শরীয়তপুর প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১২ অক্টোবর ২০২৪ ২১:৫৩ পিএম
আপডেট : ১২ অক্টোবর ২০২৪ ২১:৫৫ পিএম
শরীয়তপুরের নড়িয়া পৌরসভার পূর্ব পাশ দিয়ে উপজেলা খাদ্যগুদাম থেকে পুন্নারপুল পর্যন্ত প্রবাহিত খালটি পুরোপুরি বেদখল হয়ে গেছে। গত ১৫ বছরে ২ হাজার ১০০ মিটার দীর্ঘ এ খাল দখল করে মার্কেট, পাকা ভবন, দোকানপাট, বসতবাড়িসহ অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণ করেছেন প্রভাবশালী ব্যক্তিরা।
সম্প্রতি খালটি দখলমুক্ত করার উদ্যোগ নেয় পৌরসভা, প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। কিন্তু রহস্যজনক কারণে হঠাৎ অভিযান থমকে যায়। এজন্য ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে স্থানীয়দের মাঝে। পৌর প্রশাসক বলছেন, শিগগিরই দখলমুক্ত করা হবে।
পাউবো ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পানি নিষ্কাশন ও জলাবদ্ধতা দূর করার জন্য একমাত্র খাল নড়িয়া পৌরসভায়। উপজেলা সরকারি খাদ্যগুদাম থেকে পুন্নারপুল পযর্ন্ত খালটির দৈর্ঘ্য ২ হাজার ১০০ মিটার। আর স্থানভেদে খালটি ১৬-২২ ফিট প্রশস্ত। খালটি দখল করে গত ১৫ বছরে গড়ে উঠেছে অর্ধশত বসতবাড়ি, পাকা ভবন, মার্কেট ও দোকানপাটসহ বিভিন্ন স্থাপনা। খালটি বেদখল হয়ে যাওয়ায় সামান্য বৃষ্টি হলেই পৌরসভার বিভিন্ন স্থানে দেখা দেয় জলাবদ্ধতা। খালটি উদ্ধার হলে পৌরসভার ৩-৪ হাজার বাসিন্দা জলাবদ্ধতা থেকে রক্ষা পাবে। এ ছাড়া পানির নিচে তলিয়ে আছে প্রায় ৫০০ একর জমি। এসব জমি দোফসলিতে রূপান্তরিত হবে।
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে সম্প্রতি খালটি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে পৌরসভা প্রশাসক। অবৈধ স্থাপনাগুলোতে রেডমার্ক (লাল দাগ) দিয়ে ভেঙে সরিয়ে নেওয়ার জন্য মালিকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়। ফলে অনেকে দোকানপাট ভেঙে সরিয়ে নিয়েছেন। কিন্তু অর্ধশতাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তি স্থাপনা না সরিয়ে নিয়ে পৌর প্রশাসককে ‘ম্যানেজ’ করে বহাল তবিয়তে বলে অভিযোগ। এসব স্থাপনা উচ্ছেদ না করা এবং খাল খনন থমকে যাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন স্থানীয়রা।
ব্যবসায়ী কামাল পেদা বলেন, আমার ছোট একটি হোটেল ছিল। পৌরসভা কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তা ভেঙে সরিয়ে নিয়েছি। কিন্তু প্রভাবশালীদের অর্ধশতাধিক প্রতিষ্ঠান লাল কালির দাগ থাকলেও প্রশাসন তা ভাঙছে না। আমরা দ্রুত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ চাই।
উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম সরদার বলেন, খালটি ঠিকমতো কাটা হচ্ছে না। পশ্চিম দিকে ৩-৪ ফুট করে যেসব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পড়েছে তা এখনও ভাঙা হয়নি। আমরা জানতে পেরেছি প্রশাসনের সঙ্গে ‘আঁতাত’ করে তারা টিকে আছেন।
নড়িয়া বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অলিল মোল্লা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে খালটি দখল হয়ে আছে। দখলমুক্ত করার জন্য এসিল্যান্ড ও পৌরসভা প্রশাসক অভিযান শুরু করেছিলেন। তবে রহস্যজনক কারণে খালটির উদ্ধার অভিযান বন্ধ রয়েছে। দ্রুত খালটি উদ্ধারের দাবি জানাচ্ছি।
অভিযোগ অস্বীকার করে পৌর প্রশাসক ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. পারভেজ বলেন, মানুষ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। পাশাপাশি সরকারি খাল যেন উদ্ধার হয়। সে কারণে অন্যান্য কাজ চলমান থাকলেও ভাঙচুরের কাজ বন্ধ রেখেছি। তবে শিগগিরই অবৈধ স্থাপনা ভেঙে ফেলা হবে।