সরকারি হাসপাতাল
বগুড়া অফিস
প্রকাশ : ০৫ অক্টোবর ২০২৪ ২২:৩৭ পিএম
আপডেট : ০৫ অক্টোবর ২০২৪ ২২:৪১ পিএম
সরকারি হাসপাতালগুলোতে প্রয়োজন ছাড়া রোগীদের জন্য বেশি দামে কিনতে হয় এমন অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ প্রেসক্রাইব না করার জন্য চিকিৎসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে চিকিৎসকদের যথাসময়ে হাসপাতালে উপস্থিত এবং ইনডোরে ভর্তি রোগীদের ভালো ডায়েট (খাবার) নিশ্চিত করতেও বলা হয়েছে। রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক কার্যালয় আয়োজিত মাসিক সমন্বয় সভায় এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়।
গত ৩ অক্টোবর রাজশাহী নগরীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত ওই সমন্বয় সভায় বিভাগের আট জেলার সিভিল সার্জন, জেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোর তত্ত্বাবধায়ক এবং উপজেলা পর্যায়ের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোর স্বাস্থ্য এবং পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। সমন্বয় সভায় সভাপতিত্ব করেন বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক আনোয়ারুল কবীর।
সূত্র জানায়, সদ্য ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোতে কর্মরত চিকিৎসকদের যথাসময়ে কর্মস্থলে উপস্থিত না হওয়ার অভিযোগ ছিল। এসবের পাশাপাশি ওষুধ বিশেষত অ্যান্টিবায়োটিকের ক্ষেত্রে হাসপাতালগুলোতে সরবরাহ করা ওষুধের পরিবর্তে চিকিৎসকদের রোগীদের জন্য বেশি দামি অ্যান্টিবোয়োটিক প্রেসক্রাইব করা এবং ইনডোরে চিকিৎসাধীন রোগীদের যে খাবার সরবরাহ করা হয় তা নিম্নমানের বলে অভিযোগ রয়েছে। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসাসেবার মান উন্নয়নের নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের পক্ষ থেকে এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সভায় উপস্থিত একাধিক জেলা ও উপজেলা হাসপাতালের প্রধান জানিয়েছেন, সভায় প্রতিটি হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসকদের দুই বেলা অর্থাৎ দিনে ও রাতে রাউন্ড (রোগী পরিদর্শন) নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া হাসপাতালগুলোকে সার্বক্ষণিক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা এবং প্রেসক্রিপশনে সরকারিভাবে সরবরাহ করা ওষুধ লিখতে বলা হয়েছে। এর পাশাপাশি রোগীদের রোগ নির্ণয়ে যেসব পরীক্ষা-নিরীক্ষা প্রয়োজন সেগুলো সক্ষমতাসাপেক্ষে হাসপাতালের ল্যাবে করানোর বিষয়েও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বগুড়া ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক কাজী মিজানুর রহমান জানান, সমন্বয় সভায় যেসব নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে সেগুলো এরই মধ্যে কর্তব্যরত চিকিৎসকসহ সংশ্লিষ্টদের অবহিত করা হয়েছে।
সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পকিল্পনা কর্মকর্তা সামির হোসেন মিশু জানান, চিকিৎসাসেবার মান কীভাবে আরও উন্নত করা যায় সেগুলো নিয়েই সমন্বয় সভায় আলোচনা হয়েছে।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক আনোয়ারুল কবীর বলেন, ‘মাসিক সমন্বয় সভায় যেসব নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে তা নতুন কিছু নয়। তবে বিষয়গুলো চিকিৎসকদের স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা রোগীদের প্রত্যাশা অনেক বেশি থাকে এবং সেটাই স্বাভাবিক। সেই বিষয়গুলোই চিকিৎসকদের স্মরণ করিয়ে দিয়েছি।’
অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ প্রেসক্রাইব না করার নির্দেশনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘রোগীর জন্য অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ প্রয়োজন কি নাÑ সেটি চিকিৎসকই জানবেন। যদি প্রয়োজন পড়ে তাহলেই কেবল একজন চিকিৎসক অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ সেবনের পরামর্শ দেবেন। তবে সেক্ষেত্রে সরবরাহ করা অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধই লেখা উচিত। বেশি দামি অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ প্রেসক্রাইব করলে তা দরিদ্র মানুষের পক্ষে কেনা সম্ভব হয় নাÑ সেই বিষয়টিও একজন চিকিৎসক জানেন।’