মোকছেদুল মমিন মোয়াজ্জেম, হিলি (দিনাজপুর)
প্রকাশ : ১৩ অক্টোবর ২০২৪ ২০:১১ পিএম
আপডেট : ১৩ অক্টোবর ২০২৪ ২২:৪৭ পিএম
শারদীয় দুর্গাপূজা
উপলক্ষে কয়েক দিন ধরে দিনাজপুরের হিলি সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়ার দুই পাশ দুই প্রতিবেশী
দেশ ভারত ও বাংলাদেশের মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। দুই দেশের শতশত মানুষ ভিড় করছেন
নিজ নিজ দেশের সীমান্তের ওই এলাকায়। কেউ পূজা দেখতে, কেউ তাদের আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে
দেখা করতে আসছেন। তবে কঠোর নিরাপত্তায় রয়েছে দুই দেশের সীমান্ত রক্ষীবাহিনী বিজিবি
ও বিএসএফ।
রবিবার ছিল দুর্গাপূজার মহাদশমী। সকাল থেকে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে দর্শনার্থী ও ভক্তরা হিলি সীমান্তে জড়ো হয়।
এদিকে, ভারতের সীমান্তবর্তী এলাকা থেকেও দর্শনার্থীরা আসেন বাংলাদেশের পূজা দেখতে। কিন্তু সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া এবং বিজিবি ও বিএসএফের কঠোর মনোভাবের কারণে এপার থেকে ওপারে যেতে পারেনি কেউ। তাই দুই পাশে দাঁড়িয়ে দুই দেশের দর্শনার্থীরা একে অপরকে দেখে, ছবি তোলে। অনেকে হাত আর চোখের ইশারায় কথা বলেন পরস্পর। কাছে না পাওয়ার দুঃখটাকেও এভাবে আনন্দ দেয় তাদের।
বিভিন্ন স্থান থেকে আসা দর্শনার্থীরা বলেন, ‘সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে দুই বাংলাকে ভাগ করে দিলেও আমাদের মনকে তো আর ভাগ করতে পারেনি, আগে তো দুই বাংলা একই ছিল। তাই ভালোবাসার টানে, প্রাণের টানে, নাড়ির টানে আমরা ছুটে এসেছি সীমান্তে। আমাদের অনেক আত্মীয়স্বজন ভারতে আছেন। দূর থেকে অনেক দিন পর ওই পারে স্বজনদের এক নজর দেখতে পেলাম, এটাও অনেক শান্তি।’
রংপুর থেকে আসা প্রদীপ কুমার বলেন, এক সময় এই দুই দেশ এক ছিল। দেশ ভাগ হওয়ার পর সব আলাদা। ওই দেশে আমার অনেক আত্মীয়স্বজন আছেন। প্রতি বছর পূজার সময় ভারতে যেতাম। বর্তমান ভিসা বন্ধ, তাই যাওয়া হয়নি। তবে একটু প্রশান্তি পাবার আশায় এখানে আসছি। ওপারে আত্মীয়রা আসছেন। মাঝখানে কাঁটাতারের বেড়া, কাছে যেতে পারছি না। কাছে যেতে না পারলেও দূর থেকে চোখের দেখা আর হাতের ইশারায় কথা বলা হচ্ছে। এতেই অনেকটা শান্তি পাচ্ছি।’
হিলি চেকপোস্টের দায়িত্বরত বিজিবির কমান্ডার নায়েব সুবেদার অসিম উদ্দিন বলেন, আজ (রবিবার) হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দুর্গোৎসবের শেষদিন, প্রতিমা বিসর্জনের দিন। সীমান্তের দুই পাশে দুই দেশের মানুষ অবস্থান করছে। তারা একে অপরকে দূর থেকে দেখছেন। আমরা কঠোর নিরাপত্তার সঙ্গে সীমান্তে অবস্থান করছি। এখানে কোনো বিশৃঙ্খলা হবে না আশা করছি।’
হিলি ইমিগ্রেশন ওসি আরিফুল ইসলাম বলেন, হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারত-বাংলাদেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা পূজা দেখতে আসা-যাওয়া করতেন। কিন্তু ট্যুরিস্ট ভিসা বন্ধ থাকায় দুই দেশের যাত্রী পারাপার কম। শুধু মেডিকেল ভিসার যাত্রী যাওয়া আসা করছে। এ কারণে হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে যাত্রী পারাপার কমেছে। তবে মেডিকেল ভিসার যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক রয়েছে।