করিম ফিরোজের অফিস রুম থেকে মদসহ অনৈতিক কাজের সরঞ্জামাদি উদ্ধার
করা হয়েছে। ছাত্রীদের সঙ্গে ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপে কথোপকথনের অনেক স্কিনশর্ট আছে। যেগুলো
দেখলে গা শিউরে ওঠে। এই প্রধান শিক্ষকের খারাপ চরিত্রের কারণে অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের
স্কুলে পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছেন। আমাদের বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে গেছে।
তারা আরও বলেন,
রবিউল করিম ফিরোজ দুবলিয়া ফজিলাতুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক থাকাবস্থায়ও
যৌন হয়রানির অভিযোগে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হন। এরপর অর্থের বিনিময়ে শহরের সেলিম নাজির
উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। এই দুই বিদ্যালয়ে অনেক নাটকীয়তার
জন্ম দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় বিপুল পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে ২০১১
সালের ১৩ আগস্ট টাউন গার্লস হাইস্কুলে প্রধান শিক্ষক পদে যোগদান করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দুর্নীতিবাজ-চরিত্রহীন আখ্যা দিয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর সম্প্রতি
স্মারকলিপি ও লিখিত অভিযোগ দেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এরপর যৌননিপীড়ন, অর্থ
কেলেঙ্কারি ও বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় গত ১ অক্টোবর তাকে
সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। এর আগেও একাধিকবার সাময়িক বহিষ্কার হয়েছিলেন তিনি।
অভিযোগের বিষয়ে
জানতে রবিউল করিম ফিরোজের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন। বিদ্যালয়ের
ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও পাবনার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল মামুন
বলেন, যৌননিপীড়নের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। একটি তদন্ত কমিটি
গঠন করা হয়েছে। তারা প্রতিবেদন দিলেই পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।