× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

চট্টগ্রাম আদালতে বিচারকদের কর্মবিরতি, নেপথ্যে আইনজীবীদের জোর খাটানোর চেষ্টা

চট্টগ্রাম অফিস

প্রকাশ : ২২ অক্টোবর ২০২৪ ১৮:১৮ পিএম

আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২৪ ১৮:২৭ পিএম

চট্টগ্রামে মহানগর হাকিম আদালত। প্রবা ফটো

চট্টগ্রামে মহানগর হাকিম আদালত। প্রবা ফটো

চট্টগ্রামে একটি মামলার আবেদনের শুনানিতে আইনজীবীদের দুর্ব্যবহারের শিকার হয়ে এজলাস ত্যাগ করেছেন মহানগর হাকিম আদালতের একজন বিচারক। এর জের ধরে মহানগর হাকিম আদালতের সকল বিচারক এজলাস ত্যাগ করেন।

মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১১টার দিকে চট্টগ্রামের দ্বিতীয় মহানগর হাকিম মো. অলি উল্লাহর আদালতে এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, একটি মামলার আবেদনে বাদীকে মামলার আসামি ও বর্ণনার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে বাদী উত্তর দিতে পারছিলেন না। ওই সময় বাদীকে প্রশ্ন করা নিয়ে আইনজীবী বিরক্তি প্রকাশ করে, আদালতকে মামলাটি এফআইআর হিসেবে গ্রহনের আদেশ দিতে বলেন বিচারককে। এটি নিয়ে বিচারক উষ্মা (ক্ষোভ) প্রকাশ করলে এজলাসের সামনে হট্টগোল শুরু করেন আইনজীবীরা। এরই প্রেক্ষিতে এজলাস ত্যাগ করেন ওই বিচারক।

‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত’ দাবি করে সোয়াইবুল হক চৌধুরী নামে একজন ১২৬ জন বাদীর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ২০০-২৫০ জনকে আসামি করে এই মামলার আবেদন করেন তিনি। চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পিপি মো. আশরাফ হোসেন চৌধুরী রাজ্জাক বাদীর আইনজীবী হিসেবে শুনানিতে অংশ নেন।

একাধিক প্রত্যক্ষদর্শীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মামলার আবেদনের শুনানিতে বিচারক বাদীর কাছে আসামিদের নাম জানতে চান। বাদী ৬-৭ জন আসামির নাম বললেও এরপর আর কারও নাম বলতে পারছিলেন না। এরপর আদালত বাদীর কাছে ঘটনার বর্ণনা জানতে চাইলে পিপি মো. আশরাফ হোসেন চৌধুরী রাজ্জাক আদালতকে উদ্দেশ্য করে বলেন, এগুলোর প্রয়োজন নেই। আপনি মামলাটা এফআইআর হিসেবে গ্রহনের আদেশ দিন। ওই সময় বিচারক এমন কথা নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘আমি কী আদেশ দিব তাতো আপনি বলে দিবেন না’ বলেই আদালত মামলাটি পিবিআই তদন্তের আদেশ দেন।

ওই সময় আদালতের সঙ্গে তর্কে জড়ান পিপি মো. আশরাফ হোসেন চৌধুরী রাজ্জাক। তিনি সহ তার সঙ্গে থাকা আইনজীবীরা আদালতকে উদ্দেশ্য করে বেশকিছু আপত্তিকর কথাবার্তা বলেন। এসবের পরিপ্রেক্ষিতে এজলাস ত্যাগ করেন বিচারক। কিছুক্ষণ পর মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের অধীন ১০ জন বিচারকের সবাই এজলাস ছেড়ে যান। দিনের বাকি সময় মহানগর হাকিম আদালতগুলোতে কার্যক্রম বন্ধ ছিল।

ঘটনার বিষয়ে আইনজীবী আশরাফ হোসেন চৌধুরী রাজ্জাক সাংবাদিকদের বলেন, ‘১৭ জুলাই মুরাদপুরের ঘটনায় আহত সোয়েব ইমরানের একটি মামলার আবেদন নিয়ে আমরা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট-২ এর আদালতে যাই। বাদীর পিঠে এখনও গুলির ক্ষত আছে। সব জানিয়ে মামলাটি যাতে থানায় এফআইআর হিসেবে নেওয়া হয়, সেই আদেশ চেয়েছিলাম। এরপর নিয়ম অনুসারে বাদী শপথ নিয়ে আদালতকে ১২-১৪ জন আসামির নাম বলেন। কিন্তু বিচারক বাদীর কাছে সকল আসামির নাম জানতে চান। তখন আমি বলি, এত নাম বলা সময়ের ব্যাপার। ভিডিও ফুটেজ দেখে আসামিদের নাম দেওয়া হয়েছে। সব নাম তো আসামি বলতে পারবে না। এরপর আবারও আদেশ চাই। এরপর বিচারক বলেন, ‘আমার কাজ আমাকে করতে দেন।’ পরে তিনি মামলার আবেদনটি তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে আদেশ দেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘ এ সময় তিনি (বিচারক) বলেন ‘আমার কোর্টে জোর খাটানোর চেষ্টা করবেন না।’ উনার এই কমেন্ট খুবই লজ্জাজনক। বারের সেক্রেটারি হিসেবে আমি ইনসাল্ট (লজ্জা) ফিল করেছি। সংশ্লিষ্ট আদালতের বিচারককে বদলি করার দাবিতে আইনজীবীরা আদালত প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ করেছেন। 

মামলায় যা আছে

নিজেকে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী উল্লেখ করে মামলার আবেদনে সোয়াইবুল লিখেছেন, ‘বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়ে ১৭ জুলাই রাত ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে প্রথম ২০ জনের নেতৃত্বে এজহারভুক্ত বাকি আসামি ও অজ্ঞাতনামা ২০০-২৫০ জনের দ্বারা তিনি ও অন্যারা হামলার শিকার হন। এ সময় তাদের ছোঁড়া গুলিতে ঘাড়ে, পিঠে, দুই হাত ও পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনি মাটিয়ে লুটিয়ে পরেন। পরে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল নিয়ে যাওয়া হলেও সেখানে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত আরও ৯ জন লোক ও আহতের ভীরের কারণে চিকিৎসা সম্ভব না হওয়ায় তিনি আরেকটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।

কোন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছিলেন এমন প্রশ্নের জবাবে বাদী সোয়াইবুল হক চৌধুরী বলেন, ‘কোন হাসপাতালে নিয়েছিল আমার মনে নেই। আমি তখন আহত ছিলাম।’ সুস্থ হওয়ার পর ওই হাসপাতালের নাম জানতে পেরেছিলেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ওই হাসপাতাল থেকে আমাকে কোন সার্টিফিকেট দেয়নি। নামও বলতে পারবো না আমি।‘ মঙ্গলবার শুনানিতে আদালতে কী হয়েছিল জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আদালত আসামিদের নাম জিজ্ঞেসা করেছে। আমি ২০ জন আসামির নাম বলেছি। আদালত মামলা গ্রহন করে পিবিআইকে তদন্ত করতে দিয়েছেন।’


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা