লক্ষ্মীপুর প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৩ অক্টোবর ২০২৪ ২২:৪০ পিএম
আপডেট : ১৩ অক্টোবর ২০২৪ ২২:৫৬ পিএম
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মান্দারী বাজারের ব্যবসায়ী হেলাল উদ্দিনকে বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনসহ দোকানের প্রায় ৫০ লাখ টাকার মালামাল লুটের ঘটনায় বিচার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে।
রবিবার (১৩ অক্টোবর) বিকালে বাজারের একটি রেস্তোরাঁয় এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এ ছাড়া ঘটনাটি মীমাংসা করে দেওয়ার আশ্বাসে মান্দারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা সোহরাব হোসেন রুবেল পাটওয়ারী ব্যবসায়ী হেলালের কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা নিয়েছেন। ওই টাকাও তিনি ফেরত পেতে আকুতি জানিয়েছেন। সরকার পতন হওয়ায় ঘটনার প্রায় ১ বছর ৭ মাস পর বিচারের দাবি জানান এ ব্যবসায়ী।
হেলাল উদ্দিন সদর উপজেলার মান্দারী বাজারের হাজী স্টোরের স্বত্বাধিকারী ও মান্দারী ইউনিয়নের দক্ষিণ মান্দারী গ্রামের মৃত হাজী ছেরাজল হকের ছেলে। সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, মান্দারী বাজারে পৈতৃক সম্পত্তি (১ শতাংশ) রয়েছে। জমিটি তার বাবা তাদের পাঁচ ভাইয়ের নামে দলিল করে দেন। গোপনে অন্য চার ভাই তাদের অংশ মো. মাসুদ নামে এক ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে দেন। ঘটনাটি জানতে পেরে জমিটি ফেরত পেতে ২০২৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি লক্ষ্মীপুর দেওয়ানি আদালতে ৮৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা জমা দিয়ে তিনি ইনজাংশন ফেয়ার মামলা করেন। আদালতের মাধ্যমেই মাসুদ ৮৮ লাখ টাকা গ্রহণ করেন।
লিখিত বক্তব্যে হেলাল জানান, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী মাসুদের আর ওই জমিতে যাওয়ার সুযোগ নেই। কিন্তু ২৪ ফেব্রুয়ারি রাতে মাসুদ তার সহযোগী মো. মোরশেদ, দিদার পাটওয়ারী, আরিফ, জসিম, রাজুসহ শতাধিক লোক নিয়ে তার (হেলাল) দোকানে হামলা করে। এ সময় তাকে মারধর করে দোকানের সামনে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে বেঁধে রাখে। এরপরও তাকে শারীরিক নির্যাতন করা হয়। পরে দোকানে থাকা প্রায় ৫০ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এ সময় তারা দোকানের চাবি নিয়ে যায়।
হেলাল আরও জানান, হামলাকারীরা স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা রুবেল পাটওয়ারীর অনুসারী ছিল। এতে ঘটনাটি মীমাংসা করে দেওয়ার কথা বলে চেয়ারম্যান তার কাছ থেকে ৪ লাখ টাকা দাবি করেন। পরে তিনি চেয়ারম্যানকে ৩ লাখ টাকা দেন। এরপর তাকে দোকানের চাবি ফিরিয়ে দেওয়া হয়। হামলাকারীরা চেয়ারম্যানের অনুসারী ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে জড়িত বিধায় তাদের বিরুদ্ধে ভয়ে কোনো কথা বলা ও মামলা করতে পারিনি। এখন দেশ স্বৈরাচারমুক্ত হয়েছে। এজন্য তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস হয়েছে। তিনি মাসুদ ও চেয়ারম্যানসহ সবার বিচার দাবি করছেন।
সরকার পতনের পর থেকে চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন রুবেল পাটওয়ারী আত্মগোপনে রয়েছেন। তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। অভিযুক্ত দিদার পাটওয়ারী, আরিফ, জসিম ও রাজুর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।
আরেক অভিযুক্ত মো. মোরশেদ অভিযোগটি মিথ্যা ও এ ধরনের ঘটনা কখনও শোনেননি বা ঘটাতে যাননি বলে দাবি করেছেন।