কুমিল্লা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৫ অক্টোবর ২০২৪ ১৭:০৭ পিএম
আপডেট : ০৫ অক্টোবর ২০২৪ ১৭:০৮ পিএম
কুমিল্লায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার অভিযোগে মামলায় আওয়ামী লীগের মৃত তিন নেতাকে আসামি করা হয়েছে। সমন্বয়কের করা মামলার অনেক আসামি দেশ-বিদেশে থাকলেও মৃত ব্যক্তিদের আসামি করায় জেলাজুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
তারা হলেন– সদর দক্ষিণ উপজেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক হাজী আবদুল মমিন, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক মো. কামাল উদ্দিন মজুমদার এবং সদস্য ওয়াহিদুর রহমান ফরিদ।
বুধবার (২ অক্টোবর) সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের ছোট ভাই ও সদর দক্ষিণ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম সারওয়ার এবং সদর দক্ষিণ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হাই বাবলুসহ ৯৬ জনের নাম উল্লেখ করে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানায় মামলাটি করেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও আন্দোলনের সমন্বয়ক মো. এমরান।
মৃত ব্যক্তির স্বজনরা জানান, হাজি আবদুল মমিন গত ২৪ জুন ভোরে হাঁটতে বেরিয়ে ট্রেনে কাটা পড়ে মারা যান। অথচ মামলায় তার (৩৩ নম্বর আসামি) বিরুদ্ধে ৪ আগস্ট আন্দোলনে হামলার ও ত্রাস সৃষ্টির অভিযোগ আনা হয়েছে।
মৃতের ছেলে আবু সাঈদ বলেন, বাবা কবর থেকে হামলা করেছেন, জেনে অবাক হয়েছি। তিনি তো জুনে মারা গেছেন। তাহলে কীভাবে ৪ আগস্ট হামলায় অংশ নিলেন? এগুলো নিয়ে কথা বলতেও ভালো লাগে না। মিথ্যাচারের একটা সীমা থাকা উচিত।
কামাল উদ্দিন মজুমদারের (২৭ নম্বর আসামি) প্রতিবেশী আমিনুল ইসলাম বলেন, ২০২৩ সালের ১১ জুলাই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে আমিনুল ইসলাম মারা গেছেন। মৃত ব্যক্তিকে আসামি করা অত্যন্ত নিন্দনীয়। প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে কারও আপত্তির কিছু থাকবে না।
ওয়াহিদুর রহমান ফরিদের (৫৫ নম্বর আসামি) বড় ছেলে মো. ফরহাদ বলেন, কিডনিজনিত সমস্যায় ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে বাবা মারা যান। এক বছর পরের ঘটনায় তাকে আসামি করা হয়েছে। মৃত মানুষ কী করে হামলা করবেন, আসামি হবেন? এটি চরম অন্যায়।
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, শুধু তিন প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা নয়, কানাডা ও যুক্তরাজ্য অবস্থানরতসহ বয়সের ভারে নুয়ে পড়া দেশের অনেক অসুস্থ ব্যক্তিদেরও এই মামলার আসামি করা হয়েছে।
বাদী এমরান বলেন, অভিযোগ ঠিক আছে। তবে শুরুতে আসামিদের নাম শনাক্তে ভুল আছে কি-না, তা নিশ্চিত হতে পারিনি। বিষয়টি এখন খতিয়ে দেখব।
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম জানান, এফআইআর মামলার প্রাথমিক পদক্ষেপ। বিষয়টি তদন্ত করা হবে। মৃত ব্যক্তির নাম থাকলে বাদ দিয়ে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানার বেলতলীর মনিপুর ও চাঙ্গিনি দক্ষিণ মোড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের ওপর দাঙ্গা করে হত্যার উদ্দেশ্যে গুরুতর জখম করাসহ ককটেল বিস্ফোরণ করে ত্রাস সৃষ্টির অভিযোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মো. এমরান বাদী হয়ে ২ অক্টোবর বুধবার ২৯৬ জনের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন।