রংপুর অফিস
প্রকাশ : ১২ অক্টোবর ২০২৪ ১৪:২৪ পিএম
আপডেট : ১২ অক্টোবর ২০২৪ ১৫:৩৯ পিএম
রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আনন্দ র্যালি শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন নাহিদ ইসলাম। প্রবা ফটো
প্রকৃত ফ্যাসিবাদী শক্তি রাজপথে পরাজিত হয়ে অনলাইনে তাদের শক্তি প্রদর্শন করছে বলে মন্তব্য করেছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘সামগ্রীকভাবে ফেসবুকে প্রচুর গুজব রটানো হচ্ছে। ফেক আইডি খুলে ফেসবুকে মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। আমরা সচেতন হই, মিথ্যা গুজবে কান না দেই।’
শনিবার (১২ অক্টোবর) সকালে রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আনন্দ র্যালি শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘ভারতে চলমান উগ্রবাদ ঢাকতে তারা বাংলাদেশে উগ্রবাদ চলছে বলে অপপ্রচার চালাচ্ছে। তাদের এ ধরনের অপপ্রচার সব সময় ছিল। আমাদের উচিত নিজেদের দিকে তাকানো। যেন সেই বিষয়গুলো কখনও না ঘটে, ঘটলে আমরা দ্রুত আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করছি।’
ভূ-রাজনৈতিক কারণে তিস্তা মহাপরিকল্পনা আটকে থাকার বিষয়ে বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নতজানু পররাষ্ট্রনীতিতে বিশ্বাস করে না। দেশের ন্যায্য ও সমতার ভিত্তিতে অন্য যেকোনো দেশের সঙ্গে আমরা সম্পর্ক করব। দুমাস হয়েছে আমরা দায়িত্ব নিয়েছি। আমাদের সময় দিতে হবে কাজ করার জন্য। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু রয়েছে, আহতদের স্বাস্থ্যসেবার বিষয়ে কাজ করছি। আমরা ধীরে ধীরে সব বিষয়ে মনোযোগ দেব।’
রংপুর বিভাগে বৈষম্যের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা অবশ্যই মনে করি রংপুর বিভাগ দেশে দীর্ঘ সময় ধরে অবহেলিত রয়েছে। বিগত সময়ে রংপুরে যে পরিমাণ বাজেট দেওয়া হয়েছে, তার দ্বিগুণ-তিনগুণ বাজেট দেওয়া হয়েছে গোপালগঞ্জে। আমরা বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। আমাদের প্রধান উপদেষ্টা যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, আমরা অবশ্যই যে অনুযায়ী কাজ করব। রংপুর বিভাগ থেকে বৈষম্য ও অবহেলা দূর করব।’
আবু সাঈদ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আজকের দিনে আমি আবু সাঈদকে গভীরভাবে শ্রদ্ধা করছি। আরও শ্রদ্ধা জানাচ্ছি জুলাই বিপ্লবের সব শহীদ ও আহতদের প্রতি। আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে শপথ নিতে চাই, আবু সাঈদ যে কারণে শহীদ হয়েছেন, গণঅভ্যুত্থানের যে আকাঙ্ক্ষা তারা ধারণ করেছিল, সেই আকাঙ্ক্ষা কে ধারণ করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব। যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তিনি ছাত্র ছিলেন, সেই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়কে শিক্ষার দিক থেকে দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নিয়ে যাব। আবু সাঈদকে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়সহ পুরো বাংলার ছাত্র সমাজের অগ্রসৈনিক হিসেবে সব সময় স্মরণ করা হবে।’
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে উপদেষ্টা বলেন, ‘বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে সমস্যা নিয়ে নবনিযুক্ত উপাচার্য স্যারের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। হলের সমস্যা রয়েছে, অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার সংকট রয়েছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকরা অবহেলিত থাকবে না। তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।’
এর আগে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বহুল প্রতীক্ষিত প্রধান ফটকের উদ্বোধন করেন উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে বের হওয়া একটি বর্ণাঢ্য র্যালিতে অংশ নেন তিনি। এরপর ক্যাম্পাসে বৃক্ষরোপণ করেন উপদেষ্টা।
বিশ্ববিদ্যালয় মাঠে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শওকাত আলীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন- বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তানজীম উদ্দিন খান, শহীদ আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন, ১৬তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. তাজুল ইসলামসহ বিভিন্ন অনুষদের ডিনরা।