খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি
ভোলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০২ অক্টোবর ২০২৪ ১৯:১৯ পিএম
আপডেট : ০২ অক্টোবর ২০২৪ ১৯:৩৩ পিএম
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর লাপাত্তা ভোলার খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১০৭ ডিলার। এতে করে সেপ্টেম্বর মাসের নতুন ডিলার নিয়োগ কাজ শেষ না হওয়ায় ১৫ টাকা কেজি দরে চাল কিনতে পারেনি কার্ডধারী ৫০ হাজার পরিবার। চাল না পেয়ে কষ্টে জীবন কাটছে ওই সব পরিবারের।
খোঁজ নিয়ে জানা
গেছে, ভোলার সরকারি খাদ্য গুদামগুলোতে হাজার হাজার মেট্রিকটন খাদ্যবান্ধবের চাল পড়ে
আছে। ১৫ টাকা কেজি করে ৩০ কেজি করে চাল সেপ্টেম্বর মাসে বিতরণের কথা ছিল। কিন্তু ডিলার
না থাকায় বিতরণ করা যাচ্ছে না। গত ৫ আগস্টের পর লাপাত্তা হয়েছে ভোলার সদর উপজেলার ৩৪
জন ডিলারের মধ্যে ২৩ জন, চরফ্যাশনের ৫০ জনের মধ্যে ৫০ জনই, লালমোহনের ২৬ জনের মধ্যে
২৬ জনই ও মনপুরা উপজেলার ৮ জনের মধ্যে ৮ জনই ডিলার।
ভোলা সদর উপজেলার
চর ভেদুরিয়া গ্রামের খাদ্যবান্ধবের কার্ডধারী মো. নাহিদ (৩৫) জানান, স্ত্রী ও ৪ সন্তান
নিয়ে তার সংসার। দিনমজুরের কাজ করে অনেক কষ্টে সংসার চালাতে হয়। খাদ্যবান্ধবের ১৫ টাকা
দরে ৩০ কেজি চাল কিনে বছরের ৫ মাস কেটে যেতো তার। কিন্তু ডিলার লাপাত্তা হওয়ায় গতমাসে
চাল কিনতে পারেনি।এ ছাড়াও কয়েদ দিন আগে তিনি দুর্ঘটনায় পড়ে হাঁটাচলা করতে পারছেন না।
কোনো কাজ করতে না পারায় আয় রোজগারও বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে বাজার থেকে বেশি দামে চাল
কেনার সামর্থও নেই। যদি ১৫ টাকা কেজিতে চাল কিনতে পারতেন তাহলে তার কষ্ট কম হতো।
একই এলাকার বৃদ্ধ
আব্দুল কাদের জানান, তিনি সরকারি ঘরে স্ত্রী ও দুই নাতি নিয়ে বসবাস করছেন। তার আয়রোজগার
নেই। তার ছেলেরা জেলের কাজ করেন, মাঝে মধ্যে কিছু টাকা দেন তা দিয়ে কোনো রকমের সংসার
চলে তার। কিন্তু গত সেপ্টেম্বর মাসে তিনি ডিলারের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও
ব্যর্থ হয়েছেন। পরে লোকমুখে জানতে পেরেছেন এখন আগের ডিলার নেই। নতুন করেও কাউকে নেওয়া
হয়নি। সেপ্টেম্বর মাসের চাল পাবেন না। পরে ছেলেদের কাছ থেকে অনুরোধ করে টাকা দিয়ে বাজার
থেকে বেশি দামে চাল কিনেছেন। এই চাল শেষ হলে কিনতে পারবেন কি না, এখনও নিশ্চিত নন।
কারণ নদীতে মাছ না থাকায় জেলেরা অভাবে রয়েছেন।
ইয়ানুর বেগম ও সুরভী
বেগম নামে দুজন জানান, তাদের স্বামীরা দিনমজুরের কাজ করে সংসার পরিচালনা করেন। স্বল্প
আয়ে সংসারে ১৫ টাক কেজিতে চাল পেলে কষ্ট কিছুটা কম হতো। কিন্তু গত মাসে চাল কেনার কথা
থাকলেও পারেননি। এতে করে সংসারে অভাব চলছে। তাই আমরা দ্রুত যাতে ১৫ টাক কেজি দরে চাল
পেতে পারি সে দাবি জানাচ্ছি।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক
এহসানুল হক জানান, ভোলার সাত উপজেলায় ১৭২ জন খাদ্যবান্ধবের ডিলারের মাধ্যমে ১৫ টাকা
কেজি দরে ৩০ কেজি করে চাল পেতেন ৮২ হাজার ৫৪৭ পরিবার। বর্তমানে ১০৭টি ডিলার পদ খালি
থাকায় সেপ্টেম্বর মাসে প্রায় ৫০ হাজার পরিবারের মাঝে চাল বিক্রি হয়নি। নতুন করে ১০৭
জন ডিলার নিয়োগের কাজ চলছে। যত দ্রুত সম্ভব নিয়োগের কাজ শেষ করা হবে। নতুন ডিলাররা
সেপ্টেম্বর মাসের চাল অক্টোবর মাসে তুলে বিক্রি করবেন।