শেরপুর প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৫ অক্টোবর ২০২৪ ২২:০০ পিএম
পানির স্রোতে রাস্তা ভেঙ্গে যাওয়ায় যান চলাচল বন্ধ হয়। প্রবা ফটো
শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলায় বন্যায় স্রোতে ভেসে গিয়ে অন্তত ৪ জনের মৃত্যু হয়েছ। শুক্রবার (৪ অক্টোবর) দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এসব হতাহতের ঘটনা ঘটে। নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ছানোয়ার হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নিহতরা হলেন- উপজেলার নন্নী ইউনিয়নের অভয়পুর গ্রামের বাছির উদ্দিনের ছেলে হাতেম আলী ও সহোদর আলমগীর, বাঘবেড় বালুরচর গ্রামের মানিক মিয়ার স্ত্রী ওমিজা বেগম এবং নয়াবিল ইউনিয়নের খলিসাকুড়া গ্রামের বৃদ্ধ ইদ্রিস আলী।
স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার উপজেলার নন্নী ইউনিয়নের অভয়পুর গ্রামের বাছির উদ্দিনের ছেলে হাতেম আলী ও সহোদর আলমগীর চেল্লাখালী নদীর ভেঙে যাওয়া পানির স্রোতে নিখোঁজ হয়। শনিবার পানি কিছুটা কমে আসায় বিকালে নন্নী কুতুবাকুড়া গ্রামের ধান খেত থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। শুক্রবার বন্যার পানিতে ডুবে মারা যান উপজেলার বাঘবেড় বালুরচর গ্রামের মানিক মিয়ার স্ত্রী ওমিজা বেগম। একই দিন সন্ধ্যায় নয়াবিল ইউনিয়নের খলিসাকুড়া গ্রামে বন্যার পানিতে ডুবে মারা যান বৃদ্ধ ইদ্রিস আলী।
এদিকে শুক্রবার রাত থেকে পাহাড়ি নদীগুলোতে পানির তীব্রতা কিছুটা কমে এলেও ভাটি অঞ্চলের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। সবমিলিয়ে এ উপজেলার অন্তত ১০টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। পানির তোড়ে অনেকের বাড়ি-ঘর ভেসে গেছে। উপজেলার কয়েকটি প্রধান সড়ক পানির স্রোতে ভেঙ্গে যাওয়ায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎত বিচ্ছিন্ন রয়েছে। বন্যার পানিতে হাজার-হাজার একর জমির ফসল পানিতে ডুবে রয়েছে। উপজেলার অধিকাংশ পুকুরের মাছ ভেসে গেছে।
শনিবার (৫ অক্টোবর) বিকাল পর্যন্ত নিম্নাঞ্চলের মানুষদের নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটতে দেখা গেছে। তবে চিকিৎসা, খাদ্য ও আবাসন সংকটে অবর্ননীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। এখনো পানিবন্দি রয়েছেন অনেকে। এ অবস্থায় দ্রুত ঊর্ধ্বতন প্রশাসনসহ দেশের বিত্তবানদের বানভাসী ও ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন এলাকার সচেতন মহল।
বানভাসি মানুষদের উদ্ধারে শুক্রবার থেকেই কাজ করছে সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, বিজিবি ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো। শনিবারও দিনভর স্পীটবোড, নৌকা, ভেলা, টিউব ইত্যাদি নিয়ে বন্যায় আটকে পড়াদের উদ্ধার অভিযান চালানো হয়েছে।
এছাড়াও শুকনা খাবারসহ অন্যান্য খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। এসব কাজে অংশ নিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা বিএনপি, মানবাধিকার সংস্থা আমাদের আইন, ছাত্র শিবির, ইসনাফ, নন্নী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা আলহাজ একেএম মাহবুবুর রহমান রিটনসহ বিভিন্ন সেচ্ছাসেবী সংগঠন।