লক্ষ্মীপুর প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৪ অক্টোবর ২০২৪ ১২:২৭ পিএম
আপডেট : ১৪ অক্টোবর ২০২৪ ১২:৫১ পিএম
আটক রাজু ও বাবলু। প্রবা ফটো
লক্ষ্মীপুরে পারিবারিক কলহের জেরে ফাতেমা বেগম নামে এক গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তার স্বামী রাজু ও ভাশুর বাবলুকে বেঁধে রাখেন ভিকটিমের পরিবারের লোকজন।
সোমবার (১৪ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে সদর উপজেলার মান্দারী ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মোহাম্মদনগর গ্রামের ভিকটিমের বাবার বাড়ি থেকে অভিযুক্ত দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে পুলিশ। এর আগে ভোরে ওই গ্রামের একটি পুকুরে ফাতেমার মরদেহ ভাসতে দেখা যায়।
চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কায়সার হামিদ প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ফাতেমা মোহাম্মদনগর গ্রামের মৃত সাইফুল্লাহ মওলানার মেয়ে। তাদের সংসারে রুবি নামে চার বছরের এক কন্যাসন্তান রয়েছে।
অভিযুক্ত রাজু ও বাবলু একই ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মাইজের বাড়ির মোসলেহ উদ্দিনের ছেলে। রাজু পেশায় সিএনজি অটোরিকশা চালক। তার আরও এক স্ত্রী রয়েছেন। ফাতেমা প্রথম স্ত্রী।
স্বজনদের অভিযোগ, যৌতুকের জন্য নির্যাতন করেই ফাতেমাকে হত্যা করা হয়ছে। আগেও তাকে ব্যাপক নির্যাতন করা হয়েছে।
ফাতেমার বড় বোন রাবেয়া আক্তার বলেন, ‘পাঁচ বছর আগে আমার বোনের সঙ্গে রাজুর বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমার বোনকে জ্বালাতন করত, যৌতুক চাইত। আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে জমি বিক্রি করে তাকে বিদেশ পাঠানো হয়। এক মাসের মাথায় চলে এসে আমার বোনকে নির্যাতন করে।’
ফাতেমার বড় ভাই মো. আবদুল্লাহ বলেন, ‘প্রায় ১৫ দিন থেকে আমার বোন ও তার স্বামী আমাদের বাড়িতে ছিল। সোমবার ভোরে ঘরের পাশের একটি পুকুরে বোনের মরদেহ পাওয়া যায়। ঘরে তারা দুজন ও তাদের মেয়ে ছিল। আমার বোনকে তার স্বামীই হত্যা করে মরদেহ পুকুরে ফেলে দেয়। তার গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা টাকা দিয়ে রাজুকে বিদেশ পাঠিয়েছিলাম। এর পরও আমার বোনকে শান্তিতে রাখেনি। কয়েক মাস আগে রাজু অন্যত্র বিয়ে করে। এ নিয়ে তাদের সংসারে অশান্তি আরও বাড়ে।’
স্থানীয় নারী ইউপি সদস্য তাজ নাহার বেগম বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থল যাই। ফাতেমাকে হত্যার অভিযোগে তার স্বামী রাজুকে বাড়ির লোকজন গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখেন। পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।’
অভিযুক্ত রাজু নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, ‘রাতে আমরা একসঙ্গে ঘুমিয়ে ছিলাম। ভোররাতে পুকুরে গোসল করতে গিয়ে ফাতেমা আর ঘরে আসেনি। কে বা কারা তাকে মেরেছে, আমি জানি না।’
ওসি কায়সার হামিদ বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুজনকে থানায় নেওয়া হচ্ছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’