মাগুরা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৭ অক্টোবর ২০২৪ ২২:৩৭ পিএম
একাত্তরের রণাঙ্গনের অকুতোভয় যোদ্ধা মাসরুর-উল-হক সিদ্দিকী (কমল সিদ্দিকী) বীর উত্তম মৃত্যুবরণ করেছেন। তার বড় ভাই মেজর জেনারেল (অব.) এম মজিদ-উল-হক ছিলেন জিয়াউর রহমানের সরকারের কৃষিমন্ত্রী।
রবিবার (৮ অক্টোবর) রাত ১২টা ৮ মিনিটে ঢাকার একটি স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয় বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। তার বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর। তার স্ত্রীর নাম সৈয়দা রোকেয়া সিদ্দিকী। তাদের রয়েছে দুই মেয়ে।
নড়াইল সদর উপজেলার হবখালী গ্রামের জেড আহমেদ ও ওয়াজেদা আহমেদের ছেলে মাসরুর-উল-হক সিদ্দিকী প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়ই সাংস্কৃতিক আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। তিনি মাগুরায় বসবাস করতেন। মাগুরায় রয়েছে তার নানার বাড়ি।
১৯৭১ সালে তার কর্মজীবন শুরু হয় তৎকালীন ওয়াটার অ্যান্ড পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট অথরিটিতে (ওয়াপদা, পরে তা ভাগ হয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড নামে আলাদা দপ্তর হয়)। সেখানে সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে যোগদান করেন।
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি যোগ দেন। পরে ভারতে গিয়ে তিন মাস বাংলাদেশ সরকারের প্রশাসনিক কাজে যুক্ত থাকেন। এরপর ফের সশস্ত্র যুদ্ধে যোগ দেন তিনি। প্রথম বাংলাদেশ ওয়ার কোর্সে প্রশিক্ষণ নিয়ে যশোর, নড়াইল ও ফরিদপুর জেলার বিভিন্ন স্থানে গেরিলা যুদ্ধে অংশ নেন কমল সিদ্দিকী।
মাসরুর-উল-হক সিদ্দিকী পরিচিত ছিলেন তার ডাক নাম ‘কমল সিদ্দিকী’ নামে। যুদ্ধের একেবারে শেষ দিকে নড়াইল ভাটিয়াপাড়ায় শত্রুর সম্মুখযুদ্ধে তার ডান চোখে গুলি লাগে। কবি আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে লেখেন ‘কমলের চোখ’ নামের কবিতা। তার আরেক বিখ্যাত কবিতা ‘আমি কিংবদন্তির কথা বলছি’। সেখানেও এসেছে কবির বন্ধু কমলের চোখ হারানোর প্রসঙ্গ। কবি লেখেন, ‘উৎক্ষিপ্ত নক্ষত্রের মতো কমলের চোখের কথা বলছি’। ঢাকাতেই জানাজা শেষে বনানী সেনা গোরস্তানে তার দাফন হবে বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।