আবুল হাসান, মোংলা (বাগেরহাট)
প্রকাশ : ০৭ অক্টোবর ২০২৪ ১৯:২৩ পিএম
আপডেট : ০৭ অক্টোবর ২০২৪ ২১:০২ পিএম
ক্যামেরা ট্র্যাপিং পদ্ধতিতে সুন্দরবনের বাঘ গণনা শেষ হয়েছে। বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান বুধবার (৮ অক্টোবর) আনুষ্ঠানিকভাবে সুন্দরবনের বাঘের সংখ্যা জানাবেন। তথ্য-উপাত্ত যাচাই-বাছাই শেষে গত ২৯ জুলাই বিশ্ব বাঘ দিবসে ফলাফল ঘোষণা করার কথা ছিল। কিন্তু যাচাই কাজে সময় বেশি লাগায় ফলাফল ঘোষণায় দেরি হয়েছে।
বন বিভাগ বলছে, ছয় বছর ব্যবধানে এবার বাঘের সংখ্যা বেড়েছে। সুন্দরবনের খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাটে ৬৩৯টি গ্রিডে ১ হাজার ২০০ ক্যামেরা বসিয়ে বাঘের ছবি সংগ্রহ করা হয়। ক্যামেরা ট্র্যাপিংয়ে প্রাথমিকভাবে বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণীর সাড়ে ১০ লাখের বেশি ছবি পাওয়া যায়। এর মধ্যে থেকে সাড়ে ৭ হাজার বাঘের ছবি নিয়ে চলে বিশ্লেষণ। তবে পরিবেশবিদরা বলছেন, বাঘের সংখ্যা বাড়ার সুখবর থাকলেও বনের এই রাজার টিকে থাকার হুমকিগুলো রয়েছে আগের মতোই।
বন বিভাগ সূত্র জানায়, ২০১৮ সালে সর্বশেষ গণনায় ১১৪টি বাঘ ছিল। ২০১৫ সালের গণনায় ছিল ১০৬টি বাঘ। তৃতীয়বারের মতো সুন্দরবনের বাঘ গণনা শুরু হয় ২০২৩ সালের নভেম্বরে। যা চলে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। সুন্দরবনের এই বাঘ গণনা ও বাঘ সংরক্ষণ নামে দুটি মেগা প্রকল্পের খরচ করা হয় ৩৬ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি বেলার খুলনা বিভাগীয় সমন্বয়ক মাহফুজুর রহমান মুকুল বলেন, ‘এখন মানুষ অনেক সচেতন হয়েছে। বাঘ যে আমাদের রক্ষাকবচ তা সাধারণ মানুষ বুঝেছে। এজন্য বাঘ দেখলে এখন আর মানুষ পিটিয়ে মারে না। এ কারণেই বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করছি।’
সুন্দরবনে বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্পের পরিচালক ও বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (পশ্চিম) ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘ইতঃপূর্বে বিশ্বব্যাংকসহ বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে বাঘ জরিপ হয়। কিন্তু এ বছর দেশীয় প্রযুক্তি ও দেশের অর্থায়নে খুলনার চারটি রেঞ্জেই ক্যামেরা ট্র্যাপিংয়ের মাধ্যমে এই জরিপ করা হয়।’
সুন্দরবন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ২০০১ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ৫০টি বাঘের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে স্বাভাবিকভাবে মারা গেছে ১০টি। ১৪টি বাঘ পিটিয়ে মেরেছে স্থানীয় জনতা। একটি নিহত হয়েছে ২০০৭ সালের সুপার সাইক্লোন সিডরে। বাকি ২৫ বাঘ হত্যা করেছে চোরাশিকারিরা।