আশুলিয়া (ঢাকা) ও শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২২:৫০ পিএম
আপডেট : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২২:৫৪ পিএম
ঢাকার শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় শ্রমিকদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার ও বেতন-ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন শ্রমিকরা। বিক্ষোভের মুখে দুপুরের দিকে অন্তত ২৫টি কারখানার উৎপাদন বন্ধ করে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। রবিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকালে বাইপাইল-আব্দুল্লাহপুর সড়কের জিরাবো এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা।
শ্রমিকরা জানান, গত ৯ সেপ্টেম্বর লুসাকা গ্রুপের একটি কারখানার ২৭ শ্রমিকের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও আসামি করে মামলা দায়ের করে কর্তৃপক্ষ। পরে গত বৃহস্পতিবার কারখানা খুলে দিলে শ্রমিকরা মামলা প্রত্যাহার চেয়ে আন্দোলন শুরু করেন।
এ সময় মালিকপক্ষ মামলা তুলে নেওয়ার আশ্বাস দিলে শ্রমিকরা শান্ত হন। কিন্তু শনিবার সকালে কাজের জন্য শ্রমিকরা কারখানায় এসে দেখেন ১৩(১) ধারায় বন্ধের নোটিস গেটে রেখে দিয়েছে মালিকপক্ষ। পরে শ্রমিকরা আশপাশের কয়েকটি কারখানার শ্রমিকদের বের করে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। গতকালও শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেন। এ সময় আশপাশের প্রায় ২৫টি কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।
এ ব্যাপারে জানতে আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১-এর পুলিশ সুপার মো. সারোয়ার আলমের সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তবে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে শিল্প পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেন, আজ সকালে ঝামেলা সৃষ্টি করার চেষ্টা করেন শ্রমিকরা। পরে যৌথ বাহিনী তাদের বুঝিয়ে শান্ত করে। দুপুর পর্যন্ত ২৪ থেকে ২৫টি কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। তবে ১৩(১) ধারায় কতটি কারখানায় ছুটি হয়েছে এবং কতটিতে সাধারণ ছুটি হয়েছে, তা এ মুহূর্তে বলা কঠিন।
আরঅ্যান্ডজি কারখানা শ্রমিকদের ১২ দাবিতে সড়ক অবরোধ
গাজীপুরের ভবানীপুর এলাকার আরঅ্যান্ডজি বিডি গার্মেন্টস লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা একজন ব্যবস্থাপকের অপসারণসহ ১২ দফা দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। রবিবার দুপুর পৌনে দুটা থেকে পৌনে ৫টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টা শ্রমিকরা মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। এতে সড়কের উভয় পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
শ্রমিকেরা জানান, কারখানার মানব সম্পদ ও প্রশাসন বিভাগের ব্যবস্থাপক হাসান বিভিন্ন বিষয়ে শ্রমিকদের প্রশাসন বিভাগে ডেকে এনে ছোটখাটো বিষয় নিয়ে গালিগালাজ করেন, গায়ে হাত তোলাসহ চাকরিচ্যুতি করেন। শ্রমিকরা তাই তার অপসারণ চান। তা ছাড়া তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে বর্তমান হাজিরা বোনাস ৫০০ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ১০০০ টাকা, রাত ৮ টা পর্যন্ত কাজ করলে টিফিন বিল ২০ থেকে বৃদ্ধি করে ৪০ টাকা, অর্জিত ছুটির টাকা প্রতি বছরের জানুয়ারি মাসে পরিশোধ, কারখানায় কেন্টিনের ব্যবস্থা, শ্রমিকের প্রয়োজন অনুযায়ী সব ধরনের প্রাপ্য ছুটি প্রদান প্রভৃতি। এর বাইরে শ্রমিকরা কয়েজন কর্মকর্তার অপসারণ দাবি করেন।
অভিযোগ বিষয়ে মানব সম্পদ ও প্রশাসন বিভাগের ব্যবস্থাপক হাসান বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তা অযৌক্তিক, মিথ্যা এবং বানোয়াট। বর্তমান পরিস্থিতিতে কি কোনো শ্রমিকের গায়ে হাত তোলা যায়?’ এ ব্যাপারে জয়দেবপুর থানার ওসি আব্দুল হালিম বলেন, ব্যবস্থাপক হাসান স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করলে শ্রমিকেরা মহাসড়ক থেকে সরে যান। ফলে বিকাল ৫টায় যান চলাচল শুরু হয়।