× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

শেরপুরে নতুন প্লাবিত দুই উপজেলা, মৃত্যু বেড়ে ৮

শেরপুর প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৭ অক্টোবর ২০২৪ ১৬:৪১ পিএম

আপডেট : ০৭ অক্টোবর ২০২৪ ১৬:৪৩ পিএম

শেরপুরে  বন্যায় নতুন করে প্লাবিত দুই উপজেলা। প্রবা ফটো

শেরপুরে বন্যায় নতুন করে প্লাবিত দুই উপজেলা। প্রবা ফটো

চারদিন ধরে টানা ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের তোড়ে বন্যায় ভাসছে শেরপুর জেলা। তবে জেলার উজানের ঝিনাইগাতি ও নালিতাবাড়ীতে পানি কমলেও নতুন করে প্লাবিত হয়েছে সদর ও নকলা উপজেলা। এতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে আটজনে।

শেরপুর জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

স্থানীয়রা জানায়, বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে আমন ধান, সবজির ক্ষেত ও মাছের ঘের। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং রাজনৈতিক দলগুলোর ত্রাণ কার্যক্রম ও উদ্ধার অভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন। জেলা প্রশাসনের ত্রাণ কার্যক্রম খুব একটা চোখে পড়েনি।

শেরপুর জেলার চার পাহাড়ি নদীতে উজানের পানি কমতে শুরু করলেও, নতুন করে ভাটি এলাকা শেরপুর সদর ও নকলা উপজেলা প্লাবিত হয়েছে। এই দুই উপজেলার প্রায় অর্ধশত গ্রাম পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ।

নকলা উপজেলার নির্বাহী অফিসের তথ্যমতে, নকলা উপজেলার গনপদ্দী, নকলা, উরফা, গৌরদাড়, বানেশ্বর্দী, টালকী, চর-অষ্টধর, চন্দ্রকোণা ইউনিয়নের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

ঝিনাইগাতি, নালিতাবাড়ী এবং নকলা উপজেলায় এ পর্যন্ত আটজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন।

মৃত ব্যক্তিরা হলেন- নালিতাবাড়ীর খলিশাকুড়ির খলিলুর রহমান, আন্ধারুপাড়ার ইদ্রিস আলী, নিশ্চিন্তপুর কুতুবাকুড়া গ্রামের দুই ভাই আলম ও হাতেম, বাঘবেড় বালুরচরের ওমেজা বেওয়া ও নকলা উপজেলায় উরফা ইউনিয়নের কুড়েরপাড় গ্রামের জাল মাহমুদের ছেলে মুকতার আলী । নকলা উপজেলার গনপদ্দির গজারিয়ায় বন্যার পানিতে আ. রাজ্জাক সহ ঝিনাইগাতীর সন্ধাকুড়া থেকে একজনের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে।

ঝিনাইগাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আল আমিন বলেন, নলকূড়া ইউনিয়নের মহারশি নদীর সন্ধাকূড়া এলাকা থেকে শনিবার একটি পচা গলা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরবর্তীতে ময়নাতদন্তের জন্য শেরপুর জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তবে তার পরিচয় পাওয়া যায়নি।

শেরপুর কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, সাম্প্রতিক এ বন্যায় শেরপুরের পাঁচটি উপজেলায় মোট ৪৬ হাজার ৭৯০ রোপা আমন ধান, সবজি ক্ষেত ১ হাজার ৬২, ৪ লাখ ৬৯ হাজার ২৯৪ বস্তা আদা সম্পূর্ণ পানির নিচে তলিয়ে গেছে। জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১ লাখ ৭২ হাজার ৬৩০ জন কৃষক।

শেরপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, রবিবার জেলার ভোগাই নদীর নাকুগাঁও পয়েন্টে পানি ১ সেন্টিমিটার, নালিতাবাড়ী পয়েন্টে ৪৮ সেন্টিমিটার এবং চেল্লাখালীর ৪৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও অপর দুটি পাহাড়ি নদী মহারশি ও সোমেশ্বরীর পানি এখনও বিপৎসীমার সমান রয়েছে। বৃদ্ধি পেয়েছে ব্রহ্মপুত্র, মৃগী ও দশানী নদীর পানি।

শেরপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাকিবুজ্জামান খান বলেন, আগামীকাল সোমবারের ভেতর সব নদীর পানি কমবে, উন্নতি হবে বন্যা পরিস্থিতির।

ভারী বর্ষণে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় শেরপুর নাকুগাঁও স্থলবন্দর স্থবির হয়ে পড়েছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে জেলার অধিকাংশ সড়ক। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অসংখ্য গ্রামীণ পাকা ও কাঁচা সড়ক। পানিতে তলিয়ে গেছে কৃষকের স্বপ্ন ও উঠতি আমনের ক্ষেত। বিভিন্ন স্থানে বানের পানিতে ধসে ও ভেসে গেছে কাঁচা ঘর-বাড়ি। পানিতে ভাসছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সরকারি চিকিৎসা কেন্দ্র। এসব এলাকায় উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে কিছু আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হলেও তা অপর্যাপ্ত।


বলায়েরচর গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক হামিদুল ইসলাম বলেন, দশআনী নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আমাদের এলাকার সবজি ক্ষেত, রোপা আমন ক্ষেত এবং মাছের প্রজেক্ট সম্পূর্ণ পানির নিচে তলিয়ে গেছে।

সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, রাজনৈতি দল ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আসা সেচ্ছাসেবী সংগঠন, আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বন্যায় আটকে পড়াদের উদ্ধারে অভিযান ও ত্রাণ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।

গাজির খামার ইউনিয়নে ত্রাণ দিতে আসা শেরপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বলেন, এ বারের বন্যা ১৯৮৮ সালের বন্যাকেও ছাড়িয়ে গেছে। আমরা জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে শুকনো খাবার চাল, ডাল এবং অন্যান্য সামগ্রী প্রতিদিন বন্যার্তদের মাঝে বিতরণ করে যাচ্ছি।

শেরপুর জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান বলেন, ইতিমধ্যে শেরপুর সদর এবং নকলা উপজেলায় শুকনো খাবার বিশুদ্ধ পানিসহ অন্যান্য খাদ্য সামগ্রী পাঠিয়েছি। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী আমাদের টিম কাজ করছে। অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা