তিস্তা সড়ক সেতু
লালমনিরহাট প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২২ অক্টোবর ২০২৪ ১২:৩৩ পিএম
আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২৪ ১২:৫৫ পিএম
লালমনিরহাট-রংপুর মহাসড়কের তিস্তা সড়ক সেতুর টোল আদায়ের ইজারা দেওয়া নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। দরপত্রে অংশগ্রহণকারী দুজন ঠিকাদার এ অভিযোগ করেন।
লালমনিরহাট সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের তত্ত্বাবধানে তিস্তা সড়ক সেতুর টোল আদায়ে গত ৯ অক্টোবর দরপত্র আহ্বান করা হয়। ঠিকাদারি কাজের দরপত্র আহ্বান ও কার্যাদেশ প্রদান থেকে টোল আদায়ের ইজারাদার নিয়োগের নিয়ম কিছুটা আলাদা। তা হচ্ছে, যতবার পর্যন্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিযোগিতা থাকবে, যতক্ষণ পর্যন্ত সরকারের রাজস্ব আদায়ের হার বাড়ার সম্ভাবনা থাকবে, ততক্ষণ পর্যন্ত কাউকে ইজারার জন্য চূড়ান্ত করা যাবে না, পুনর্দরপত্র আহ্বান করতে পারবে কর্তৃপক্ষ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সেই নিয়ম অনুসারে ১৪তম বারের মতো গত ৯ অক্টোবর দরপত্র আহ্বান করা হয়। এবার মোট ১১ ঠিকাদার দরপত্র ক্রয় করেন। কিন্তু শাপলা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মোকছেদুর রহমান ‘দুর্বৃত্তদের’ বাধায় রংপুর কার্যালয়ে গিয়েও দরপত্র দাখিল করতে পারেননি। তার প্রতিষ্ঠানই সর্বোচ্চ ৩৫ কোটি টাকা দরদাতা ছিল। যারা দাখিল করতে পেরেছেন তাদের মধ্যে নুফা এন্টারপ্রাইজের ছিল সর্বোচ্চ ৩৩ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। সেক্ষেত্রে নিয়ম অনুযায়ী আবারও দরপত্র আহ্বান করার কথা। কিন্তু তা না করে নুফা এন্টারপ্রাইজকে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ইজারা দেওয়ার পাঁয়তারা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ।
তা ছাড়া ২০২১ সালে পরবর্তী তিন বছরের জন্য রেগনাম বিল্ডার্স-পেন্টা গ্লোবাল যৌথ প্রতিষ্ঠানকে প্রায় সাড়ে ৪৮ কোটি টাকায় দেওয়া হয়। সেদিক থেকেও এবার নুফা এন্টারপ্রাইজকে প্রায় পনেরো কোটি টাকা কমে দেওয়া হচ্ছে।
দরপত্রে অংশগ্রহণকারী মেসার্স রানা কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী দাউদ মিয়া বলেন, ‘‘আমি ৩৩ কোটি ৫০ লাখ টাকার দরপত্র দাখিল করেছি। কিন্তু টেন্ডার ওপেনের সময় কৌশলে অন্য প্রতিষ্ঠানের ‘কোটেশনদাতার দর উদ্ধৃতি ফরম’ পরিবর্তন করে ৩৩ কোটি ৫৩ লাখ টাকা দেখানো হয়েছে। যাতে তাদের ইজারা দেওয়া যায়। যার প্রমাণ আমার কাছে আছে।’’
শাপলা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মোকছেদুর রহমান তার দরপত্রটি গ্রহণের জন্য সওজের রংপুর সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী বরাবর একটি আবেদন করেন। আবেদনে উল্লেখ করেন, ‘দুর্বৃত্তরা আমার প্রতিনিধিকে রংপুর সার্কেল অফিসে সময়মতো দরপত্র দাখিল করতে দেয়নি। অতএব আমার দরপত্রটি গ্রহণ করা হোক।’
মোখছেদুর রহমানের প্রতিনিধি মো. মাসুদ বলেন, ‘আমার পথরোধ করে কতিপয় যুবক মোটরসাইকেলের চাবি নিয়ে নেয়। আমাকে তাদের সঙ্গে থাকতে বলে। পরে দরপত্র দাখিলের সময় শেষ হয়ে গেলে আমাকে ছেড়ে দেয়। সরকারের রাজস্ব আদায় বৃদ্ধির লক্ষ্যে পুনরায় দরপত্র আহ্বান করা হোক।’
সওজ লালমনিরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য সরকারের রাজস্ব আদায় বাড়ানো। বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বলেছি। তারা যে সিদ্ধান্ত দেবে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সওজ রংপুর সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আব্দুর রহিম বলেন, ‘পুনরায় দরপত্র আহ্বান করা হবে কি না- বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্বাহী প্রকৌশলীর অধীন। এ ব্যাপারে আমি কোনো মন্তব্য করব না।’