× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

ক্লাসে না গেলেও হাজিরা খাতায় নিয়মিত স্ত্রীকে দিয়ে প্রক্সি ক্লাস নিজে করেন ব্যবসা

মুরাদনগর (কুমিল্লা) সংবাদদাতা

প্রকাশ : ০৫ অক্টোবর ২০২৪ ১৯:২১ পিএম

আপডেট : ০৫ অক্টোবর ২০২৪ ১৯:২৪ পিএম

অভিযুক্ত শিক্ষক ফোরকান মিয়া। প্রবা ফটো

অভিযুক্ত শিক্ষক ফোরকান মিয়া। প্রবা ফটো

মাদ্রাসায় নিয়মিত অনুপস্থিত প্রায় ৫ বছর। কিন্তু শিক্ষক হাজিরা খাতায় দেওয়া আছে প্রতিদিন উপস্থিতির স্বাক্ষর। বেতন বিলের সিটেও আছে স্বাক্ষর। ক্লাস না করিয়ে শুধু হাজিরা খাতায় উপস্থিতি দেখিয়ে ব্যাংক থেকে উত্তোলন করেন বেতনের টাকা। পুরো বিষয়টি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ জানলেও নেননি কোনো ব্যবস্থা। বরং স্ত্রীকে দিয়ে ক্লাস করান এই শিক্ষক। কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার আকবপুর মোহাম্মদিয়া আলিম মাদ্রাসায় ঘটেছে এমন ঘটনা।

অভিযুক্ত শিক্ষক ফোরকান মিয়া আকবপুর গ্রামের মৃত আলী আহম্মদের পুত্র। তিনি আকবপুর ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসার মাধ্যমিক শাখার কৃষি বিভাগের শিক্ষক। তিনি ১৯৮৮ সালের ২৫ জুন এই মাদ্রাসায় যোগদান করেন। স্থানীয় হওয়ায় এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কেউ মুখ খোলার সাহস পায় না। মাদ্রাসায় আসা বা না আসা চলে তার খেয়ালখুশিমতো। তার স্ত্রী একজন ইন্টারমিডিয়েট পাস গৃহিণী । তাকে দিয়ে প্রক্সি ক্লাস নেন। এতে মাদ্রাসার শিক্ষাব্যবস্থায় হ-য-ব-র-ল পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষার্থীও কমে গেছে।

মাদ্রাসা সূত্রে জানা যায়, কৃষি বিষয়ের শিক্ষক ফোরকান মিয়া এলাকায় মাছের ব্যবসা করেন। তার কয়েকটি মাছের পুকুর আছে। সেখানেই বেশি সময় দেন। মাদ্রাসায় এলেও এক ঘণ্টা করে চলে যান। বছরের বেশিরভাগ সময়ই মাদ্রাসার বাইরে থাকেন। প্রতি সাপ্তাহে এক দিন এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন। বছরের পর বছর এভাবে চললেও গত ৫ বছর যাবৎ ওনার স্ত্রী শারমিন আক্তারকে দিয়ে বিধিবহির্ভূতভাবে ক্লাস নেন অধ্যক্ষ।

৬ষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা হলে তারা বলে, ‘ফোরকান স্যার নিয়মিত মাদ্রাসায় আসেন না, ওনার স্ত্রীকে দিয়ে ক্লাস করান। আবার কেউ কেউ বলেন, ওই স্যারকে আমরা চিনিই না।’

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ‘ফোরকান মিয়া একজন মৎস্যচাষি। তাকে দিনের বেলা প্রায়ই আমতলী বাজারে দোকানপাটে দেখা যায় । একজন শিক্ষক ক্লাস রেখে কী করে হাটবাজারে ঘুরে বেড়ায় এটি বোধগম্য নয়। একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কি কোনো নিয়মকানুন নেই? এ নিয়ে তারা বিস্ময় ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

শিক্ষক ফোরকান মিয়া বলেন, মাঝে মধ্যে ব্যবসার কাজে এদিক সেদিক যাই। তখন তিন-চার দিন মাদ্রাসায় আসতে পারি না। ৪ বছর যাবৎ শরীরে সমস্যা আছে। সমস্যা বেড়ে গেলে ঢাকার উত্তরায় ইবনে সিনা হাসপাতালে যাই। পরে এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করি। এই বেতনে চলতে পারি না। তাই মাছের ব্যবসাসহ এলাকার বিভিন্ন সামাজিক কাজে সময় দেই।

ক্লাস ফাঁকি দিয়ে সামাজিক ও ব্যবসায়িক কাজে সময় দিচ্ছেন, কাজটি ঠিক করছেন কি নাÑ এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘বাড়তি রোজগারের জন্য করি। আসলে যা করছি তা করা ঠিক না।’

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. হাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমি ২০১০ সালে মাদ্রাসায় যোগদান করার পর থেকে ওনাকে অনিয়মিত পাই। শুরুর দিকে অনেকগুলো নোটিস করেছি। কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি। সে অসুস্থতার কথা বলে মাদ্রাসায় নিয়মিত আসে না । শুনেছি মাছের ব্যবসা করেন।’ ফোরকান মিয়ার স্ত্রী ক্লাস নেওয়ার বিষয়টি ম্যানেজিং কমিটির দ্বারা রেজুলেশনকৃত নয়। আসলে সবকিছুই নিয়ম বহির্ভূত হয়ে গেছে।’

মুরাদনগর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সফিউল আলম তালুকদার বলেন, ‘ক্লাস ফাঁকি দিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য করার কোনো নিয়ম নেই। প্রক্সি ক্লাসেরও কোনো বিধান নেই। অভিযোগ পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সিফাত উদ্দিন বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবগত নন। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা