চট্টগ্রাম অফিস
প্রকাশ : ১২ অক্টোবর ২০২৪ ১৮:২১ পিএম
আপডেট : ১২ অক্টোবর ২০২৪ ১৮:৫৩ পিএম
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক-ই-আজম বলেছেন, ‘খাতুনগঞ্জের ঐতিহ্য আমাদের ফেরাতেই হবে। বৃষ্টি-বন্যায় খাতুনগঞ্জ অর্ধেক ডুবে যায়। বাণিজ্য উপযোগী হয় না। আজকে থেকে ১০০ বছর আগে যেমন ছিল, এখনও কেন সেরকম থাকবে? কখনও কি আমরা প্রশ্ন করেছি? খাতুনগঞ্জে পণ্যবাহী গাড়িগুলো কীভাবে যেতে পারে, কীভাবে এ ধরনের সুযোগ-সুবিধাগুলো বাস্তবিকভাবে কস্ট ইফেক্টিভ (ব্যয় সংকুচিত) হতে পারে। যদি আপনারা না পারেন, তাহলে প্রয়োজনে পরিবারের পরামর্শ নেন। আমরা কেউ বিছিন্ন নই। সবাইকে সম্মেলিতভাবে এটাকে গড়ে তুলতে হবে। কারও ওপরে দায় চাপিয়ে না। কীভাবে পরিবর্তন হবে, তা নিয়ে আপনারা ভাবেন। আপনাদের ভাবনার সঙ্গে আমরা যুক্ত হতে চাই। আপনারা চাইবেন না। নির্দেশ দিবেন। কোনটা করলে দেশের কী উপকার হবে, সেই সংস্কারগুলো করার জন্যই এখানে আসছি।’
শনিবার (১২ অক্টোবর) চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এক মতবিনিয়ম সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় সরকারের ফান্ডে ৬৩ লাখ ৯০ হাজার টাকার চেক প্রদান করে খাতুনগঞ্জ ট্রেড এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এসোসিয়েশন। এ উপলক্ষে এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের কারো সঙ্গে, কোনো বিষয় নিয়ে কোনো বিদ্বেষ নাই। পরিবর্তন-সংস্কার সবজায়গায় আন্তরিকভাবেই করতে চাই। আপনাদের নিয়ে করতে চাই। সমস্যা যেখানে হবে, সেই সমস্যায় যারা নিপতিত আছেন, তাদের কাছ থেকেই সেই সুপারিশটা আসতে হবে।’
বিগত সরকারের সমস্ত প্রক্রিয়াগুলোই জনমানুষের বিরুদ্ধে ছিল মন্তব্য করে ফারুক-ই-আজম বলেন, ‘কর্ণফুলী নদীর তল দিয়ে টানেল হয়েছে। এটি কার জন্য? কে করেছে, কি হয়েছে, কারা করেছে; এই যে অপব্যবস্থাগুলো আমরা নীরবে মেনে নিয়েছি। আমাদের এখানে প্রশাসকরা কিছু বলেনাই, ক্ষমতাধররা কিছু বলেনাই, রাজনীতিবিদরা বলেনাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঢাকা-মাওয়া রোড কেউ কি ভ্রমণ করেছেন? আপনারা কি কেউ দেখেছেন? ঢাকা-চট্টগ্রাম রাস্তার পরিস্থিতি, এগুলো আমাদের উন্নয়নের কোন প্রেক্ষাপটে, কোন গভীর খাতের মধ্যে আমার নিপতিত করেছে? এ বৈষম্যগুলো যদি আমরা নিবিষ্ট চোখে আমরা দেখি, তাহলে আমরা অনেক বিষয় সম্পর্কে জানতে পারব।’
চিটাগং চেম্বার নিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘চট্টগ্রাম চেম্বার, এটা কাদের চেম্বার? এটা ভূতের চেম্বার। এখানে ব্যবসায়ীরা যে চেম্বার পরিচালনা করার কথা ছিল, অদৃশ্য ভূতেরা এটা পরিচালনা করত। ব্যবসায়ীীদের তো প্রতিনিধিত্ব হয়নি এখানে। তাহলে আপনাদের এ দূরাবস্থা দূর হতো কীভাবে? আমরা কি তাদের প্রশ্নের সম্মুখীন করতে পেরেছি? আজকে সুযোগ হয়েছে, সময় হয়েছে। নিঃসংকোচে, নিঃশঙ্কায় আমরা আমাদের সমস্ত কিছু নিয়ে কথা বলতে পারছি। আপনারা দোষারোপের যে সমস্ত কথা বলেছেন, আমরা এ ধরনের কথা বলতে চাই না। আমরা এ ধরনের কথা বলব না। পরিবর্তনের জন্য আপনাদের ঘুমিয়ে থাকলে চলবে না। আপনাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিগত দিনে চট্টগ্রাম চেম্বার কারা শাসন করেছে, চট্টগ্রামের বাইরের লোকেরা কি এসে শাসন করেছে? আমরা নিজেরাই শাসন করেছি। এটা কি ব্যবসায়ীক সংগঠন ছিল? এটা ব্যবসায়ীদের সংগঠন ছিল না। বহু বিষয় আছে, যেগুলো আমাদের নিজেদেরকে পরিবর্তনের ব্যবস্থা করতে হবে। আমাদের নিজেদের উদ্যোগী হতে হবে। আমরা সম্মেলিতভাবে, ঐক্যবদ্ধভাবে যদি উদ্যোগী হই, সংস্কার এমনিতেই হয়ে যাবে।’
সভায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম, খাতুনগঞ্জ ট্রেড এসোসিয়েশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও বিএসএম গ্রুপের চেয়ারম্যান আবুল বশর, সাধারণ সম্পাদক ছগীর আহম্মেদ, উপদেষ্টা তৈয়বুর রহমান, সহ-সভাপতি আবদুস সালাম, সহ-সাধারণ সম্পাদক আহমদ রশিদ আমুসহ খাতুনগঞ্জের বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।