ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্স
ভোলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৩ অক্টোবর ২০২৪ ১৫:৫০ পিএম
আপডেট : ১৩ অক্টোবর ২০২৪ ১৭:০৮ পিএম
ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি, ভোলা। প্রবা ফটো
বীমা করলে বোনাস ও মেয়াদ শেষে দেওয়া হবে দ্বিগুণ লাভ- এমন আশ্বাসে ভোলার নিম্ন আয়ের মানুষদের বীমা করায় ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি। কিন্তু মেয়াদ শেষ হওয়ার ৩ থেকে ৪ বছর কেটে গেলেও আমানতও ফেরত পাননি গ্রহকরা। এমন কাণ্ডে হতাশ ওই বীমা কোম্পানির ২ হাজার গ্রহক।
ভোলার শহরের গাজীপুর রোড এলাকার ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানির গ্রহক বেবী আক্তার ও তার স্বামী কাজল ইসলাম জানান, তারা ২০১১ সালের শেষের দিকে বার্ষিক ১১ হাজার ৯৯০ টাকা করে একটি ১০ বছর মেয়াদি বীমা করেন। বীমার মেয়াদ ২০২২ সালে শেষ হয়। এর পর ২৫ থেকে ৩০ বার জেলা অফিসে গিয়েছেন টাকা তুলতে। তবে সেখানকার দায়িত্বরত কর্মকর্তা ও অফিসাররা নতুন তারিখে আসার জন্য বলেছেন। এ ছাড়াও তাদের নতুন করে আরেকটি বীমা করারও জন্য অনুরোধ করেন।
ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার উদয়পুর গ্রামের ব্যাপারি বাড়ির মাইনুর বেগম জানান, তার স্বামী কৃষি কাজ করে অনেক কষ্টে সংসার পরিচালনা করেন। তাদের দুই ছেলে ও এক মেয়ে। তার মেয়ের বিয়ের জন্য তিনি ১০ বছর মেয়াদে একটি বীমা করেন। কিন্তু মেয়ের বিয়ের সময় মেয়াদ উত্তীর্ণ বীমার টাকা আনতে গিয়ে টাকা পাননি। পরে বাধ্য হয়ে আত্মীয়স্বজন ও স্থানীয়দের কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে মেয়ে বিয়ে দিয়েছেন। বর্তমানে মেয়ের ঘরে একটি নাতিও হয়েছে। তবুও সেই টাকা পাননি তিনি। টাকার জন্য তার স্বামী তাকে কয়েকবার মারধর ও ঘর থেকে বের করে দিয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
একই উপজেলার কুতুবা ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা নাহার আক্তার জানান, দুটি বীমা করেছেন, মেয়াদ শেষে হলেও এখন টাকা ফেরত পাননি তিনি। আর স্বামীকে না জানিয়ে বীমা করে টাকা ফেরত না পাওয়ায় স্বামীর দ্বারা নির্যাতনের স্বীকার হচ্ছেন।
ভোলা ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানির জেলা অফিসের সরেজিমনে গিয়ে কথা হয় ওই কোম্পানির এভিপি, অপারেশন ইনচার্জ মো. কামরুল হাসানের সঙ্গে। তিনি জানান, ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানিতে ভোলার সাত উপজেলায় বিভিন্ন পলিসি ও বিভিন্ন মেয়াদে বর্তমানের বীমা গ্রহকের সংখ্যা প্রায় ১৫ হাজার। এদের মধ্যে মেয়াদ উত্তীর্ণ ও মেয়াদ শেষ হওয়ায় আগে বীমা ভেঙে ফেলা গ্রহকের সংখ্যা ২ হাজার ২৪৪ জন।
তিনি জানান, মেয়াদ উত্তীর্ণ গ্রহকের সংখ্যা বেশি হলেও তাদের কোম্পানির টাকা সংকটের কারণে গ্রহকদের বীমার টাকা দিতে গিয়ে সমস্যায় পড়েছেন তারা। তবে মাঠ থেকে বীমার কালেকশন করে প্রতিদিন কিছু কিছু গ্রহককে টাকা দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি। এ ছাড়া ডিসেম্বর মাসের পর তাদের সমস্যা সমাধান হবে বলেও জানান তিনি।
ভোলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শরীফুল হক জানান, বিষয়টি লোকমুখে শুনেছেন। এখনও কোনো গ্রহক লিখিতভাবে অভিযোগ। অভিযোগ পেলে গ্রহকদের আইগত সহায়তা করার আশ্বাস দেন তিনি।