আশুলিয়া (ঢাকা) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৬ অক্টোবর ২০২৪ ১৮:২১ পিএম
আপডেট : ০৬ অক্টোবর ২০২৪ ১৯:৫৯ পিএম
ঢাকার শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় একটি সোয়েটার কারখানার ৬৩ জন শ্রমিককে বরখাস্ত করার পর কারখানাটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া শিল্পাঞ্চলের কারখানাগুলোতে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে উৎপাদন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। শ্রমিকরা সকালে স্বতঃস্ফূর্তভাবে কারখানায় প্রবেশ করে কাজে যোগদান করায় কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
রবিবার (৬ অক্টোবর) সকালে আশুলিয়ার জামগড়া এলাকার হামীদুল্যাহ ম্যানশনের ‘ফ্যাশনইট কোম্পানি লিমিটেড’ কারখানার দেয়ালে ছবিসহ শ্রমিকদের ছাঁটাইয়ের নোটিস টানানো হয়। আরেকটি নোটিসে কারখানাটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
শ্রমিকরা জানায়, কারখানাটিতে প্রায় ১ হাজার ২০০ শ্রমিক রয়েছে। শনিবারও কারখানায় কাজ চলেছে। তখন কেউ বরখাস্তের বিষয়ে জানত না। সকালে কারখানায় এসে শ্রমিক বরখাস্ত ও বন্ধের নোটিস দেখতে পেয়ে যে যার বাড়ি চলে যায়।
ফ্যাশনইট কোম্পানির প্রশাসন ও মানবসম্পদ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মো. আব্দুল খালেকের সই করা নোটিসে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ এ ২৬ ধারায় কিছু সংখ্যক শ্রমিককে চাকরি থেকে অবসান করা হয়েছে। এই আইনে বর্ণিত হারে ক্ষতিপূরণ ও ভাতাদি সোমবার দুপুর আড়াইটা থেকে পরিশোধ করা শুরু হবে। তখন সবাইকে কোম্পানির আইডি কার্ড জমা দিতে হবে।
আরেকটি নোটিসে কারখানার সব শ্রমিক কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলা হয়েছে, আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে চলমান সহিংসতা, বেআইনি ধর্মঘট ও বর্তমান পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে নিরাপত্তার স্বার্থে রবিবার থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে। শ্রমিকদের বেতন ভাতাতি রকেট অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সোমবার পরিশোধ করা হবে বলেও নোটিসে উল্লেখ করা হয়েছে।
এসব বিষয়ে কারখানার প্রশাসন ও মানবসম্পদ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মো. আব্দুল খালেকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
বরখাস্ত শ্রমিক হৃদয় মিয়া বলেন, ‘আমরা কখনও কোনো শ্রমিক আন্দোলনে যাইনি, তারপরও কর্তৃপক্ষ কেন আমাদের বরখাস্ত করেছে বুঝতে পারছি না। এমনকি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণাও করা হয়েছে। বরখাস্ত ৬৩ জনের তালিকার নোটিস দেয়ালে টানানো হয়েছে।’
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইন বিষয়ক সম্পাদক খাইরুল মামুন মিন্টু বলেন, ‘শ্রমিকদের কী কারণে ছাঁটাই করা হয়েছে তা নোটিসে বলা হয়নি। কিন্তু ৬৩ জন শ্রমিকের তালিকা প্রকাশ করেছে কারখানা কর্তৃপক্ষ।’
তিনি আরও বলেন, ‘শনিবার রাত ৯টা পর্যন্ত কারখানাটিতে কাজ চলেছে। তখনও কোনো শ্রমিক জানত না কারখানা বন্ধ ও শ্রমিক বরখাস্তের বিষয়টি। সকালে কারখানার সামনে এসে নোটিস দেখে শ্রমিকরা অবাক হয়ে যায়।’
এ বিষয়ে আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মো. সারোয়ার আলমের মুঠোফোনে ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
অন্যদিকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে রবিবার আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলের কারখানাগুলোতে শান্তিপূর্ণভাবে উৎপাদন কার্যক্রম চলছে। শ্রমিকরা সকালে স্বতঃস্ফূর্তভাবে কারখানায় প্রবেশ করে কাজে যোগদান করেছে। বিকাল পর্যন্ত কোথাও কোনো অপ্রীতকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।