ধামরাই (ঢাকা) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৭ অক্টোবর ২০২৪ ২২:০৯ পিএম
ঢাকার ধামরাইয়ে বেতন বৃদ্ধি ও সাপ্তাহিক ছুটিসহ নয় দফা দাবিতে বিক্ষোভ করছেন আকিজ ফুড আ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের শ্রমিকরা। দিনভর বিক্ষোভ করলেও কোনো সমঝোতায় আসতে পারেনি শ্রমিক ও কারখানা কর্তৃপক্ষ।
সোমবার (৭ অক্টোবর) এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত (সন্ধ্যা ৭টা ২০) আন্দোলনে ছিলেন শ্রমিকরা।
এর আগে সকাল সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার গাংগুটিয়া ইউনিয়নের বারবাড়িয়া এলাকায় কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা। এর মধ্যে কয়েক দফা ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে অবরোধ করেন শ্রমিকরা। সেনাবাহিনী তাদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কারখানার সামনে প্রায় শতাধিক শ্রমিক অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন। তারা, ‘আমাদের দাবি মানতে হবে’, ‘বেতন বৈষম্য মানি না’সহ বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন।
শ্রমিকরা জানান, দীর্ঘ দিন ধরে দৈনিক ভিত্তিতে কাজ করা শ্রমিকরা প্রতিষ্ঠানের কাছে নানা দাবি দাওয়া জানিয়ে আসছিলেন। প্রতিষ্ঠান তাদের মৌখিকভাবে আশ্বস্ত করলেও দাবি মেনে নেয়নি। তিন মাস আগে বেতন বৃদ্ধির কথা বলা হলেও এখনও শ্রমিকরা বর্ধিত বেতন পাননি। এরই জেরে নয় দফা দাবিতে তারা বিক্ষোভ শুরু করেন।
তাদের নয় দফা দাবিগুলো হলো- মাসিক বেতন ১৫ হাজার টাকা করা, বেতনের অর্ধেক ঈদ বোনাস দেওয়া, প্রতি দিন সবাইকে ডিউটি দেওয়া, কর্ম দক্ষতার ওপর ভিত্তি করে চাকরি স্থায়ীকরণ করা, কোম্পানির লভ্যাংশ দেওয়া, নাইট বিল দেওয়া, কোম্পানির ভেতরে কোনো শ্রমিক ক্ষতিগ্রস্ত হলে তার দায়ভার কোম্পানিকে নেওয়া, কোম্পানির প্রতিটি বিভাগে নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা ও সাপ্তাহিক ছুটি দিতে হবে।
এক নারী শ্রমিক বলেন, সাত হাজার টাকা বেতন পাই। তাতে কিছু হয় না। পরিবার নিয়ে চলতে পারি না। তাদের কাছে বারবার বেতন বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছি। কিন্তু দাবি মানেনি। নিয়মিত ডিউটি দেয় না। কোনো ছুটি নেই। পাঁচ বছর ধরে চাকরি করি। কিন্তু স্থায়ী করেনি। তাই আজ আন্দোলন করছি।
আরেক শ্রমিক বলেন, আমাদের নয়টি দাবি কোম্পানির কাছে জানিয়েছি। যদি তারা দাবি না মানে আমরা প্রতিবাদ চালিয়ে যাব।
এদিকে শ্রমিক বিক্ষোভের জেরে নিরাপত্তার জন্য কারখানার সামনে হাইওয়ে পুলিশ, এপিবিএন, শিল্প পুলিশ, আনসার ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের অবস্থান নিয়ে থাকতে দেখা যায়। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যস্থতায় শ্রমিক ও মালিকপক্ষ দফায় দফায় বৈঠক করে সমঝোতায় আসার চেষ্টা চালায়।
এ বিষয়ে শিল্প পুলিশ-১ এর উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. রেজাউল করিম বলেন, শ্রমিকরা বিভিন্ন দাবি করেছেন। তাদের দাবিদাওয়া নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হয়। কিছু দাবি কর্তৃপক্ষ মেনে নিলেও সন্ধ্যা পর্যন্ত শ্রমিক ও মালিকপক্ষের সমঝোতা হয়নি। তবে পরিস্থিতি শান্ত ও স্বাভাবিক রয়েছে।