রংপুর অফিস
প্রকাশ : ০৭ অক্টোবর ২০২৪ ২০:২৮ পিএম
আপডেট : ০৭ অক্টোবর ২০২৪ ২০:৪৮ পিএম
রংপুর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণসভায় বক্তব্য দেন জোনায়েদ সাকী। প্রবা ফটো
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকী বলেছেন, ‘জুলাই-আগস্টে দেশে এতগুলো হত্যাকাণ্ড হলো, আওয়ামী লীগের ন্যূনতম অনুশোচনা নেই। তারা এখনও প্রতিশোধ নেওয়ার কথা বলে। আমি তরুণদের আহ্বান জানাই, যে মানবিক মুহূর্তে আপনারা ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলেন। ট্যাংক, হেলিকপ্টার থেকে স্নাইপার দিয়ে গুলির সামনে রাষ্ট্রশক্তির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলেন, আমাদের সেই ঐক্য বজায় রাখতে হবে। আমাদের ঐক্য বজায় রাখতে হবে, যেন ফ্যাসিবাদ আর মাথাচাড়া দিতে না পারে।’
সোমবার (৭ অক্টোবর) বিকালে রংপুর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জোনায়েদ সাকী বলেন, ‘জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে ফ্যাসিস্ট সরকার বিদায় নিলেও ফ্যাসিস্ট ব্যবস্থা বহাল রয়েছে। সেই জোরে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন চট করে ঢুকে পড়বেন, আর ঢুকে পড়ে নাকি তারা ক্ষমতা দখল করবেন। আবার নাকি সবার হিসাবও নেবেন। আমি তরুণদের বলতে চাই, আওয়ামী লীগ যে ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থা কায়েম করেছিল কিংবা গত ৫৩ বছর যে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা চলেছে সেটি বদলাতে হবে। এর জন্য গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা, গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ব্যবস্থা ও গণতান্ত্রিক সংবিধান দরকার।’
তিনি বলেন, ‘দেশের নাগরিকেরা ধর্ম, জাতি, লিঙ্গ কিংবা যেকোনো রাজনৈতিক বিশ্বাসের হতে পারে। পুরাতন ফ্যাসিবাদী শক্তি দেশের নাগরিকদের উস্কানি দিচ্ছে। এজন্য দেশের মন্দিরে হামলা হয়, মাজারে হামলা হয়, পাহাড়ে অন্য জাতিগোষ্ঠীর বাড়িতে আগুন দেওয়া হচ্ছে। ফ্যাসিবাদদের দোসররা চাইছে দেশে বিশৃঙ্খলা হোক, বিদেশে বাংলাদেশকে একটি জঙ্গি রাষ্ট্র হিসেবে প্রচার করা হোক।’
গণসংহতি আন্দোলনের এই নেতা বলেন, ‘দেশে কেউ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা দিয়ে বিভাজন করেছে, কেউ হিংসা তৈরি করেছে। নতুন করে আরেকটি দল হিংসা তৈরি করতে চাইছে। তাই আমাদের বিভাজন বন্ধ করে প্রতিটি মানুষকে তাদের নাগরিক মর্যাদায় অভিষিক্ত করতে ছাত্র-তরুণদের ঐক্য রক্ষা করতে হবে। গণতন্ত্রের জন্য রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তুলতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘গত ১৫ বছর বিএনপি নির্যাতিত হয়েছে। তারা বুঝেছে এ শাসনব্যবস্থা দিয়ে রাষ্ট্র চলবে না। তাই তারা ৩১ দফা রাষ্ট্র সংস্কারের দাবি জানিয়েছিল। দেশের সবাই চাইছে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হবে, গণতান্ত্রিক সংবিধান অনুযায়ী দেশ চলবে। যারা এ পথ থেকে সরে যাবে তারা জনগণের বিপরীতে দাঁড়াবে।’
গণসংহতি আন্দোলন রংপুর জেলার আহ্বায়ক তৌহিদুর রহমানের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন- রংপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামু, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সিরাজাম মুনিরা, জেলা ও বিভাগীয় ডেইরি ফার্মস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার লতিফুর রহমান মিলনসহ অন্যরা। এর আগে জোনায়েদ সাকী জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে আহত ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের কথা শোনেন।